পৃথিবীর ৭ টি অদ্ভুত প্রথা



পৃথিবীর ৭ টি অদ্ভুত প্রথা: :

বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম সংস্কৃতির দেখা মেলে। আজ লিখব পৃথিবীর ৭ টি অদ্ভুত প্রথা সম্পর্কে যা আপনাকে হতবাক করে দেবে:

১. ভুটানের রাত্রিকালীন শিকার:

হিমালয় রাজ্য ভুটানের পূর্বাঞ্চলের যুবক পুরুষেরা ভালবাসা ও বিয়ের উদ্দেশ্যে রাত্রে একটি ভিন্ন ধরণের শিকারে বের হয়। ভুটানে এ রকম শিকার বোমেনিয়া বলে পরিচিত। তারা বিবাহযোগ্যা মেয়েদের ঘরের দরজা বা বেড়া ভেঙে তাদের ঘরে ঢুকে রাত কাটায়। এরকম করতে গিয়ে যদি কোনো যুবক ধরা পড়ে তাহলে তাকে ঐ মেয়েকে বিয়ে করতে হবে নয়ত মেয়ের বাবার ফসলের ক্ষেতে শাস্তি হিসেবে কাজ করতে হয়। ভুটানের এই অঞ্চলে এই রীতি বোমেনা নামে পরিচিত।

বর্তমানে এই ঐতিহ্য অনেকটাই বিতর্কিত হয়ে উঠেছে কারণ এরকম ঘটনায় নারীরা ধর্ষিত হয় এবং তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হয়।

২. সাতিরি মাও আদিবাসীর বুলেট পিপড়ার দস্তানা:

আমাজানের এই আদিবাসীদের ছেলেরা যখন বড় হয় তখন রীতি অনুযায়ী তাদের পৌরুষত্ব প্রমাণ করতে হয় যা খুবই নিপীড়নমূলক এবং ভয়ানক। যুবক ছেলেদেরকে এক ধরণের বিষাক্ত পিঁপড়ার ফাঁদে ফেলা হয় যা বুলেট পিঁপড়া নামে পরিচিত । একজন আধ্যাত্বিক কবিরাজ একটি দস্তানার মধ্যে বুলেট পিপড়াগুলো ঢুকিয়ে যুবকদের হাত এর ভেতর ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ।

বলা হয়ে থাকে যদি একটা বুলেট পিঁপড়া হুল ফুটায় তা মাংসপেশীতে গুলি ভেদ করে যাওয়ার সমান আহত করে। যুবক ছেলেদেরকে এরকম তীব্র ব্যাথা সহ্য করে এই দস্তানা পরে কমপক্ষে দশ মিনিট নৃত্য করতে হয়। সাতিরি মাওদের একজন পুরুষের জীবদ্দশায় কমপক্ষে বিশ বার এরকম ‍রীতি পালন করতে হয়।

৩. বিয়ের পর বাথরুম নিষিদ্ধ:

ইন্দোনেশিয়ার তিদং সম্প্রদায়ের মধ্যে নব বিবাহিত দম্পতিকে বিবাহের পর তিন দিনের জন্য কোন প্রকার ওয়াশরুম বা শৌচাগার ব্যবহার নিষিদ্ধ। তারা বিশ্বাস করে যে এই নিয়ম ভঙ্গ করলে তাদের সন্তান গর্ভে মারা যেতে পারে অথবা তাদের একজনের মৃত্যু হতে পারে।

নব দম্পতিদের আত্মীয় স্বজনেরা এই তিন দিন ধরে তাদের দেখাশোনা করে। তিন দিন পার  হয়ে যওেয়ার পরই তারা প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে পারে।

৪. জাপানের লিঙ্গ উৎসব:




জাপানে এই উৎসব কানামুরা মাৎসুরি নামে বেশি পরিচিত। এই উৎসবে একটা বৃহদাকার লিঙ্গের ভাষ্কর্য নিয়ে জাপানের কাওয়াসাকি শহরের সমগ্র রাস্তায় মানুষজন শোভাযাত্রা করে। প্রচলিত আছে যে, একটা ডাইনি তার যোণীদ্বারের দ্বন্ত দ্বারা পুরুষদেরকে তাদের মৃত্যু  না হওয়া পর্যন্ত কামার্ত করে রাখে। যতক্ষণ না পর্যন্ত মন্দিরের পুরোহিত তার ধাতব লিঙ্গ দ্বারা ঐ পিশাচের মরনঘাতী গোপনাস্ত্রটি ধংস করে ফেলে ততক্ষণ সে ক্ষান্ত হয় না।

