Right Click n Copy Disabled

Ads block

Banner 728x90px

Governance in Financial Institute-next part


                                     আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুশাসন

                                                  (সংক্ষিপ্ত প্রস্তুতি- ২য় অংশ)  

 

এক নজরে এই অংশের বিষয়বস্তু :

মার্চেন্ট ব্যাংকিং ও এর কাজ:
এজেন্ট ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে এজেন্ট নির্বাচনে বিবেচ্য বিষয়সমূহ:
ব্যাংকার ও গ্রাহক সম্পর্ক:
অভিযোগ ব্যবস্থাপনা ও এর দিক নির্দেশনাসমূহ:
গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের সাথে সুসম্পর্ক এবং ব্যবসার সামাজিক দায়বদ্ধতা:
সমাজ বা গোষ্ঠীর উন্নয়নে কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার ভুমিকা (Roles of CSR in Community Dev.):
স্বচ্ছতা ও প্রকাশ নীতি এবং এর গুরুত্ব:
ভবিষ্যতের সন্ধানকারী সংস্থা এবং ভবিষ্যতমুখী সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ  বৈশিষ্ট্য:
বাজার দখল এবং কার্যকর বাজার অবস্থান বা জায়গা করে নেয়ার কৌশল:
ডিজিটাল এজেন্ডা, এর উপাদান ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল এজেন্ডার বাস্তবায়নের উদ্দেশ্য/গুরুত্ব:
কর্মীদের উচ্চতর দক্ষতা সম্পন্নকরণ (Up-scaling employees) ও এর গুরুত্ব বা সুবিধা:  

 
প্রাতিষ্ঠানিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কাঠামো (Enterprise Risk Management Framework -ERMF):

প্রাতিষ্ঠানিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা (ERM) হল একটি পদ্ধতি যার মাধ্য‌মে কৌশলগতভাবে পুরো সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টিকোণ থেকে  ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে দেখা হয়। এটি সংগঠ‌নের উচ্চ স্ত‌রের সু‌চি‌ন্তিত কৌশল যার লক্ষ্য হল, একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা ও উদ্দেশ্যসমূহে হস্তক্ষেপ করতে পারে অথবা ক্ষতির দিকে নিয়ে যেতে পারে,  এমন সম্ভাব্য ক্ষতি, বাধা- বিপত্তি এবং অন্যান্য ক্ষতির সম্ভাব্যতা সনাক্ত করা, মূল্যায়ন করা এবং তার জন্য প্রস্তুত হওয়া।

প্রাতিষ্ঠানিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার উপাদান: 
১. আচরণ বিধি
২. উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নির্ধারণ:
৩. ঝুঁকি চিহ্নিতকরন: মানসিক চাপ পরীক্ষা , আপদকালীন পরীক্ষা, ঝুঁকির মডেল তৈরী, ঝুঁকির দায়িত্ব গ্রহণ, কৌশলগত পরিকল্পনা
৪. ঝুঁকির মূল্যায়ন
৫. ঝুঁকিতে সাড়াদান
৬. যাচাইকরন ও ভারসাম্য রক্ষা
৭. তথ্য ও যোগাযোগ
৮. তদারকি 
 
উদ্ভুত ঝুঁকি (Emerging Risk):

উদ্ভুত বা উদীয়মান ঝুঁকি হল নতুনও অপ্রত্যাশিত ঝুঁকি যা বর্তমানে  অনুমান করা যায় না । এটা এমন ঝুঁকি যার কোন পূর্ব লক্ষণ বিদ্যমান নেই এবং এর ক্ষতি বা ক্ষতির সম্ভাবনা সম্পূর্ণরূপে জানা যায় না। 

অন্যভাবে বলা যায়,  উদীয়মান ঝুঁকি বলতে বুঝায় ভবিষ্যতে ঘটতে পারে বা ইতিমধ্যে বিদ্যমান রয়েছে এমন ঝুঁকি যা পরিমাপ করা কঠিন এবং ভবিষ্যতে একটি প্রতিষ্ঠানের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

