কর্পোরেট সুশাসন (Corporate Governance)
আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্পোরেট সুশাসনের গুরুত্ব
সুশাসনের বৈশিষ্ট্য
প্রতিষ্ঠানে কিভাবে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা যায় (How to achieve good corporate Governance
আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্পোরেট সুশাসনের ব্যাসেল নীতিমালা:
লক্ষ্য ও রূপকল্প (MISSION & VISION)
একটি ব্যাংকের মিশন ও রূপকল্পর উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব:
ব্রান্ড প্রতিশ্রুতি/ কার্যকর ব্রান্ড প্রতিশ্রুতি (Effective Brand Commitment):
আচরণ বিধি (Code of Conduct):
আচরণের আদর্শ মান (Standard Code of Conduct):
কর্পরেট সংস্কৃতি (Corporate Culture) :
কর্পরেট সংস্কৃতি উন্নয়ন বা চর্চার গুরুত্ব:
সুশাসন কাঠামো:
সুশাসন রূপরেখা ও কাঠামোর গুরুত্ব:
বোর্ড অফ ডিরেক্টর বা পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব ও কর্তব্য
পরিচালনা পর্ষদের কার্যদক্ষতা মূল্যায়ণ:
পরিচালনা পর্ষদের কার্যদক্ষতা মূল্যায়ণে ব্যাসেল কমিটির নির্দেশিকা:
পরিচালনা পর্ষদের কার্যদক্ষতা মূল্যায়ণে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশিকা:
উর্ধতন ব্যবস্থাপনা (Senior Management):
উর্ধতন ব্যবস্থাপনা কর্মীদলের ভুমিকা ও দায়িত্ব:
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব ও কর্তব্য:
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংক এর প্রধান নির্বাহী নিয়োগের নিয়ম ও বিধিবিধান
সিইও পরম্পরা পরিকল্পনার গৃহীত ব্যবস্থা
ব্যবসার কৌশল: সাংগঠনিক ও ব্যবস্থাপনা সংস্কৃতি
ব্যবসায়িক কৌশলের উপর সাগঠনিক সংস্কৃতির প্রভাব:
সাংগঠনিক সংস্কৃতি এবং ব্যবসায়িক কৌশলের মধ্যে সম্পর্ক
মূলধনের পর্যাপ্ততা: (Capital Adequacy)
মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত সংরক্ষণের গুরুত্ব:
বাণিজ্যিক ব্যাংকের সম্পদের গঠন:
ব্যাংকের সম্পদসমূহ:
ঝুঁকি-ভারযুক্ত সম্পদ (Risk-weighted assets- RWA) :
সম্পদের ঝুঁকি নির্ণয় ও মূল্যায়ন:
সমস্যাগ্রস্ত সম্পদ (Problem Assets) ও সমস্যাগ্রস্ত সম্পদ ব্যবস্থাপনা:
সমস্যাগ্রস্ত সম্পদ শনাক্তকরণ ও ব্যবস্থাপনায় সুপারভাইজারের ভুমিকা
NPL বা অপরিচালনযোগ্য ঋণ (Non Performing Loan) এবং এর শ্রেণীবিভাগ (Categories):
সতন্ত্র সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিটের কার্যাবলি/ সমস্যাগ্রস্ত সম্পদ ব্যবস্থাপনার উপায়:
কর্পোরেট সুশাসন (Corporate Governance)
সুশাসনের সাধারণ অর্থ হল, একটি প্রতিষ্ঠানের র্কাযাবলী এবং ঘটনাসমূহ নিয়ন্ত্রণ ও নির্দেশনার পদ্ধতি। সহজভাবে বলা যায়, বিভিন্ন কার্যকলাপ এবং উপায়ের মাধ্যমে কীভাবে একটি ব্যবসায়িক সত্তা চলবে তাই সুশাসন। কর্পরেট সুশাসন হল এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে অর্থনৈতিক, সামাজিক, ব্যক্তিক এবং সাম্প্রদায়িক স্বার্থ এর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কোম্পানির প্রকৃত মালিকদের উন্নতির জন্য কাজ করতে অনুপ্রাণিত হয়।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্পোরেট সুশাসনের গুরুত্ব:
কর্পরেট সুশাসন দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবসার সাফল্য নিশ্চিত করে, আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে, ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন নিশ্চিত করে। সুশাসনের প্রয়োজনীয়তা:
- অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি
- শেয়ারহোল্ডারদের সাথে সুসম্পর্ক
- ঋণের ঝুঁকি প্রশমন
- পরিশোধ ব্যবস্থার প্রতিনিধি
- জনগনের আস্থা ও বিশ্বাস তৈরী
- অন্যান্য সংস্থার সাথে সামঞ্জস্য বিধান
- টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন
- শেয়ারহোল্ডার ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার স্বার্থ রক্ষা
- মূলধণ সৃষ্টি
- অদক্ষ ও দুর্বল ব্যাংকগুলো টিকিয়ে রাখা
- অর্থ ব্যবস্থার সুরক্ষা ও শৃঙ্খলা বিধান ও
- জবাবদিহিতা তৈরী
সুশাসনের বৈশিষ্ট্য:
- সকলের অংশগ্রহণ
- উপযুক্ত নের্তৃত্ব
- আইনসম্মত নীতি :
- সামর্থ্য ও সমতা:
- দক্ষতা ও ফলপ্রদ:
- উদ্দীপনামূলক কাঠামো:
- স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা: সর্বোচ্চ পরিপালন / স্বচ্ছ ও পুর্নাঙ্গ নথিভুক্ত করণ .... ..
- কৌশলগত লক্ষ্য: প্রবৃদ্ধি ও লক্ষমাত্রা পূরণের জন্য ...... .........শেয়ারহোল্ডারদের ভুমিকা
প্রতিষ্ঠানে কিভাবে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা যায় (How to achieve good corporate governance)?
- পরিচালনা বোর্ডে বৈচিত্র আনয়ন:
- পরিচালনা পর্ষদ নিয়মিত পর্যালোচনা: ....
- পরিচালকের স্বাধীনতা:
- নীরিক্ষকের স্বাধীনতা:
- স্বচ্ছতা: পূর্ণাঙ্গ, স্বচ্ছ ও বোধগম্য তথ্য প্রদানের ইচ্ছা ও উদারতা:
- শেয়ারহোল্ডারদের অধিকার :
- ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা:
- তথ্যের যথার্থ প্রকাশ:
আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্পোরেট সুশাসনের ব্যাসেল নীতিমালা:
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মত জটিল সংগঠনে অবশ্যই সুশাসনের নীতিমালা থাকা আবশ্যক। ১৯৯৯ সালে ব্যাসেল কমিটি লিখিতভাবে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের নীতিমালা তৈরী করে।
- পরিচালনা পর্ষদের সার্বিক দায়িত্ব: ব্যবস্থাপনা সংগঠনের কৌশলগত উদ্দেশ্য , সুশাসনের কাঠামো এবং কর্পরেট সংস্কৃতি
- পর্ষদের যোগ্যতা ও গঠন
- পর্ষদের নিজস্ব কাঠামো ও চর্চা: পর্ষদ তার উপযুক্ত সুশাসন কাঠামো নির্ধারণ ও নিজের প্রয়োজনে চর্চা করবে ......
- পর্ষদের তত্তাবধান ও পরিচালনাধীন উর্ধতন ব্যবস্থাপনা:
- দলীয় কাঠামোর সুশাসন: মূল কোম্পানির পর্ষদেরকাছে গ্রুপের সার্বিক দায়িত্ব থাকবে
- ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম: প্রধান ঝুঁকি কর্মকর্তার অধীনে একটি ফলপ্রসু ও স্বাধীন ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম থাকবে ...
- ঝুঁকি শনাক্তকরন, পর্যালোচনা ও নিয়ন্ত্রণ
- ঝুঁকি তদারকি: ফলপ্রসু ঝুঁকি প্রশাসন কাঠামোতে ব্যাংকের মধ্যে ঝুঁকি সম্বন্ধে শক্তিশালী যোগাযোগ স্থাপন আবশ্যক।
- ঝুঁকি পরিপালন: ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কতৃক ব্যাংকে ঝুঁকি পরিপালনের জন্য পরিচালনা পর্ষদ দায়ী থাকবে..