অন্যান্য অধিবাসীদের সাথে কিছু যৌণকর্মীও তাদের সুস্বাস্থ্য ও যৌণবাহিত রোগ থেকে সুরক্ষার আশায় এই উৎসবে যোগদান করে।

৫. মৃত দেহর শরবত ভক্ষণ:

ব্রাজিল ও ভেনিজুয়েলার সীমান্তে আমাজানের জঙ্গলে বসবাসকারী  ইয়ানোমামী আদীবাসীরা মৃতদেহ সমাহিত করার ধারণাকেই তাড়িয়ে দিয়েছে। তারা বিশ্বাস করে যে, আত্মাকে শান্তিতে থাকতে দেওয়ার জন্য পৃথিবীতে মৃতদেহের কোন অংশর চিহ্ন রাখা উচিৎ নয়। তারা মৃতদেহটি পুড়িয়ে ফেলার পর তার ছাই ও হাঁড়ের গুড়া সংগ্রহ করে ভেষজ লতাপাতার তৈরী স্যুপের সাথে মেশানো হয়। এরপর সেই স্যুপ মৃত ব্যক্তির পরিবারের লোকজনকে খাওয়ানো হয়।

ইয়ানোমামী আদীবাসীরা বিশ্বাস করে যে এরকম করার ফলে তাদের প্রিয় ও আপনজনের আত্মা ছেড়ে না গিয়ে সবসময় তাদের সাথে বসবাস করবে।

৬. ফামাদিহানা: মাদাগাস্কারের অন্তোষ্টিক্রিয়া উৎসব:

মাদাগাস্কোরের মালাগাছির অধিবাসীরা তাদের আপন জনের মৃত্যুর কয়েক বছর পর তাদের মৃতদেহ কবর থেকে তুলে আনে। কয়েক বছর পরতো আর দেহ খুঁজে পাওয়া যায় না। কবর থেকে উঠিয়ে এন দেহের কঙ্কালটিকে আবার নতুন কাপরে মোড়ানো হয়। পঞ্চাশ থেকে একশত মানুষ তার সামনে বসে তার কাছে নিজেদের কল্যান ও আশির্বাদ কামনা করে। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বড় ধরণের ভুড়ি ভোজের আয়োজন করা হয়। সবশেষে নতুন কাপড়ে মোড়ানো মৃতদেহটির সাথে কিছু উপহার সামগ্রী ও মদ দিয়ে আবারও সমাহিত করা হয়। প্রতি পাঁচ বা সাত বছর পর পর এ মৃতদেহ তুলে এনে এ ধরণে র উৎসব  পালন করা হয় যা ফামাদিহানা নামে পরিচিত।

 

 

 

 

 

 

৭. বালির দাঁত উঠানো:

ইন্দোনেশিয়ার বালি অধিবাসীর মধ্যে বিয়ের আগে নারী পুরুষদের এবরো থেবরো দাঁত সমান করা নিয়ে এক বিশাল আয়োজন করা হয়। সেখানে সমান ও মসৃণ দাঁতকে নারী পুরেুষের ক্রোধ, লোভ, কামনা, হিংসার মত পাপের কাজগুলো নিয়ন্ত্রণের প্রতিক মনে করা হয়।বালির অধিবাসীর প্রত্যেককে জীবনে একবার এরকম ব্যথাদায়ক অভিজ্ঞতার শিকার হতে হয়।

                                                                                     ছবির উৎস: গুগল

 

 


2 comments:

  1. অজানা তথ্য। ধন্যবাদ

    ReplyDelete
    Replies
    1. শুভেচ্ছা রইল, পড়তে থাকুন আরো নতুন কিছু

      Delete

to drop Your valuable Comment please mention your name (Click to arrow sign and select name/url)