উদ্ভুত ঝুঁকির বৈশিষ্ট্য:
আন্তর্জাতিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট বা  IRM এর মতে উদীয়মান ঝুঁকিসমূহ নিম্নরূপ:
১. অস্পষ্ট              ২. বিশৃঙ্খল              ৩. জটিল            ৪. সময়সীমা পরিবর্তনশীল 
৫. অনিশ্চিত            ৬. অনিয়ন্ত্রণযোগ্য   এবং                     ৭. পরিবর্তনশীল
 
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতার কারণ/দুর্বল দিক:
১. দুর্বল যোগাযোগ :
২. সহনশীলতার অভাব:
৩. দুরদৃষ্টির অভাব:
৪. অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস
৫. চ্যালেঞ্জ এর অভাব:
৬. দুঃসংবাদের ভয়
৭. উদাসীনতা
৮. সাড়াদানে ধীরগতি
 
বস্তুগত ঝুঁকি (Material Risk): 

বস্তুগত ঝুঁকি হল সেই সব ঝুুকি যা কোন ব্যক্তির লক্ষ্যে পৌছানোর সম্ভাবনাকে হুমকির মুখে ফেলে দিতে পারে এবং যা আগামী ৩০/৪০ বছরের সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ আর্থিক পরিকল্পনাকে লাইনচ্যুত করতে পারে। বস্তুগত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে প্রধান বাজার নিম্নমুখী প্রবণতা, বিশেষ করে সে সকল বাজার যা পুনরুদ্ধার করতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে।

বস্তুগত ঝুঁকি সমূহ যা হ্রাস করা সম্ভব: 
১. ঋণ ঝুঁকি:                     ২. ঋণ কেঁদ্রীভূত হওয়ার ঝুঁকি (Credit Concentration Risk)      
৩. বাজার ঝুঁকি:                 ৪. তারল্য ঝুঁকি:                ৫. সুদের হারের ঝুঁকি                
. পরিচালন ঝুঁকি            ৭. তথ্য প্রযুক্তির ঝুঁকি        ৮. আইনগত ঝুঁকি                    
. পরিপালন ঝুঁকি            ১০. সুনামের ঝুঁকি এবং        ১১.  কৌশলগত ঝুঁকি
 
মার্চেন্ট ব্যাংকিং হল নিবন্ধন প্রাপ্ত বণিক ব্যাঙ্ক যারা তাদের গ্রাহকদের আর্থিক চাহিদা বিবেচনা করে, নির্ধারিত ফি এর বিনিময়ে একটি পেশাদার পরিষেবা প্রদান করে। মার্চেন্ট ব্যাঙ্ক হল এমন ব্যাঙ্ক যারা বড় কর্পোরেশনগুলিতে তহবিল সংগ্রহ, পুঁজিবাজারে নতুন ইস্যু আনা, পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা, আর্থিক পরামর্শ এবং ঋণ পরিষেবা পরিচালনা করে।মার্চেন্ট ব্যাংক কোম্পানি ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বিধিমালা ১৯৯৬ অনুযায়ী মার্চেন্ট ব্যাংক পরিচালিত হয়। এবং এ ধরনের প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হওয়ার পরিশোধিত মূলধন হতে হবে ১০ কোটি টাকা।
 
মার্চেন্ট ব্যাংকিং এর কাজ:
আমাদের দেশে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো প্রধানত চার ধরণের কাজ করে:
ইস্যু ব্যবস্থাপনা:
ইস্যু ব্যবস্থাপনার মধ্যে রয়েছে প্রসপেক্টাস প্রস্তুত করা, এসইসির সাথে আইপিও সংক্রান্ত যোগাযোগ, আইপিও আবেদন সংগ্রহ করা, লটারি বা অন্যান্য ব্যবস্থার মাধ্যমে আইপিও বরাদ্দ করা , প্লেসমেন্ট পরিচালনা, কোম্পানিকে DSE/CSE তে তালিকাভুক্ত করা এবং ফেরত বিতরণ।
অবলেখন: 
নতুন ইস্যু বা রাইট ইস্যুর ক্ষেত্রে, মার্চেন্ট ব্যাঙ্কগুলি  যে শেয়ারসমূহ নিবন্ধনের আওতাভুক্ত করার আশ্বাস দেয়, মার্চেন্ট ব্যাংক কমিশনের বিনিময়ে পূর্ব নির্ধারিত মূল্যে নিবন্ধনবিহীন শেয়ার ক্রয় করে।
 