- আভ্যন্তরীন নীরিক্ষা:
- ক্ষতিপূরণ: ব্যাংকের বেতন কাঠামো সুষ্ঠ কর্পরেট প্রশাসন ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় সহায়ক হতে হবে
- স্বচ্ছতা ও পূর্ণ প্রকাশ নীতি
- তত্বাবধায়কের ভুমিকা
৭) দল বা গোষ্ঠী তৈরী ও সমর্থন ৮) পরিচিতি ৯) সংস্কৃতির লালন ১০) উন্নত কার্যফল (performance)
ব্রান্ড হল কোন নাম, শব্দগুচ্ছ, নকশা বা প্রতীক। ব্রান্ড প্রতিশ্রুতি হল একটি কোম্পানির কাছ থেকে একজন ভোক্তা যে মূল্য বা অভিজ্ঞতা আশা করে। এটি একটি মানসিক ও আচরণগত বোঝাপড়া যা ব্র্যান্ডের প্রতি ভোক্তার একটি শক্তিশালী মেলবন্ধন তৈরি করে।
১) সহজ ২) বিশ্বাসযোগ্য ৩) ভিন্নতা ৪) স্মরণীয় ও ৫) উৎসাহব্যঞ্জক ।
কার্যকর ব্র্যান্ড কমিটমেন্ট গড়ে তোলার কয়েকটি কৌশল
১. ব্র্যান্ডের ভিশন ও মিশন তৈরি :
২. স্বকীয় মূল্য তৈরি করা (unique value proposition) : ব্র্যান্ডকে প্রতিযোগীদের থেকে আলাদা করে এমন বিশেষ গুণাবলী চিহ্নিত করা।
৩. গ্রাহকের চাহিদা ও সমস্যার সমাধান :
৪. ধারাবাহিকতা বজায় রাখা: ব্র্যান্ডের বার্তা, ডিজাইন এবং সেবার ক্ষেত্রে
৫. ইতিবাচক গ্রাহক অভিজ্ঞতা তৈরি :
৬. ব্র্যান্ড পরিচিতি শক্তিশালীকরণ : স্বতন্ত্র
৭. গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলা
৮. ব্রান্ড কমিউনিটি গঠন ৯. আবেগ পূর্ণ সংযোগ স্থাপন (emotional connection)
আচরণ বিধি (Code of Conduct):
আচরণবিধি (CoC) হল মূল্যবোধ, নিয়ম, মান এবং নীতিসমূহের একটি রূপরেখা যা নিয়োগকর্তারা একটি সংগঠনের কর্মীদের কাছ থেকে আশা করে। সাধারণত, এটি ইতিমধ্যে প্রচলিত বর্তমান সংস্কৃতির প্রতিফলন হতে পারে, বা এমন কোন সংস্কৃতি যা সংগঠনের নেতৃত্বে নতুন করে গড়ে ওঠে বা প্রর্বতন করতে চায়। আচরণবিধি ঘনিষ্ঠভাবে নৈতিকতার বিধির সাথে জড়িত, বিস্তৃত পরিসরে আচরণবিধি ও নৈতিকতা শব্দ দুটি একে অপরের পরিপূরক।
আন্তর্জাতিক ব্যাংক নিষ্পত্তি সংস্থা বা BIS ১৯৯৭ সালে কর্মচারীদের জন্য আচরণের বিশেষ নীতিমালা প্রণয়ন করে। যা নিম্নে তুলে ধরা হল:-
1. মৌলিক নীতিমালা:
১) কর্মচারী সদস্যরা সততার সাথে এবং নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে এবং দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে তাদের সর্বোচ্চ সামর্থ দিয়ে দায়িত্ব পালন করবে।
২) কর্মচারী সদস্যদের তাদের কর্ম ঘন্টা ব্যাংকের স্বার্থে নিবেদন করতে হবে।
৩) কর্মচারী সদস্যরা কেবলমাত্র ব্যাংকের মধ্যে থাকা তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এমন বিষয়গুলিতে জড়িত থাকার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। ব্যাংকের স্বার্থ পরিপন্থী হয় ব্যাংকের পক্ষ নিয়ে এমন কোন কাজে জড়িত হওয়া যাবে না
৪) কর্মচারী সদস্যদের তাদের সকল সহকর্মীদের সাথে কোন হয়রানি, শারীরিক বা মৌখিক হেনস্থা ছাড়া সৌজন্য ও সম্মানের সাথে আচরণ করা উচিত। কোন শত্রুতা বা আতঙ্ক তৈরী করে এমন আচরণ এড়িয়ে চলতে হবে।
৫) কর্মচারীদেরকে কোন জাতি, জাতীয়তা, লিঙ্গ, বয়স, শারীরিক অক্ষমতা, যৌন পছন্দ, রাজনৈতিক মতামত বা ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি বৈষম্য সৃষ্টি করে এমন আচরণ পরিহার করতে হবে।
৬) সদস্যরা ব্যাঙ্ক তহবিল এবং অন্যান্য সুবিধা সহ ব্যাঙ্ক এর সম্পদসমূহ শুধুমাত্র ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার জন্য দায়বদ্ধ।
2. সম্ভাব্য স্বার্থ সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব এড়ানো:
ক) সদস্যদেরকে, যতদূর সম্ভব, যেখানে তাদের নিজস্ব বা ব্যক্তিগত স্বার্থ ব্যাংকের প্রতি তাদের অর্পিত দায়িত্বের সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে এমন যে কোনো পরিস্থিতি এড়াতে হবে।
খ) কর্মচারীরা ব্যাংকের প্রতি তাদের দায়িত্বের সাথে সম্পর্কিত কোনো তৃতীয় পক্ষর নিকট থেকে পরিমিত মূল্য বা আতিথেয়তার চেয়ে বেশি কোনো উপহার গ্রহণ করতে পারবে না।
গ) সম্ভাব্য কর্মসংস্থান সংক্রান্ত আলোচনায় জড়িত স্টাফ সদস্যদের অন্য নিয়োগকর্তার সঙ্গে সততা এবং বিচক্ষণতার সাথে আচরণ করা উচিত ।
3. বাহ্যিক কর্মকান্ড:
ক) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় চুক্তি এবং আয়োজক দেশের সাথে ব্যাংক দ্বারা সম্পাদিত চুক্তি অনুসারে যে সকল বিশেষাধিকার এবং সুযোগ সুবিধা কর্মচারীরা ভোগ করে তাতে ব্যাংক এবং ব্যক্তির স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
খ) প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তার অনুমোদন ছাড়া কোন কর্মচারী নিচের কাজগুলো করতে পারবে না:
অন্যান্য ব্যবসায়িক কর্মকান্ড, পেশাগত নিয়োগ, বা ব্যাঙ্ক দ্বারা তাদের কর্মসংস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিষেবার জন্য পারিশ্রমিক গ্রহণ।
- কোনো পাবলিক অফিসে নিয়োগের জন্য প্রার্থী হওয়া বা গ্রহণ করা।
- কর্মচারীরা তাদের রাজনৈতিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে (যেমন ভোট দেওয়া, রাজনৈতিক অবদান রাখা এবং স্থানীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করা) তবে ব্যাংক এবং ব্যাংকের বাইরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন
- ব্যাঙ্কিং কার্যক্রম, বিনিয়োগ পরিষেবা, তথ্য ব্যবস্থা বা রিয়েল এস্টেট ব্যবসা সংক্রান্ত তৃতীয় পক্ষের প্রতিনিধি, এজেন্ট বা পরামর্শক হিসাবে কাজ করতে পারবে।
- কোন বহিরাগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বোর্ড অফ ডিরেক্টরস বা ট্রাস্টি বা যেকোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার সদস্য হতে পারবে না ।
গ) সুস্পষ্ট ঝুঁকি বা আর্থিক অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয় এমন কোন কাজে অঙ্গীকার প্রদান হইতে বিরত থাকতে হবে।
ঘ) টাফ সদস্যরা এমন কোনো কার্যকলাপে নিয়োজিত হবে না যেখানে অভ্যন্তরীণ তথ্য ব্যবহার করতে হয়।
ঙ) সদস্যরা এমন কোনো অর্থপ্রদান এড়িয়ে চলবেন যা কর্মকর্তাদের, ব্যবসায়িক অংশীদার বা অন্যান্য ব্যক্তি অনুপযুক্তভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
4. মিডিয়া এবং প্রকাশনার সাথে যোগাযোগ :
ক) ব্যাংকের নীতি বা কার্যক্রম সম্পর্কে মিডিয়া বা প্রকাশনার কাছে কোন বিবৃতিপ্রকাশ করার জন্য মহাব্যবস্থাপক বা ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার, বা তাদের দ্বারা অনুমোদিত স্টাফ সদস্যরা দায়বদ্ধ।
খ) ব্যাংকের কোন বিষয়ের ক্ষতি সাধিত হয় বা সুনাম নষ্ট হয় এমন কোন বিবৃতি প্রদান থেকে বিরত থাকা।
গ) ব্যাংকের কর্মচারীগন কর্তৃক তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় উৎপন্ন সকল লিখিত ডকুমেন্টের সত্বাধিকারী একমাত্র ব্যাংক।
ঘ) স্টাফ সদস্যরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে কোনো কাজের জন্য তৃতীয় পক্ষের কাছ থেকে কোনো পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে পারবেন না।
