এমনিতেই কাজ শেষ করে বের হয়েছি, তার উপর এরকম তেলে ভাজা খাবারের ঘ্রাণ! তারা দুজন খাচ্ছিল, আর আমি চোখ বড় করে তাকিয়ে তাকিয়ে তাদের দিকে দেখছিলাম। আমার এই অবস্থা দেখে তরুণীদের খেয়াল হল। একজন একটা পেঁয়াজু হাতে তুলে আমার দিকে বাড়িয়ে দিল, "নিন ভাইয়া খান।"
আমি সততার সাথে উত্তর দিলাম, "না, না, আপু ভাজা পোড়া খাবার তো! নাকের মধ্যে এসে খুব লাগছিল! আসলে এরকম খাবার রুচি বাড়িয়ে দেয়!"
মেয়েটা একটু মৃদু হেসে কটমট করে বলল, "হ্যাঁ রুচি যখন বেড়ে গেছে, তো এখন খাবেন না কেন?"
কি মেয়েরে বাবা! প্রেস্টিজ বলে আর কিছু বাকি থাকল না! আমি তো লজ্জায় তখন পারলে অটোর বডির সাথে লেপ্টে যাই। একটু পরে আমি আমার ব্যাগ থেকে নববর্ষের একটা কার্ড বের করে নাড়াচাড়া করছিলাম। কার্ডটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এদিক ওদিক করে দেখতেছিলাম। এবার সামনের তরুণীদের একজন আমার কার্ড টার দিকে মনোযোগের সাথে নজর দিল। আমি ভেতরে ভেতরে ক্রুর হাসলাম। ভাবলাম, এই তো সুযোগ!
মেয়েটিকে হাত বাড়িয়ে বললাম, "নিন আপনি এটা রেখে দিন। "
সে বুঝে কিংবা না বুঝার ভান করে বললো, "কি ওটা? "
আমি বললাম, "এটা একটা নববর্ষের কার্ড। "
মেয়েটি তখন জাস্ট "ও আচ্ছা, থ্যাংকস" বলে কার্ড টা নিয়ে নিল!
আমার সব প্লান ভেস্তে গেল। কোথায় ভাবলাম, মেয়েটি সংকোচের সাথে ফিরিয়ে দিয়ে বলবে, "না, না, আমার দরকার নেই" আমি তখন বলব, "নিবেন না তাহলে ওরকম তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলেন কেন??"
**অণুগল্প- দোপিয়াজু **
19 apr, 2019
সাত সকালে মোবাইল ফোনটা বিকট শব্দে বেজে উঠল। আজ একটু আগে ভাগেই ঘুম ভেঙে গিয়েছিল, তারপরও এতক্ষণ চোখের উপরের ও নিচের পাতা একরকম চেপে ধরে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে ছিলাম। ঘুম ভাঙলেও ছুটির দিন বলে কথা! কোন তাড়া নেই, আজকের দিনের পরবর্তী করণীয় কাজগুলো "করব, করতেছি বা আজ থাক"এ রকম উদাসীন অবস্থায় কাটবে। চোখ বুজে থেকেই মোবাইলটা বালিশের পাশ থেকে হাতড়ে নিয়ে রিসিভ করে কানের কাছে ধরলাম। ...
একটা মেয়ের ফিল্টার করা কোমল কন্ঠ ভেসে এল, 'হ্যালো, স্লামালেকুম, আপনার শরীর এখন কেমন?"
কন্ঠটা আমার সম্পূর্ণ অচেনা মনে হল। তার উপর আবার এত পরিশীলিত কন্ঠ শুনে এক রকম চমকে উঠলাম। বাধ্য হয়েই এবার চোখ খুলে মোবাইলের স্ক্রিনে ভেসে থাকা নম্বরটির দিকে তাকালাম। নাহ নম্বরটি সম্পূর্ণ আননোন।
আমি উত্তরে বললাম, "এখন ভাল আছি। কিন্তু আপনি কিভাবে জানলেন আমার শরীর খারাপ করেছিল? আর আপনিই বা কে?"
ওপাশ থেকে মেয়েটি বলল, "জ্বী, মানে আপনিই কাল বলেছিলেন, আপনি তখন বাসে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ করে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিলেন। তা সুস্থ্য বোধ করছেন কখন থেকে?"
আমি: "এইতো বাস থেকে নামার পর থেকে একটু একটু ভাল বোধ হচ্ছিল। তো আপনি এসব কীভাবে জানলেন?"
আমার প্রশ্ন পাশ কাটিয়ে ওপাশ থেকে মেয়েটি বলল, "তা হঠাৎ এরকম হলো যে! কোন বড় সমস্যা নাকি! এরকম কি প্রায়ই আপনার হয়? কোন চেক আপ করাননি?"
আমি: "আরে না! তেমন কিছু না, এটা হয়ত জার্নি কালীন অস্বস্তি থেকে একটু অসুস্থ্যতা তৈরী হয়েছে। এরকম আগে হয়নি। এবার কি আপনি বলবেন, আপনি কিভাবে জানলেন? আমিতো জার্নিতে আমার অসুস্থ্য হওয়ার কথা তেমন কাউকে জানাইনি!"
মেয়েটি বলল, "তেমন কাউকে না বললেও আমাকে তখন মেসেঞ্জারে জানিয়েছিলেন। খুব উদ্বিগ্ন হচ্ছেন বুঝি! আপনি না জানলেও অনেক আগে থেকে আপনার নম্বরটি আমার কাছে ছিল। যদিও অন্যর মাধ্যমে পাওয়া।"
এতক্ষণ পর রহসে্যর জট খুলল। বললাম, "আপনি কি সুরাইয়া?
সে মৃদু হেসে বলল, "জ্বী আমি সুরাইয়া । তবে তেমন কেউ নই!!"
´
আমি তখন এপাশ থেকে "না মানে, ইয়ে মানে" করছিলাম। আর ওদিক থেকে ফোন কলটা টুট টুট শব্দে কেটে গেল।
গতকাল সন্ধ্যায় বাসে করে বাসায় ফেরার সময় মোবাইলে টুক টাক নেট ব্রাউজ করছিলাম। ফেসবুকের এক বন্ধুর সাথে অল্প স্বল্প মেসেজিং চলছিল। এক পর্যায়ে আমি হঠাৎ খুব অসুস্থ্য বোধ করলে তাকে লিখেছিলাম, "বাসের মধ্যে আমার হঠাৎ করে খুব অসুস্থ্য লাগছে, পরে কথা হবে, বাই।"
ভার্চুয়ালের অপরিচিত মেয়েটি বিষয়টা যে এভাবে গুরুত্ব দিয়ে মনে রাখবে, তা আমার কল্পনার বাইরে ছিল। ফোনের ঐ কেয়ারিং কন্ঠটি আমার মনের মধ্যে মুগ্ধতার এক অজানা পরশ বিলিয়ে গেল।
অণুগল্প-অচেনা স্পর্শ
3/11/17
অনেক আগে ফেরিঘাটের আশপাশের নদীর পাড়টাতে কনক্রিটের ব্লক ফেলা হয়েছিল। বর্তমানে তা নদীগর্ভে বিলীন প্রায়। কিছু কিছু ব্লক নদীর পাড় সমেত ভেঙে নদী তীরের হাঁটু পানি ও কাঁদার মধ্যে উঁকি ঝুকি মারছে। পৌষের হাড় কাঁপানো শীতের সকাল। এরই মধ্যে সকাল গড়িয়ে
No comments:
Post a Comment
to drop Your valuable Comment please mention your name (Click to arrow sign and select name/url)