পোর্টফলিও ব্যবস্থাপনা:

বাংলাদেশে মার্চেন্ট ব্যাংকের এটাই প্রধান পরিষেবা ক্ষেত্র।একটি পোর্টফোলিও সাধারণত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সমন্বয়। পোর্টফোলিও ম্যানেজার ম‌ক্কে‌লের শেয়ারের জিম্মাদার হিসাবে কাজ করে, তাদের তথ্য সরবরাহ করে এবং তাদের একটি পোর্টফোলিওকে ধ‌রে রাখ‌তে সাহায্য করে যা ঝুঁকি হ্রাস ক‌রে এবং সর্বোচ্চ রিটার্ন দেয়। মার্চেন্ট ব্যাংক ম‌ক্কে‌লদেরকে তাদের বিনিয়োগের বিপরীতে অর্থায়ন সুবিধা প্রদান করে, যা মার্জিন লোন নামে পরিচিত।

 এ ধরণের সেবার জন্য নিম্নোক্ত দুটি হিসাব খোলা হয়:

১) ব্যাংক ডিসক্রিশনারি হিসাব:  বিবেচনামূলক হিসাব হল একটি বিনিয়োগ হিসাব যা একজন অনুমোদিত ব্রোকারকে গাহকের সম্মতি ছাড়াই সিকিউরিটিজ ক্রয় এবং বিক্রি করতে অনুমতি দেয়। ব্যাংকের বিবেচনামূলক বিনিয়োগ হিসাব পোর্টফোলিও পরিচালকদের সরাসরি তত্ত্বাবধান এবং অপারেশনে পরিচালিত হয়। গ্রাহক শুধু পোর্টফলিও ম্যানেজারের সাথে লাভ-ক্ষতি ভাগাভাগি করে।

২)  বিনিয়োগকারীর ডিসক্রিশনারি হিসাব: বিনিয়োগকারীরা তার তহবিল/পোর্টফোলিও এবং নথিপত্র পরিচালনা করে । পোর্টফোলিও ম্যানেজাররা এই হিসাব পরিচালনা বা জড়িত থাকেন না

সংঘবদ্ধ অর্থায়ন: এই ধরণের অর্থায়নের সাথে বড় পরিসরের ঋণ জড়িত। যেখানে একদল ঋণদাতা তাদের সামর্থ ও রুচি অনুযায়ী বিভিন্ন অঙ্কের অর্থের যোগান দেয়। প্রথাগত অর্থায়নের মাধ্যমে নমাধান সম্ভব নয় যেখানে একটু জটিল প্রকৃতির অর্থায়ন হল সংঘবদ্ধ অরাথায়ন। মারচেন্ট ব্যাংক এখানে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে কাজ করে।

অফশোর ব্যাংকিং ও এর ক্ষেত্রসমূহ: 

যে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বিদেশি উৎস হতে বৈদেশিক মুদ্রায় তহবিল সৃষ্টি হয় এবং দেশীয় আইন-কানুনের বাইরে আলাদা আইন কানুনের মাধ্যমে এই তহবিল পরিচালিত হয় ও হিসাব সংরক্ষণ করা হয় তাকে অফ-শাের ব্যাংকিং বলে।