ঙ) স্টাফ সদস্যরা ব্যাংকের কার্যক্রম বা তাদের পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখে এমন সম্মেলন এবং সেমিনারে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা প্রধানের পূর্বানুমতি নিয়ে অংশগ্রহণ করতে পারবে।
5. গোপনীয়তার দায়িত্ব (Duty of Confidantiality):
১) স্টাফ সদস্যদের তাদের চাকুরিকালে ব্যাংকের ভিতরে ও বাইরে কোনো অ-পাবলিক তথ্য সম্পর্কে সর্বোচ্চ বিচক্ষণতা বজায় রাখা প্রয়োজন
২) ব্যাংকিং লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য, নিরাপত্তা ব্যবস্থা বা ব্যাঙ্কের কর্মীবৃন্দ এবং তাদের চাকরির শর্তাবলী, সেইসাথে কোন অপ্রকাশিত পরিসংখ্যান ডেটা গোপনীয়তার পর্যায়ে পড়ে
৩) মৌখিক হোক বা হোক লিখিত, বা ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে সংরক্ষিত সমস্ত অ-পাবলিক তথ্যের ক্ষেত্রে গোপনীয়তার নিয়ম প্রযোজ্য
৪) আদালত বা কোন বৈধ সরকারি সংস্থার ক্ষেত্রে অপরিহার্য হলে গোপনীয়তার নীতির ব্যতিক্রম হতে পারে।
৫)কর্মচারীর গোপনীয়তার দায়িত্ব ব্যাংক কর্তৃক চাকরির অবসানের পরেও বহাল থাকে।
![]() |
GFI এর আরও প্রস্তুতি নিতে ক্লিক করুন |
কর্পরেট সংস্কৃতি (Corporate Culture) :
কর্পরেট সংস্কৃতি এমন এক আচরণ ও বিশ্বাস যা একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও ব্যবস্থাপনা ব্যবসার লেনদেনের বাইরে কী ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখাবে তা নির্ধারণ করে। কর্পরেট সংস্কৃতি বিশ্বাস, মনোভাব ও নৈতিকতার সাথে জড়িত যা একটি প্রতিষ্ঠানের স্বরূপ তুলে ধরে এবং এর চর্চা করার জন্য পথ প্রদর্শনন করে। একটি সংগঠনের সংস্কৃতি তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সুষ্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করে, যেখানে কর্পরেট সংস্কৃতির উপাদানের মধ্যে সংগঠনের বাহ্যিক পরিবেশ, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার অনুশীলন এবং কর্মচারীদের কার্য অভ্যাস জড়িত।
কর্পরেট সংস্কৃতি উন্নয়ন বা চর্চার গুরুত্ব:
সুশাসন কাঠামো হল নিয়ম, অনুশীলন এবং প্রক্রিয়াসমূহের একটি ব্যবস্থা যা একটি সংস্থা তার কার্যক্রম পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণ, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিভিন্ন অংশীদার যেমন- শেয়ারহোল্ডার, ব্যবস্থাপনা এবং সম্প্রদায়ের প্রতি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ব্যবহার করে। অর্থাৎ, সুশাসন কাঠামো উর্ধতন ব্যবস্থাপনা ও কার্যস্তরে এমন একটি পদ্ধতি যা পারস্পরিক উদ্দেশ্য, প্রত্যাশা, কার্যক্ষমতা, ঝুঁকি প্রশমন এবং রিপোর্টিং এর স্বচ্ছ ধারণা ও ভুলগুলি তুলে ধরে।
- সুশাসনের নীতি প্রতিষ্ঠা করা যা এর কার্যাবলীকে সমর্থন করে ।
- প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন কাঠামোর রূপরেখা তৈরী করা যাতে সংগঠন জুড়ে এর ধারাবাহিকতা নিশ্চিত হয়।
সুশাসন রূপরেখা ও কাঠামোর গুরুত্ব:
আধুনিক ও উদ্ভাবনী ব্যবসায় পরিবেশে সুশাসন কাঠামোর গুরুত্ব অনস্বীকার্য। প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন কোন কোম্পানিকে ইতিবাচক বৈশিষ্ট প্রকাশ করতে সাহায্য করে। সুশাসনের প্রয়োজনীয়তার সাথে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জড়িত:
BASEL কমিটি কর্তৃক ২০১৫ সালে পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব সম্পর্কে বিশদাকারে এবং সুপরিসরে
তুলে ধরা হয়েছে।
- দীর্ঘ মেয়াদে ব্যাংকের স্বার্থ সুরক্ষা
- ব্যাংক ব্যবসার কৌশল সমূহের অনুমোদন ও তা বাস্তবায়নে তত্বাবধান
- ব্যাংকের কর্পোরেট সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা
- ব্যাংকের সুশাসন কাঠামোর তত্বাবধান ও পর্যালোচনা
- ব্যাংকের ঝুঁকি প্রশমন ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা
- ঝুঁকি নীতিমালা ও মাত্রার সাথে ব্যাংকের সংশ্লিষ্টতা
- ব্যাংকের মূলধন সংক্রান্ত নীতিমালা প্রনয়ণ ও তদারকি
- একটি শক্তিশালি অর্থায়ন কার্যক্রম বজায় রাখা
- বার্ষিক হিসাব বিবরণী অনুমোদন ও কালান্তিক পর্যালোচনা
- উর্দ্ধতন ব্যবস্থাপনা ও কর্মকর্তার নিয়োগ ও অনুমোদন
- ক্ষতিপূরণ বিষয়ে ব্যাংকের ভুমিকা তদারকি
- ব্যাংকের নীতিমালার প্রতি সততা, স্বাধীনতা ও ফলপ্রদতা সম্পর্কে তদারকি ।
- ব্যবস্থাপনার উচ্চ স্তরের কার্যক্রম নীতি ও কৌশলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা পর্যবেক্ষণ
বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকের সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য “সুযোগ্য ব্যাংক বিধিমালা- ২০১৪” গঠন করে। এছাড়াও ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৫ অনুচ্ছেদ এর খ ও গ ধারায় পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব ও পরিধি সম্পর্কে সুনির্দষ্টভাবে বর্ণিত আছে। উল্লেখিত নির্দেশিকার আলোকে পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্বসমূহ নিম্নরূপ:
- কর্ম পরিকল্পনা ও কৌশলগত ব্যবস্থাপনা:
- পর্ষদ প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ করবে সে অনুযায়ী একটি নকশা তৈরী করবে।
- পর্ষদ বার্ষিক রিপোর্টে ব্যবসার লক্ষ্য অর্জনে সাফল্য/ব্যর্থতার বিষয়ে বিশ্লেষণাত্মক পর্যালোচনা অন্তর্ভুক্ত করবে।
- ঋণ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা:
- ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন, মঞ্জুর, বিতনল, আদায়, পুণঃতফশিল ও অবলোপন সম্পর্তে নীতিমালা ও কৌশল প্রণয়ন ও অনুমোদন।
- ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নীতিমালার কাঠামো তৈরী এবং তা পরিপালন নিশ্চিত করা
- আভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা
- মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন:
- নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরী ও তা অনুমোদন।
- কর্মচারীদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ নেয়া
- নৈতিকতা ও আচরণ বিধিমালা তৈরী
- আর্থিক ব্যবস্থাপনা:
- বার্ষিক বাজেট ও বিধিবদ্ধ আর্থিক বিবরণি বোর্ডর অনুমোদনক্রমে চুড়ান্ত করতে হবে।
- ব্যাংকের ক্রয় সংক্রান্ত নীতিমালা ও প্রক্রিয়ার একটি কাঠামো তৈরী করতে হবে এবং সে অনুযায়ী এ ধরণের খরচ নির্বাহ করার ক্ষমতা বন্টন করতে হবে।
- ব্যাংকে এসেট লাইয়াবিলিটি কমিটি (ALCO) গঠন করা হয়েছে কিনা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী এই কমিটি কাজ করছে কিনা তা বোর্ড পর্যালোচনা করবে।
- প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিয়োগদান
- অন্যান্য দায়িত্ব: বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব
- সভা অনুষ্ঠান: মাসে এক বা একাধিক বার , তবে অবশ্যই প্রতি তিন মাসে এক বার।
দুর্দশাগ্রস্ত ব্যাংক বা
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবসায়ন (Liquidation) এর সুবিধা ও অসুবিধা:
**সুবিধা :
1. অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা: দুর্বল ব্যাংক ব্যবস্থা পুরো আর্থিক খাতকে অস্থিতিশীল করতে পারে। অবসায়নের মাধ্যমে পদ্ধতিগত ঝুঁকি কমে। বাংলাদেশ ব্যাংক (কেন্দ্রীয় ব্যাংক) এর মতো রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠানের জন্য এটি একটি প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ।
2. **জমাকৃত অর্থর সুরক্ষা ও জনবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা: দুর্দশাগ্রস্ত ব্যাংক থেকে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য আমানত বীমা (Deposit Insurance Scheme) কাজে লাগানো যায়। সঠিক অবসায়ন প্রক্রিয়ায় অন্যান্য সুস্থ ব্যাংকের প্রতি জনআস্থা বাড়ে।
3. দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা দূরীকরণ: অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর দুর্দশার পেছনে ঋণ খেলাপি, দুর্নীতি ও দুর্বল ব্যবস্থাপনা দায়ী। অবসায়নের মাধ্যমে এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব।
4. অকার্যকর প্রতিষ্ঠান অপসারণ: প্রতিযোগিতামূলক ব্যাংকিং খাতে অকার্যকর প্রতিষ্ঠান বাজারে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। অবসায়নের মাধ্যমে সুস্থ ব্যাংকগুলোর জন্য পরিবেশ তৈরি হয়।
5. নতুন বিনিয়োগের পথ সুগম করা: আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ব্যাংকের সম্পদ বিক্রি করে পাওনা আদায় করে পাওনাদার (ক্রেডিটর) ও আমানতকারীদের কিছুটা হলেও ফেরত দেওয়া যায়।
6. বাজারে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা:
অবসায়ন দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাজার থেকে বাদ দিয়ে শক্তিশালী ও সুস্থ প্রতিষ্ঠানের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে। এটি বাংলাদেশের আর্থিক খাতে প্রতিযোগিতা ও দক্ষতা বাড়াতে সহায়ক।
**অসুবিধা:
1. অর্থনৈতিক প্রভাব: ব্যাংক অবসায়নে কর্মচারী চাকরিচ্যুত হয়, যা বেকারত্ব বাড়ায়। সংশ্লিষ্ট শিল্প ও ব্যবসায়িক খাতে ঋণের প্রবাহ ব্যাহত হতে পারে।
2. আমানতকারীদের ক্ষতি: Deposit Insurance Scheme (DIS) সীমিত পরিমাণে (যেমন বাংলাদেশে সাধারণত সর্বোচ্চ ১-৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত) ক্ষতিপূরণ দেয়, ফলে বড় আমানতকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।
3. আস্থার সংকট: একটি ব্যাংক বন্ধ হলে অন্যান্য ব্যাংকের প্রতিও জনসাধারণের আস্থা কমে যেতে পারে, যা Bank Run (ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের তীব্র প্রবণতা) তৈরি করতে পারে।
4. আইনি জটিলতা ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া: বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদী আইনি লড়াই (যেমন BASIC Bank, ফারমার্স ব্যাংকের মামলা) এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ অবসায়ন প্রক্রিয়াকে জটিল করে তোলে।
5. রাষ্ট্রীয় আর্থিক বোঝা: রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে সরকারকে আর্থিক সহায়তা বা বেইল আউট দিতে হয়, যা রাজস্বের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
6. ঋণ খেলাপিদের সুরক্ষা: অনেক ক্ষেত্রে ঋণখেলাপি (Loan Defaulters) আইনের ফাঁক দিয়ে রক্ষা পায়, যা অবসায়নের মূল উদ্দেশ্যকেই ব্যাহত করে।
সর্বোপরি, বাংলাদেশের মতো
উন্নয়নশীল দেশে ব্যাংক অবসায়ন একটি
জটিল কিন্তু প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া, যা সতর্কতার সাথে
বাস্তবায়ন করতে হবে।
পরিচালনা পর্ষদের কার্যদক্ষতা মূল্যায়ণ (Performance Evaluation):
সফল সাংগঠনিক কর্মক্ষমতার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তার পরিচালনা পর্ষদের কার্যকারিতা, এবং সেই কারণে কোম্পানিগুলিকে উচিত তাদের বোর্ডের বার্ষিক কার্যকারিতা পর্যালোচনা করা।বর্তমানে প্রভাবশালী কোম্পানির অসংখ্য আর্থিক কেলেঙ্কারির তিক্ত অভিজ্ঞতার পর বৃহৎ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের দ্বারা পরিচালনা পর্ষদের কার্যদক্ষতা মূল্যায়ণ একটি তীব্র দাবিতে পরিণত হয়েছে।
সাম্প্রতিককালে এটি সর্বজন বিদিত যে, একটি সংগঠনের কৌশল, নেতৃত্ব , সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সার্বিক কার্যক্ষমতা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ার ভুলের জন্য পরিচালনা পর্ষদ দায়ী। সাধারণত, বোর্ডের কার্যকারিতা প্রায়ই আর্থিক সূচকগুলির পরিপ্রেক্ষিতে মূল্যায়ন করা হয়, যেমন শেয়ারহোল্ডারদের কাছে রিটার্ন, বিনিয়োগে রিটার্ন বা সম্পদের উপর রিটার্ন ইত্যাদি, কিন্তু একটি কার্যকর বোর্ডকে পরিচালনার কৌশলগত, সম্মতি এবং অপারেশনাল সিদ্ধান্ত সক্রিয়ভাবে তদারকি করা উচিত।
পরিচালনা পর্ষদের কার্যদক্ষতা মূল্যায়ণে ব্যাসেল কমিটির নির্দেশিকা:
- পর্যায়ক্রমে কমিটির আকার, গঠন এবং কাঠামো এবং সমন্বয় এর পর্যালোচনাকরন।
- প্রত্যেক বোর্ড সদস্য যথার্থ কিনা তা সময় সময়ে অন্তত বছরে একবার মূল্যায়ন করতে হবে এবং সদস্যদের কার্যক্ষমতাও খতিয়ে দেখতে হবে।
- এই মূল্যায়নের অংশ হিসেবে সুশাসন ও প্রক্রিয়ার কার্যকারিতা সময় সময়ে পর্যালোচনা করতে হবে এবং কোথাও কোন পরিমার্জন দরকার হলে তা সম্পাদন করতে হবে।
পরিচালনা পর্ষদের চলমান উন্নয়ন প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে এই মূল্যায়নের ফলাফল ব্যবহার করুন বোর্ড এবং প্রয়োজন হলে তত্ত্বাবধায়কের সাথে ফলাফল শেয়ার করতে হবে।
পরিচালনা পর্ষদের কার্যদক্ষতা মূল্যায়ণে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশিকা:
“ আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ১৯৯৩” অনুযায়ী আমানতকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে ব্যর্থ হলে অথবা আমানতকারীর স্বার্থ বিরোধী কোন কর্মকান্ড গ্রহণ বা লাইসেন্সের কোন শর্ত পরিপালনে ব্যর্থ ব্যাংকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। উল্লেখিত আইনে নিম্নোক্ত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে:
১) ধারা ২১ এর বিধান অনুসারে যদি কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংককে তার চাহিদা পূরণে অপারগতা প্রকাশ করে। ধারা 20 এর অধীনে যদি বাংলাদেশ ব্যাংক তার পরিদর্শন করে বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে, আমানতকারীদের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর, বা আর্থিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যায় বা একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বকেয়া পরিশোধ করতে প্রায় অক্ষমতার অবস্থায় রয়েছে বা কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে প্রদত্ত লাইসেন্স নীতি লঙ্ঘন করেছে বা মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে, সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ন্যয়সঙ্গত বিবৃতি প্রদানের সুযোগ দান করতে পারে। অথবা নিচের যে কোন পদক্ষেপ নিতে এই ধরনের প্রতিষ্ঠানকে বাধ্য করতে পারে:
এটি তার ব্যবসায় অর্থায়নের সাথে সম্পর্কিত কাজগুলি করা বা না করার নির্দেশ দিতে পারে ৷
এটি ব্যবসার যথাযথ ব্যবস্থাপনার জন্য কোম্পানির খরচে যে কোন ব্যক্তিকে নিয়োগ দান বা নিয়োগ দানের নির্দেশ দিতে পারে ।
এটি তার ব্যবসার প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে অথবা অন্য কোন ব্যক্তিকে এ কাজের জন্য নির্দেশ দিতে পারে।
২) উপ-ধারা (1) এর অধীনে বাংলাদেশ ব্যাংক নিজে থেকে বা কোনো আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো গৃহীত ব্যবস্থা পরিবর্তন বা প্রত্যাহার করতে পারে এবং প্রয়োজনমত এই ধরনের প্রত্যাহার বা পরিবর্তনের উপর শর্ত আরোপ করতে পারে।
৩) এই ধারায় যা কিছুই থাকুক না কেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার জন্য হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করতে পারে।
৪) যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংক কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব গ্রহণ করে, আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত এটি নিয়ন্ত্রণ করবে যতক্ষণ না পর্যন্ত সে সন্তুষ্ট হবে যে নিয়ন্ত্রণের আর প্রয়োজন নেই
৫) বাংলাদেশ ব্যাংক একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ বা পরিচালনার জন্য নিযুক্ত কোন ব্যক্তির কাজের পারিশ্রমিক নির্ধারণ করবে। এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান এর ব্যয় এবং এর নিয়ন্ত্রণের সময় উদ্ভূত অন্যান্য খরচ বহন করবে।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
উর্ধতন ব্যবস্থাপনা (The Senior management):
উর্ধতন ব্যবস্থাপনা বলতে শীর্ষ স্তরের ব্যবস্থাপনাকে বুঝায় যারো একটি সংগঠন চালানোর জন্য একসাথে কাজ করে। একদল ব্যক্তি একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অধীনে একটি প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্রের সর্বোচ্চ স্তরে অবস্থান করে এবং সংগঠনের কৌশলগত হাল ধরে। উর্ধতন ব্যবস্থাপনা সংগঠনে সুস্পষ্টভাবে নির্ধারিত এমন কিছু ভুমিকা পালন করে যা ব্যবসার বিভিন্ন স্তরের কার্যক্রম তদারকির সাথে জড়িত।
উর্ধতন ব্যবস্থাপনা কর্মীদলের ভুমিকা ও দায়িত্ব (Senior Management Team- SMT):
* সংগঠনের জন্য যথোপযুক্ত কৌশল উদ্ভাবন এবং বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণ
* অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণ এবং সেই লক্ষে কাজ করা
* গুরুত্বপূর্ণ বিভাগসমূহ যেমন: মানব সম্পদ ও অর্থায়ন এর কার্যক্রম সমণ্বয়
* প্রতিষ্ঠানরে মধ্যে সম্পদের ব্যবস্থাপনা সংগঠিত করা
* বোর্ডের মাধ্যমে শেয়ার হোল্ডারদের চাহিদা পূরণ
২০১৫ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের খসড়া নির্দেশিকায় ব্যবস্থাপনা কমিটির কার্যাবলি নিম্নোক্তভাবে বর্ণনা করা হয়েছে:
১.ম্যানকম (MANCOM) ব্যাংকিং সংগঠনের আভ্যন্তরিণ নিয়ন্ত্রণ কাঠামো তৈরী করে যাতে স্পষ্টভাবে উর্ধতন ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব, ক্ষমতা ও সম্পর্ক বর্নিত আছে ।
২. ম্যানকম ব্যাংকের স্থায়ী নীতি ও প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে আভ্যন্তরিণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার পর্যাপ্ততা ও কার্কারিতা তদারকি করবে।
৩. ব্যবস্থাপনা কমিটি সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সার্বিক কার্যকারিতা বার্ষিক ভিত্তিতে পর্যালোচনা করবে এবং পরিচালনা পর্ষদের কাছে আভ্যন্তরীন নিয়ন্ত্রণ নীতিমালার অনুশীলন ও কার্যকারিতা সম্পর্কে তুলে ধরবে।
৪. উর্ধতন ব্যবস্থাপনা কার্যকর নীরিক্ষার জন্য অডিট কমিটির চাহিদা অনুযায়ী পর্াপ্ত জনবল এবং আইটি সুবিধা সরবরাহ করবে।
৫. উর্ধতন ব্যবস্থাপনা বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ যেমন: বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রনালয় ও সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত সকল আইন ও বিধিমালা পরিপালন নিশ্চিত করবে।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা:প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উর্ধতন ব্যবস্থাপনার দলীয় কাঠামোর সর্বোচ্চ স্থানের পদটি অলঙ্কৃত করেন এবং তিনি চুড়ান্তভাবে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের সাফল্যের জন্য দায়বদ্ধ থাকেন। অন্যান্য জ্যেষ্ঠ নির্বাহী বোর্ডের পরিচালকদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার মাদ্যমে তিনি ব্যবসা পরিচালনার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ন শীর্ষ স্তরের সিদ্ধান্তসমূহ গ্রহণ করেন ।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব ও কর্তব্য:
১. অন্যান্য উর্ধতন কর্মকর্তা ও পরিচালনা পর্ষদের সহযোগীতায় সংগঠনের জন্য কৌশল নির্ধারণ করেন।
২. বোর্ড ও উর্ধতন ব্যবস্থাপনা কর্মীবৃন্দের সাথে আলোচনাপূর্বক ব্যবসার উচ্চ পর্যায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ।
৩. সংগঠন কার্যকরভাবে কৌশলসমূহ বাস্তবায়ন করছে কিনা তা নিশ্চিত করা।
৪. কোম্পানির অগ্রগতি সম্পর্কে পর্ষদে প্রতিবেদন প্রদান।
৫. শেয়ারহোল্ডার জনগনের সাথে যোগাযোগ করার জন্য কোম্পনির চেয়ারপার্সনের সাথে কাজ করা। অধ্যাপক ড্যানিয়েল আইসেনবার্গ বলেছেন যে, একজন প্রধান নির্বাহিকে কয়েক ডজন সমস্যা ও বিষয়ের মুখোমুখি হতে হয় এবং মোকাবেলা করতে হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী নিয়োগের নিয়ম ও বিধিবিধান (Rules and Regulations for Appointing the Chief Executive Officer):
১. যোগ্যতার মানদণ্ড
- পেশাগত অভিজ্ঞতা: প্রার্থীর ব্যাংকিং খাতে কমপক্ষে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে (পূর্বে এটি ছিল ১৫ বছর)। এছাড়া, তাকে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে দুই বছর ম্যানেজিং ডিরেক্টর বা সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
- বয়সসীমা: নিয়োগের সময় প্রার্থীর বয়স ৪৫ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। এটি নতুনভাবে ন্যূনতম বয়সের শর্ত যোগ করেছে, যা পূর্বে ছিল না।
- নৈতিক সদাচার ও পূর্ব ইতিহাস:
- প্রার্থীকে উচ্চতর নৈতিক শিষ্টাচার প্রদর্শন করতে হবে এবং কোনো প্রতারণামূলক কার্যকলাপ, আর্থিক অপরাধ বা অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত থাকা যাবে না।
- কোনো ফৌজদারি আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি ব্যক্তি হওয়া যাবে না বা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনসাইট/অফসাইট পরিদর্শন, কোনো আদালত বা সরকারি কর্তৃপক্ষের বিরূপ মন্তব্য থাকা যাবে না।
- তিনি ঋণ খেলাপি, কর ফাঁকিদাতা বা দেউলিয়া ঘোষিত হতে পারবেন না।
- পূর্ববর্তী মেয়াদে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কোনো অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত থাকা যাবে না।