অর্থাৎ অফ-শোর ব্যাংকিং অনিবাসী বৈদেশিক মুদ্রার সম্পদ এবং দায়গুলির সাথে জড়িত আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ব্যবসায়কে বোঝায়। এটি এমন ব্যাংকিং ব্যবস্থাসমূহকে নির্দেশ করে যা শুধুমাত্র অনিবাসিদের, যেমন- মাল্টিন্যাশনাল পণ্য এবং সেবা এবং ফাইন্যান্সারদের সম্পৃক্ত করে এবং এটি দেশীয় ব্যাংকিংয়ের সাথে মিশ্রিত হয় না।

যে সকল ক্ষেত্রে OBU এর পরিচালনা/লেনদেন করা যেতে পারে:

(i) ইপিজেড, পিইপিজেড, ইজেড এবং হাই-টেক পার্কের উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান

(ii) ইপিজেড, পিইপিজেড, ইজেড এবং হাই-টেক পার্কে সম্পূর্ণ বিদেশী মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলি আমানত গ্রহণ করে, স্বল্পমেয়াদী ঋণ/অগ্রিম এবং বিনিয়োগ করা, বিল বাট্টা করা, নিষ্পত্তি করা, এলসি ইস্যু এবং গ্যারান্টি প্রদান। 

(iii) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক বিনিময় ও বিনিয়োগ বিভাগের পূর্বানুমতি নিয়ে সম্পূর্ণ বিদেশী মালিকানাধীন উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান 

(iv) বাংলাদেশে বসবাসকারী নয় এমন আইনগত ব্যক্তিরা ঋণ/অগ্রিমের পুরোটাই বিদেশের গ্রহণযোগ্য ক্রেডিট রেটিং লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যাঙ্কের কাছ থেকে গ্যারান্টি/লেটার অফ ক্রেডিট দ্বারা নিশ্চয়তা প্রদানকৃত।

(v) বাংলাদেশে বসবাসকারী নন, বিদেশে কর্মরত এমন বাংলাদেশী নাগরিক (NRBs) আমানত গ্রহণ 

(vi) বাংলাদেশে বসবাসকারী ব্যক্তির বাংলাদেশে খোলা আমদানি এলসিগুলির বিপরীতে অনুমোদিত ডিলার-এর গৃহীত বিলসমূহ ছাড়ের মাধ্যমে যথাযথ সতর্কতা প্রয়োগ করে ব্যবস্থা করন বিদেশী সরবরাহকারীদের মূল্য পরিশোধ।

অফশোর ব্যাংকিং এর নীতি:

১) অফশোর বা OBU হবে বাংলাদেশের বা বৈদেশিক কোন ব্যাংকের একটি অংশ কিন্তু এ অফশাের ব্যাংক ব্যবসায়ের জন্য আলাদা একটি হিসাব রক্ষা করতে হবে। 

২) যে সকল বিষয়ে ছাড় দেওয়া হয় সেগুলাে ব্যতীত এর পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের আইন প্রযােজ্য হবে।

৩) যারা OBU পরিচালনা করতে আগ্রহী হবে তাদেরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে।

৪) OBU স্বাধীনভাবে বৈদেশিক আমানত এবং ঋণগ্রহণ করতে পারবে। অনুরূপভাবে EPZ এলাকার শিল্পসমূহে ঋণ/বিনিয়ােগ করতে পারবে।

৫) OBU কতকগুলাে নির্দিষ্ট বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবসায় করতে পারবে। যেমন- ডলার, পাউণ্ড স্টালিং, কানাডীয় ডলার, ডয়েচ মার্ক, জাপানী ইয়েন, সুইস ফ্রাংক, নেদারল্যাণ্ড গীল্ডার, ফ্রান্স ফ্রাঙ্ক, সুইডিশ ক্রোনা, সিঙ্গাপুরী ডলার।

৬) OBU-এর ভৌগােলিক অবস্থান সম্পর্কে কোন বিধি-নিষেধ থাকবে না। এটি EPZ বা অন্য যে কোন স্থানে হতে পারে।

৭) EPZ এলাকার বাইরে বাংলাদেশী নাগরিকেরা ব্যাংকিং লেনদেন করতে পারবে না তবে অস্থানীয়দের বেলায় কোন বাধা নেই।

৮) বৈদেশিক করেসপনডেন্টদের নিকট যেমনভাবে দেশীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব পরিচালনা করতে পারে তেমনি OBU-এর নিকটও তারা বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব পরিচালনা করতে পারে।

রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে একমাত্র অগ্রণী ব্যাংক অফশোর ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে যুক্ত।

 

মোবাইল ফিনানসিয়াল সার্ভিস:

মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (MFS) হল এমন একটি পদ্ধতি বা উপায় যার মাধ্যমে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যাঙ্কিং এবং তারবিহীন মোবাইল নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে জনগণকে পরিষেবা প্রদান করে যা ব্যবহারকারীদের ব্যাঙ্কিং ও অন্যান্য আর্থিক লেনদেন করতে সক্ষম করে। ব্যবহারকারী বা গ্রাহক  আনস্ট্রাকচার্ড সাপ্লিমেন্টারি সার্ভিস ডেটা বা USSD মেনু, এসএমএস বা স্মার্টফোনে নির্দিষ্ট অ্যাপ দ্বারা তাদের হিসাব পরিচালনা করতে পারে। 

ব্যাংক দ্বারা অনুমোদিত এজেন্টরা সাধারণত মোবাইল আর্থিক পরিষেবা লালন করে, হিসাবের অনুমোদন দেয় ব্যবহারকারীদের ব্যাঙ্ক অবস্থানের বাইরে আলাদা এজেন্টদের আউটলেটে লেনদেন করতে হয়। মোবাইল ফিনানসিয়াল সার্ভিস এর  সাথে মোবাইল ব্যাংকিং এবং মোবাইল মানি অন্তর্ভুক্ত।

মোবাইল ব্যাঙ্কিং হল এক ধরনের ইলেকট্রনিক ব্যাঙ্কিং, বা ই-ব্যাঙ্কিং যার মধ্যে রয়েছে বিস্তৃত ইলেকট্রনিক ব্যাঙ্কিং এর সমণ্বয় যেমন: ইন্টারনেট, পিওএস টার্মিনাল এবং এটিএমের মতো চ্যানেল

মোবাইল মানি একটি মোবাইল-ভিত্তিক লেনদেন পরিষেবা যা মোবাইল নেটওয়ার্ক  ব্যবহার করে ইলেকট্রনিকভাবে স্থানান্তর করা যেতে পারে।

মোবাইল ফিনানন্সিয়াল সার্ভিস সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা:

 মোবাইল ফিনানন্সিয়াল সার্ভিস গ্রাহকের একটি মোবাইল নং এর বিপরীতে একটি হিসাব সরবরাহ করে ই মানি সার্ভিস দেবে। যেখানে তহবিলের সকল হিসাব ইলেকট্রনিক্স খতিয়ানের মাধ্যমে সংরক্ষিত থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২২ সালের পিএসডি সার্কুলার অনুযায়ী মোবাইল ফিনানন্সিয়াল সার্ভিস এর নীতিমালা সমূহ:

পরিচালিত হিসাব: নিষ্পত্তি সংক্রান্ত উদ্দেশ্য ব্যতীত পরিচালনার জন্য এমএফএস কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণকৃত হিসাব সমূহ বাংলাদেশের কোন তফসিলি ব্যাংক সরবরাহ করবে। 

তদারকি: ন্যাশনাল পেমেন্ট সিস্টেমের অংশ হিসেবে এমএফএসকে নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি করার জন্য  বাংলাদেশ ব্যাংক সকল বিধিমালা প্রণয়ন করবে।

পেমেন্ট সার্ভিস প্রভাইডার: পেমেন্ট সার্ভিস প্রভাইডার বলতে বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃক লাইসেন্স প্রদানকৃত কোন প্রতিষ্ঠান যে গ্রাহককে ইলেকট্রনিক মুদ্রা সেবা  সরবরাহ করবে এবং  এর উদ্বৃত্ত অর্থ কোন তফসিলি ব্যাংকের সাথে আস্থা ও নিষ্পত্তি হিসাবে রাখবে।