২. নিয়োগ প্রক্রিয়া
- পর্ষদের ভূমিকা: ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ প্রার্থী প্রস্তাব করে, তবে নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন প্রয়োজন। পর্ষদকে নিশ্চিত করতে হবে যে প্রার্থী সকল যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করে।
- বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন: সকল নিয়োগ ও পুনর্নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন প্রয়োজন। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গঠিত চার সদস্যের একটি কমিটি প্রার্থীর যোগ্যতা, উপযুক্ততা এবং সুশাসনের মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যতা মূল্যায়নের জন্য সাক্ষাৎকার পরিচালনা করে।
- কর্মক্ষমতার লক্ষ্যমাত্রা: নিয়োগের সময় ব্যাংককে প্রধান নির্বাহীর জন্য নির্দিষ্ট এবং পরিমাপযোগ্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে, যার মধ্যে রয়েছে অবলোপিত ঋণ হ্রাস, লিখিত-বাতিল ঋণ পুনরুদ্ধার এবং অন্যান্য আর্থিক ও ব্যবস্থাপনাগত উন্নতি। এই লক্ষ্যমাত্রাগুলো পর্যায়ক্রমে পর্যালোচনা করা হয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে হয়।
৩. মেয়াদ ও পুনর্নিয়োগ
- মেয়াদের সময়কাল: প্রাথমিক মেয়াদ তিন বছর, যা কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে পুনর্নিয়োগ করা যেতে পারে। মেয়াদ ৬৫ বছর বয়সের বেশি বাড়ানো যাবে না।
- পুনর্নিয়োগ প্রক্রিয়া: পুনর্নিয়োগের জন্য ব্যাংককে পর্ষদের অনুমোদনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। প্রতিবেদনে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে:
- অবলোপিত ঋণ হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন।
- লিখিত-বাতিল ঋণ পুনরুদ্ধার।
- পূর্ববর্তী মেয়াদে নির্দিষ্ট দায়িত্ব ও লক্ষ্যমাত্রার অগ্রগতি।
- সামগ্রিক আর্থিক, ব্যবসায়িক এবং ব্যবস্থাপনাগত উন্নতি।
৪. মেয়াদকালীন বিধিনিষেধ
- প্রধান নির্বাহী অন্য কোনো ব্যবসা বা পেশাগত কার্যকলাপে জড়িত হতে পারবেন না।
- ব্যাংকের পরিচালকদের নিয়ন্ত্রিত কোম্পানির সাথে তিনি জড়িত থাকতে পারবেন না।
- প্রধান নির্বাহীর পরিবারের কোনো সদস্য ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারবেন না।
- বিদেশ ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি প্রয়োজন।
৫. বরখাস্ত ও পদত্যাগ
- বরখাস্ত: যেকোনো বরখাস্তের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি প্রয়োজন। প্রধান নির্বাহী যদি কর্মক্ষমতার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হন, নিয়ম লঙ্ঘন করেন বা সুশাসন সংক্রান্ত সমস্যা থাকে, তবে বাংলাদেশ ব্যাংক হস্তক্ষেপ করতে পারে।
- পদত্যাগ: প্রধান নির্বাহী যদি ব্যক্তিগত কারণে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে পদত্যাগ করেন, তবে তাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কমিটির সাথে সাক্ষাৎকারে বিস্তারিত কারণ উল্লেখ করতে হবে।সিইও পরম্পরা পরিকল্পনার গৃহীত ব্যবস্থা (Measures for CEO Succession Plan):
১. ভবিষ্যৎ সিইও-এর মানদণ্ড তৈরি
২. মেধাবী সরবরাহর ধারা গড়ে তোলা
৩. অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের মূল্যায়ন
৪. বাহ্যিক প্রতিভার সাথে তুলনামূলক মূল্যায়ন
৫. নিয়ন্ত্রক পদক্ষেপের মাধ্যমে সিইও পরিবর্তন
ব্যবসার কৌশল: সাংগঠনিক ও ব্যবস্থাপনা সংস্কৃতি
সকল ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ সংগঠনের সংস্কৃতি ও কোম্পানির সাফল্যর সাথে যোগসুত্র পেয়েছেন। একটি সংগঠনের সংস্কৃতি কোন উপজাত পন্য নয় বরং এটি ক্যেশলগত পরিকল্পনার অবিচ্ছেদ্য অংশ কারণ সংস্কৃতি যে কোন সংগঠনের কৌশলকে প্রভাবিত করতে পারে। সাংগঠনিক সংস্কৃতি হল, কোন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা পরিচালনা ক্ষেত্রে তার নিজস্ব ঐতিহ্য, মূল্যবোধ, নীতি এবং মনোভাব।
ব্যবসায়িক কৌশল হলো একটি পরিকল্পনা যা একটি কোম্পানি তার লক্ষ্য অর্জন এবং প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার জন্য তৈরি করে। এতে লক্ষ্য নির্ধারণ, টার্গেট মার্কেট চিহ্নিতকরণ, সম্পদ বরাদ্দ এবং মূল্য সৃষ্টি, প্রবৃদ্ধি ও প্রতিযোগীদের থেকে এগিয়ে থাকার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া জড়িত।
একটি কোম্পানি তাদের ব্যবসার লক্ষ্য খুব সহজেই অর্জন করতে পারে যদি তারা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং উদ্দেশ্যর মধ্যে সাংগঠনিক সংস্কৃতি বজায় রাখে।
ব্যবসায়িক কৌশলের উপর সাগঠনিক সংস্কৃতির প্রভাব (Impacts of Organizational Culture on Business Strategy):
১) কর্মীদেরকে মর্যাদা, সহানুভুতি ও শ্রদ্ধার চোখে দেখা:
২) সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনের সুযোগ:
৩) কোম্পানির মূল্যবোধের প্রয়োগ:
৪) ব্যবসায়িক কৌশল হিসেবে সংস্কৃতিকে গণ্য করা
৫্র) ব্যবসায়িক কৌশলের উপরে সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দেয়া
৬) বৈচিত্রপূর্ণ কর্মীদল তৈরী
৭) ফলাবর্তন প্রদানে কর্মীদেরকে ক্ষমতা দান
৮) নিয়োগের অনন্য মানদণ্ড তৈরি করা
৯) সংস্কৃতি এবং কৌশল পরস্পর বিনিময়যোগ্য
১০) সংস্কৃতি ও ব্যবসায়িক কৌশলের সংযোগ
সাংগঠনিক সংস্কৃতি এবং ব্যবসায়িক কৌশলের মধ্যে সম্পর্ক (Relation between Organizational Culture and Business Strategy):
1. কৌশল বাস্তবায়নের ভিত্তি: 2. কৌশলগত নমনীয়তার মধ্যে ধারাবাহিকতা:
3. লক্ষ্যের সাথে আচরণগত সংগতি: 4. সক্রিয় সাংস্কৃতিক সংযোজন:
5. সাফল্যের জন্য কর্মীদের ক্ষমতায়ন: 6. দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের প্রচার:
____ ____________ _ _ ____________ _ _ _ .... _____________ _ _ _
মূলধনের পর্যাপ্ততা: (Capital Adequacy)
মূলধনের পর্যাপ্ততা বলতে বিভিন্ন ধরণের ঝুঁকি ও অপ্রত্যাশিত ক্ষতির জন্য মজুদ হিসাবে পর্যাপ্ত মূলধন বজায় রাখাকে বোঝায় যা থেকে একটি ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পূর্বে যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে। যে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য মূলধন অবশ্যই একটি অপরিহার্য বিষয় এবং ব্যাংকের জন্য এটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ । যেহেতু আমানতকারীরাই ব্যাকের ঋণ ব্যবসায় বিনিয়োগের জন্য মূলধনের প্রধান সরবরাহকারী, তাই ব্যাংকগুলিকে আমানতকারীর বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে হয়। তাই নিয়ন্ত্রণকারী কতৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসারে ব্যাংকগুলিকে তার ঝুঁকির বিপরীতে মূলধনের একটি নির্ধারিত হার সংরক্ষণ করতে হয়। মূলধনের এই হারকে বলা হয় মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত বা CAR.
মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত সংরক্ষণের গুরুত্ব:
চিরাচরিত কর্পোরেট অর্থায়নের দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করলে দেখা যায় মূলধন পরিচালনাগত এবং অস্বাভাবিক ক্ষতির হাত থেকে সুরক্ষা প্রদান করার মাধ্যমে ব্যাংকের ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকি কমায়। এই ধারনা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কোম্পানির জন্য প্রযোজ্য যারা দীর্ঘ মেয়াদী দায়ের ওপর নির্ভর করে এবং যাদের আর্থিক লিভারেজ তুলনামূলকভাবে কম। এটি বাণিজি ̈ক ব্যাংকের জন্য তেমন প্রযোজ্য নয়। নিয়ন্ত্রণকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাংক মূলধনকে ব্যর্থতার সময় গ্রাহকের আমানতকৃত তহবিলের বিমা প্রদান করে। যখন একটি ব্যাংক ব্যর্থ হয় তখন নিয়ন্ত্রণকারী কতৃপক্ষ বিমাকৃত আমানতকারীদের টাকা পরিশোধ করতে অথবা একটি শক্তিশালী ব্যাংককে ঐ ব্যর্থ ব্যাংককে কিনতে সহায়তা প্রদান করে। ব্যাংকের মূলধন যত বেশী হবে একত্রীকরণ ব্যবস্থা করার খরচ তত কম হবে এবং আমানতকারীদেরকে তাদের অর্থ পরিশোধ করা যাবে। ব্যাংক মূলধনের কাজ হলো ব্যাংকের ঝুঁকি হ্রাস করা। এছাড়াও ব্যাংক মূলধনের নিয়ন্ত্রণকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে যে সব কাজ রয়েছে তা হলো:
১) ক্ষতি পোষাতে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা : দুর্যোগ, ব্যবসায়িক ক্ষতি এবং অনির্দিষ্ট সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি যেমন: কু-ঋণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কর্মকর্তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার, তহবিল তছরূপের কারণে মূলধনের যে ঘাটতি দেখা দেয় তার বিপক্ষে প্রতিরক্ষা মূলক ব্যবস্থা হিসেবে পর্যাপ্ত অর্থ সরবরাহ ..
২) আর্থিক বাজারে প্রবেশাধিকারে সহায়তা এবং আমানত বহিঃপ্রবাহে তারল্য সমস্যার সমাধান:
৩) মূলধন বৃদ্ধি এবং ঝুঁকি হ্রাস : ব্যাংকের যাবতীয় খরচ ও ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে মুনাফা অর্জনে সহায়তা করে। মুনাফা সংরক্ষিত আয় হিসেবে রেখে মূলধন বৃদ্ধি করা সম্ভব যা...
৪) ব্যাংক অবসায়নের সময় সুবিধা: একটি ব্যাংক বন্ধ করার প্রক্রিয়া চলাকালীন, ব্যাংকের মূলধনের চেয়ে আমানতকারীদের টাকা বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। মূলধনের পর্যাপ্ততা অনুপাত যত বেশি আমানতকারীদের সম্পদের সুরক্ষাও তত বেশি।
৫) উদ্বর্ত পত্র বহির্ভুত দফার ঝুঁকি প্রশমন: ব্যাঙ্কের অফ ব্যালেন্স শীট দফা যেমন- ঋণপত্র, গ্যারান্টি, প্রতিশ্রুতি এবং চুক্তিসমূহের ক্ষেত্রেও ঋণ ঝুঁকি আছে। উদ্বর্ত পত্রের অন্তর্ভুক্ত এবং উদ্বর্ত পত্র বহির্ভুত ঋণকে একত্রিত করা হয় মোট ঝুঁকি-ভারযুক্ত ঋণ সুবিধা (exposure) পাওয়ার জন্য।
বাণিজ্যিক ব্যাংকের সম্পদের গঠন:
একটি ব্যাংকের সম্পদের গঠন তহবিলের উৎসের বহুমুখী বিস্তার এর প্রতিফলন। ব্যাংক সম্পদ প্রধানত বিভিন্ন ধরনের ঋণ এবং বিপণনযোগ্য সিকিউরিটিজ এবং মূল অর্থের রিজার্ভ নিয়ে গঠিত, যা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রকৃত নোট এবং কয়েন হিসাবে অথবা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে সংরক্ষিত ক্রেডিট ব্যালেন্স (আমানত) হিসাবে থাকে। মুনাফা অর্জন করার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে অত্যাবশকীয়ভাবে সম্পদ অর্জনে তার তহবিলকে খাটাতে হয়, বিশেষ করে ঋণ ও অগ্রিম এবং বিনিয়োগ খাতে। ব্যাংকের তহবিলের উৎসর ৮০% আসে আমানত খাত থেকে। মোট আমানতের ৫০% আসে মেয়াদী আমানত থেকে। মোট দায়ের ৫% আসে ধার বা কর্য থেকে।
ব্যাংকের সম্পদসমূহ:
ব্যাংকের সম্পদের কাঠামো নির্দিষ্ট নীতি যেমন: তারল্য, লাভজনকতা, রূপান্তরযোগ্যতা এবং ঝুঁকি মূল্যায়ন ইত্যাদি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। সম্পদের কাঠামোকে প্রভাবিত করে এমন অন্যান্য দিকগুলি হল: মুদ্রাবাজারের প্রকৃতি, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সরকারের নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গি । ব্যাংকের বিভিন্ন ধরণের সম্পদসমূহ নিচে আলোচনা করা হল:
১) নগদ অর্থ : হাতে নগদ, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য বংকে রক্ষিত
২) স্বল্প সময়ের নোটিশে প্রাপ্ত তলবী অর্থ : ১ হতে ১৪ দিনের জন্য প্রদানকৃত নগদ
৩) বিনিয়োগ: তিন ধরনের বিনিয়োগ: ১. সরকারি সিকিউরিটি ২. অন্যান্য অনুমোদিত সিকিউরিটি ও ৩. অন্যান্য সিকিউরিটি
৪) ঋণ ও অগ্রিম, ক্রয়কৃত ও বাট্টাকৃত বিল: বিভিন্ন ধরণের ঋণসমূহ: ১. ক্যাশ ক্রেডিট ২. জমাতিরিক্ত উত্তোলন ৩. স্বল্পমেয়াদী ঋণ ৪. মেয়াদী ঋণ
৫) স্থায়ী সম্পদ
ঝুঁকি-ভারযুক্ত সম্পদ (Risk-weighted assets- RWA) :
একটি ব্যাঙ্কের ঋণদানের কার্যক্রম এবং অন্যান্য সম্পদের ঝুঁকি প্রোফাইলের সাথে সম্পর্কিত ন্যূনতম পরিমাণ মূলধনের পরিমাণ নির্ধারণ করতে ঝুঁকি-ভারযুক্ত সম্পদ ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ ঝুঁকি-ভারযুক্ত সম্পদ হল সম্পদ শ্রেণীবিভাগ এমন একটি ব্যবস্থাকে বোঝায় যা দেউলিয়াত্ব এড়াতে ব্যাঙ্কের রিজার্ভের ন্যূনতম মূলধন নির্ধারণ করা হয়।
দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকি কমাতে এবং আমানতকারীদের রক্ষা করার জন্য এটি করা হয়। একটি ব্যাংক যত বেশি ঝুঁকিতে থাকে, তার হাতে তত বেশি মূলধন রাখা প্রয়োজন। প্রতিটি ধরণের ব্যাঙ্ক সম্পদের ঝুঁকি মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করে মূলধনের প্রয়োজনীয়তা নির্ণয় করা হয়। উদাহরণ স্বরূপ, ঋণপত্র দ্বারা সুরক্ষিত একটি ঋণ সহজামানত সহ সুরক্ষিত একটি বন্ধকী ঋণের চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হয় যার ফলে আরও মূলধনের প্রয়োজন হয়।
সম্পদের ঝুঁকি নির্ণয় ও মূল্যায়ন:
ঝুঁকি-ভারযুক্ত সম্পদ গণনার জন্য ২টি সম্ভাব্য সূত্র রয়েছে:
১. মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত জানা থাকলে,
ঝুঁকি-ভারযুক্ত সম্পদ = (টায়ার ১ + টায়ার ২ মূলধন ) ÷ মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত
২. যদি মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত সহজে না পাওয়া যায়,
প্রথম ধাপে ব্যাংক/ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অন্তর্গত প্রতিটি সম্পদের ঝুঁকি পরিমাপ
দ্বিতীয় ধাপে, ঝুঁকির মূল্য নির্ণয়।
ফলাফলের হবে, মোট RWA বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট ঝুঁকি-ভারযুক্ত সম্পদ।
Asset Amount (tk) Risk weight (%) RWA (risk weighted asset) Cash 20, 00,000 0 0 Government of BD Bonds 10,00,000 0 0 Housing loans 40,00,000 35 14,00,000 Business loans 30,00,000 100 30,00,000 Total 1,00,00,000 44,00,000 একটি ব্যাঙ্কের কাছে থাকা নির্দিষ্ট সম্পদের সাথে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণের ক্ষেত্রে অনেকগুলো বিষয় বিবেচনা করা হয়। ধরা যাক ব্যাঙ্ক একটি ট্রেজারি বিল বা সরকারি বন্ডে বিনিয়োগ করেছে। এতে খুব কম বা কোন ঝুঁকি আসবে না কারণ সরকারের স্থিতিশীল কর আয় ব্যবস্থা থাকার কারণে তার বকেয়া ফেরত দেওয়ার ক্ষমতা আছে।
যখন ব্যাংক সম্পদ মূল্যায়ন করা হচ্ছে একটি বাণিজ্যিক ঋণ প্রদান করে, নিয়ন্ত্রক ঋণগ্রহীতার ঋণ পরিশোধের ধারাবাহিকতা এবং নিরাপত্তা হিসাবে ব্যবহৃত সহজামানতকে ঝুঁকি বিবেচনায় আনতে হবে।
যদি ব্যাঙ্ক একটি আবাসন প্রকল্পের জন্য একটি নির্মাণ কোম্পানির কাছে একটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে, তাহলে মূল বিবেচ্য হবে বাড়ি বিক্রি থেকে সম্ভাব্য উপার্জন এবং জমি ও বাড়ির মূল্য আসল এবং সুদ পরিশোধের জন্য যথেষ্ট হয়।
সমস্যাগ্রস্ত সম্পদ (Problem Assets):
একটি সম্পদকে সমস্যাগ্রস্ত সম্পদ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় যখন বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে চুক্তির শর্তাবলী অনুযায়ী আসল ও সুদসহ সমস্ত পরিমাণ বকেয়া আদায় করা যাবে না। আদায়ের এই ধরনের অনিশ্চয়তাকে সমস্যাযুক্ত সম্পদ হিসাবে চিহ্নিত করা আবশ্যক, যা ব্যবস্থাপনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ।ব্যাংকিং ব্যবসায় সমস্যাগ্রস্ত ঋণ এড়ানো প্রায় অসম্ভব।
সমস্যাগ্রস্ত সম্পদ /NPL এর শ্রেণীবিভাগ (Categories):
স্পেশাল মেনশন: যেখানে একটি ঋণের সম্ভাব্য দুর্বলতা ধরা পড়ে, যা ব্যবস্থাপনার বিশেষ মনোযোগ দরকার হয়। কোন ঋণের কিস্তি ৩ মাসের বেশি বকেয়া হলে ..
সাবস্টান্ডার্ড : যখন কোন ঋণের দুর্বলতা এমনভাবে চিহ্ণিত হয় যেখানে ঋণের সুদ আদায় করা কষ্টসাপেক্ষ এবং ঋণটি বিপদের মুখে পড়বে। কোন ঋণের কিস্তি ৬ মাসের বেশি খেলাপী হলে ..
ডাউটফুল: যেখানে পরিস্থিতির এত অবনতি হয়েছে যে সম্পূর্ণ ঋণের সম্ভাব্য অর্থ আদায় করা একেবারেই সম্ভব নয় এবং ব্যাংক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। কোন ঋণের কিস্তি ৯ মাসের বেশি খেলাপী হলে ..
ব্যাড ও লস : যেখানে কোন ঋণ আদায়ের সকল প্রচেষ্টা অযোগ্য বলে বিবেচিত হয় এবং এর মূল্য তুচ্ছ হয়ে পড়ে যা আর ব্যাংকযোগ্য সম্পদ হিসাবে অব্যাহত রাখা অনিশ্চিত। কোন ঋণের কিস্তি ৬ বা পরিশোধের শিডিউল অনুযায়ী ১২ মাসের বেশি খেলাপী হলে তা কুঋণ হিসেবে গন্য করা হয়। এই শেণীবিভাগের অর্থ এই নয় যে এই ঋণের একদমই কোন আদায় বা উদ্ধারকৃত মূল্য নেই বরং এর অর্থ এটাই যে এরকম ঋণ আর কোনভাবেই অবলোপন না করে রেখে দেয়া বাঞ্ছনীয় নয়।
NPL বা অপরিচালনযোগ্য ঋণ কি?
নন-পারফর্মিং ঋণ, বা "NPLs" হল ব্যাঙ্ক লোন যেগুলি দেরিতে পরিশোধের সম্ভাবনা বা ঋণগ্রহীতার দ্বারা পরিশোধ করার সম্ভাবনা নেই৷ আর্থিক সঙ্কট এবং পরবর্তী মন্দার সময় ঋণগ্রহীতাদের তাদের ঋণ ফেরত দিতে অক্ষমতা আরও বেড়ে যায়। অন্যভাবে বলা যায়, নন-পারফর্মিং ঋণ (NPL) হল এমন একটি ঋণ যা ঋণগ্রহীতা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্ধারিত পরিমাণ অর্থপ্রদান না করার কারণে খেলাপি হয়।
সতন্ত্র সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিটের কার্যাবলি/ সমস্যাগ্রস্ত সম্পদ ব্যবস্থাপনার উপায়:
১. একটি স্বাধীন এসএএম ইউনিট কতৃক ঝুঁকি কার্যক্রম সম্পর্কে সিআরও/সিএফও-কে সরাসরি রিপোর্ট করে জানাতে পারে তা বাস্তবায়ন করা।
২. প্রতিটি মামলা একজন আদায়কারী কর্মকর্তার কাছে বরাদ্দ করুন, যাতে মামলার শুরু থেকে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি পর্যন্ত সে দায়ী থাকে।
৩. একজন দেনাদারের সকল মামলা একজন ব্যক্তির কাছে ন্যস্ত করতে হবে।
৪. কাজের চাপ এবং পরিমাণের উপর ভিত্তি করে আদায়কারী কর্মকর্তাদের পোর্টফোলিও পর্যালোচনা এবং সামঞ্জস্য করন।
৫. আদায়কারী কর্মকর্তাদের আপোষ, মিমাংসার দক্ষতা এবং আইনি জ্ঞানের উন্নতিতে বিনিয়োগ করা।
৬. জটিল মামলা বা উচ্চ পর্যায়ের মামলাগুলির জন্য একটি নির্দিষ্ট আদায়ের পন্থা পরিকল্পনা করা।
৭. আদায়কারী কর্মকর্তাদের ক্ষতিপূরণ সুবিধাকে তাদের ব্যক্তিগত কর্মক্ষমতার সাথে সংযুকাত করা।
৮. কোন আগ্রাসি প্রণোদনা প্রকল্পর অভিসন্ধি করা যাবে না কারণ তা অনৈতিক কার্যকলাপকে উৎসাহিত করতে পারে এবং ব্যাংকের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে পারে।
GFI এর আরও প্রস্তুতি নিতে ক্লিক করুন
বিঃ দ্রঃ সংক্ষিপ্ত প্রস্তুতির জন্য এখানে শুধু মূল বিষয়বস্তু তুরে ধরা হয়েছে, বিশদ আলোচনার জন্য নিজে করতে হবে।
So Nice
ReplyDeleteঅনেক ভালো একটা কম্পোজিশন। এটা পড়লেই তো পাশ।
ReplyDeleteঅনেক অনুপ্রাণিত হলাম; এটার কিন্তু দ্বিতীয় অংশ পরের পেজ এ গেলে পাবেন। ধন্যবাদ
DeleteNice prescribed
ReplyDeleteGlad to know, these content is useful to you..
DeleteGIF খুবই চমৎকার সাজিয়েছেন ভাইয়া, OM এ ধরনের প্রস্তুতির ব্যবস্থা করে দিলে উপকৃত হব।
ReplyDeleteজেনে ভাল লাগল, বর্তমানে এই সাইটে এই লিংকে Org. & Mngt. এর সংক্ষিপ্ত টীকা অংশ পাবেন;
Deleteঅন্যান্য কোর্স আপডেট জানতে ‘BANKING PROFESSIONAL TIPS' মেনুতে যান
thanks.. Chapter wise hole r o subidha hoto
ReplyDeleteYou are Welcome, Something You missed, It is arranged by Module-wise.
DeleteThanks brother
ReplyDelete