প্রধান ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান/ সরকারি সত্ত্বা: যে কোন একটি প্রধান ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান/ সরকারি সংস্থার কমপক্ষে ৫১% শেয়ার থাকবে এবং সেইসাথে এমএফএস সরবরাহকারী সাবসিডিয়ারী কোম্পানীর পরিচালনা পর্ষদে ভোট প্রদান করার অধিকার থাকতে হবে।

এমএফএস এর প্রডাক্টসমূহ: 

১. কোন এজেন্ট শপ, এটিএম, কার্ড, সংযুক্ত ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট করা যাবে।

২. কোন ব্যক্তি হইতে ব্যবসায়িক মূল্য বা পাওনা যেমন- ইউটিলিটি বিল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফিস, মোবাইল রিচার্জ, ব্যাংক বা নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের  সঞ্চয়ী ও স্কিম হিসাবে জমাদান, ব্যাংক বা নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা এনজিওর লোন পরিশোধ, বীমার প্রিমিয়াম পরিশোধ ইত্যাদি।

৩. ব্যবসায়ী হইতে ব্যক্তিকে পরিশোধ যেমন- বেতন প্রদান, শেয়ার ও ডিবেঞ্চারের লভ্যাংশ প্রদান ইত্যাদি

৪. ব্যাক্তি হইতে ব্যক্তিকে পরিশোধ যেমন- এক এমএফএস হিসাব হইতে অন্য এমএফএস হিসাবে, কিংবা এক এমএফএস হিসাব হইতে অন্য ব্যাংক হিসাবে

৫.ব্যবসায়ী হইতে ব্যবসায়ীকে পরিশোধ: যেমন- ভেন্ডর, সাপ্লাই চেইনের মূল্য পরিশোধ

 ৬. সরকার হইতে ব্যক্তিকে পরিশোধ

৭. ব্যক্তি হইতে সরকারকে পরিশোধ

৮. আন্তঃ বৈদেশিক রেমিটেন্স পরিশোধ

এমএফএস সেবাদানকারীর অনুমোদন:  

* কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান এমএফএস সেবা দিতে চাইলে তরে একটি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান খুলতে হবে

* যে কোন একটি প্রধান ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান/ সরকারি সংস্থার কমপক্ষে ৫১% শেয়ার থাকবে এবং সেইসাথে এমএফএস সরবরাহকারী সাবসিডিয়ারী কোম্পানীর পরিচালনা পর্ষদে ভোট প্রদান করার অধিকার থাকতে হবে।

* প্রধান ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান/ সরকারি সংস্থা তার সাবসিডয়ারি কোম্পানিটি পরিচালনা করবে।

* একটি প্রধান ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান/ সরকারি সংস্থা একটি এমএফএস প্রতিষ্ঠানের মালিক হতে পারবে।

এজেন্ট ব্যাংকিং ?

ব্যাংকের এজেন্ট হল একজন খুচরা বিক্রেতা বা ডাক আউটলেট যা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সীমিত পরিসরে অনগ্রসর এলাকায় ব্যাংক সেবাগ্রহীতার লেনদেন সম্পাদন  করে।ব্যংকের শাখার পরিবর্তে আউটলেটের মালিক অথবা কর্মচারী লেনদেন নির্বাহ করে যা সেবাগ্রহীতা কে টাকা জমা করা, টাকা উত্তোলন, ফান্ড ট্রান্সফার, বিল পরিশোধ, হিসেব জানতে চাওয়া অথবা সরকারী সুবিধা গ্রহণ করা ইত্যাদি সুবিধা দিয়ে থাকে। ব্যাংকের এজেন্ট হিসেবে থাকতে পারে ফার্মেসী, সুপারমার্কেট, লটারী আউটলেট, ডাকঘর ইত্যাদি।

বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান হারে এইসব খুচরা বিক্রেতা ডাকঘরগুলো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ বণ্টন মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারিত হয়ে আসছে। উন্নত দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এজেন্ট ব্যাংকিং

ব্যাংকের এজেন্টরা সাধারণত পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) কার্ড রিডার, মোবাইল ফোন, বারকোড স্ক্যানার, পিন প্যাড ইত্যাদির সাহায্যে কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকে। মাঝে মাঝে ব্যক্তিগত কম্পিউটার ব্যবহার করে যা পার্সোনাল ডায়াল আপ বা অন্য ডাটা কানেকশন ব্যবহার করে কম্পিউটারের সার্ভারের সাথে সংযুক্ত থাকে। সেবাগ্রহীতারা যথাক্রমে তার ব্যাংক হিসাব অথবা -ওয়ালেটে প্রবেশ করার জন্য ম্যাগনেটিক ব্যাংক কার্ড বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে এজেন্টের সাথে লেনদেন পরিচালনা করে  সেবাগ্রহীতা সাধারণত পিন নাম্বার দিয়ে শনাক্ত হয়ে থাকে তবে বায়োমেট্রিকের মাধ্যমেও এটা করা যায়। লেনদেন যাচাইকরণ, অনুমোদন অন্যান্য ফয়সালার ক্ষেত্রে এজেন্ট ব্যাংকিং অন্য যে কোন দূরবর্তী ব্যাংক চ্যানেলের মতই কাজ করে।

পৃথিবীতে এজন্ট ব্যাংকিং এ ব্রাজিলকে পথিকৃত মনে করা হয়। কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুচরা আউটলেটের মাধ্যমে কাজ করতে পারবে কিনা তা স্থানীয় নিয়ন্ত্রণ সংস্থা নির্ধারণ করে দেয়।

এজেন্ট ব্যাংক যে সকল সেবা দিতে পারবে এবং দিতে পারবে না :

সেবাসমূহ: ১. ছোট অঙ্কের নগদ জমা ও উত্তোলন, তহবিল স্থানান্তর বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃক সীমা নির্ধারন করা থাকবে

        ২.  আন্তঃ বৈদেশিক রেমিটেন্স পরিশোধ

        ৩. ছোট অঙ্কের ঋণ সুবিধা মঞ্জরী ও ঋণের কিস্তি আদায়

        ৪.   ইউটিলিটি বিল গ্রহণ সুবিধা         ৫. সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ভাতা পরিশোধ    

  ৬. ব্যালেন্স অনুসন্ধান

    ৭. গ্রাহকের কাছ থেকে হিসাব খোলার  আবেদন, ডেবিট/ক্রেডিট ফরম, ঋণের কাগজপত্র সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণ

        ৮. ঋণ মঞ্জুরীর পরবর্তীতে ঋণের তদারকি ও দেখভাল করা        ৯. ক্লিয়ারিং এর চেক সংগ্রহ করা

        ১০. ইন্সুরেন্স এর প্রিমিয়াম আদায়

অনুমোদন বহির্ভূত সেবা: ১. গ্রাহকের কোন হিসাবের চুড়ান্ত অনুমোদন দিতে পারবে না, এবং গ্রাহকের  অনুকূলে কোন চেক বা কার্ড ইস্যু করতে পারবে না।

        ২. কোন চেকের পেমেন্ট দিতে পারবে না

        ৩. ফরেণ এক্সচেঞ্জ সংক্রান্ত লেনদেন করতে পারবে না।

        ৪. গ্রাহকের কোন ঋণ প্রস্তাব নিয়ে কাজ করতে পারবে না। 

  এজেন্ট ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে এজেন্ট নির্বাচনে বিবেচ্য বিষয়সমূহ: 

 এজেন্ট ব্যাংকিং খুলতে চাওয়া ব্যাংককে এজেন্ট ব্যাংকিং সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরী করতে হবে। এই নীতিমালায় এজন্ট নির্বাচন, ব্যবস্থাপনা, তদারকি,  পরিচালনা, পরিপালন সম্পর্কে দিক নির্দেশনা থাকবে। গ্রাহক সুরক্ষা ও সচেতনতা সম্পর্কে নির্দেশনা, এজেন্টকে সিস্টেম ও তথ্য প্রযুক্তি সহায়তা দেওয়ার জন্য অবকাঠামো সুবিধা দান।

এজন্ট নির্বাচনের মানদন্ড:

১. প্রস্তাবিত কাজে সহায়তা ও বাস্তবায়নে এজেন্ট এর সক্ষমতা আছে কিনা:

২. আর্থিক সামর্থ্য ও ক্যাশ পরিচালনার সক্ষমতা:

৩. প্রতিকূল অবস্থায় পরিস্থিতি সামলানোর সামর্থ্য  ৪. ব্যবসায়িক সুনাম:

৫. প্রযুক্তি নির্ভর আর্থিক সেবা দানের সামর্থ : ৬. কোন ঋণ খেলাপী ও অপরাধী ব্যক্তি এজেন্ট হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবে না।

৭. আভ্যন্তরিণ নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা, নিরীক্ষা প্রতিবেদন ও পরিদর্শনে সামর্থ :

৮) নতুন ব্যবসায়ের বিনিয়োগের সামর্থ্য     ৯) দক্ষ ও শিক্ষিত জনবল বা কর্মী  

১০) সমাজ বা গোষ্ঠীর আস্থা ১১) ব্যাংক বা এটিএম এর কাছাকাছি  কৌশলগত অবস্থান ১২) সামাজিক প্রভাব ও গ্রহণযোগ্যতা  

অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে জীবনকে আরও সহজ ও আরামদায়ক করতে গ্রাহকদের এই উদ্ভাবনী সেবা দিচ্ছে। 

ব্যাংকার ও গ্রাহক সম্পর্ক:

১) দেনাদার ও পাওনাদার সম্পর্ক : ২) জিম্মাদার হিসেবে ব্যাংকার: ৩) প্রতিনিধি হিসেবে ব্যাংকার

৪) অন্যান্য বিশেষ সম্পর্ক: 

    ১. চেক মর্যাদা করার বাধ্যবাধকতা: ২. গ্রাহকদের হিসাবের গোপনীয়তা রাখা  ৩. গ্রাহকদের সাথে গভীর সম্পর্ক রাখা  ৪. সঠিক সময়ে সঠিক সেবার প্রবর্তন:   ৫. অপ্রয়োজনীয় দ্বন্দ এড়ানো:   ৬. গ্রাহকের সাথে ব্যক্তিক সম্পর্ক গড়া:  ৭. গ্রাহকের অভিজ্ঞতা বৃদ্দিকরন:    ৮.  গাহকের আস্থা তৈরী  

অভিযোগ ব্যবস্থাপনা:

অভিযোগ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের দিক নির্দেশনাসমূহ:

অভিযোগ দাখিল:

১. একজন গ্রাহক যে কোন উপায়ে যেমন- চিঠি, টেলিফোন, ফ্যাক্স, ইমেইল মারফত অথবা সরাসরি অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন।

২. ব্যাংকের ওয়েব পোর্টালে ইলেকট্রনিক অভিযোগ দাখিলের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৩.  কোন গ্রাহক একটি ব্যাংকের যে কোন শাখায় অভিযোগ দাখিল করতে পারবে।

৪. ব্যাংক কোন গ্রাহক বা তার প্রতিনিধি কতৃক দাখিলকৃত অভিযোগ গ্রহণ করতে হবে।

৫. অভিযোগ দাখিলের জন্য ব্যাংকের অভিযোগ ব্যবস্থা বা নিজস্ব ফরমেট সরবরাহ ব্যবস্থা থাকতে হবে।

অভিযোগ নথিভুক্তকরণ: কোন ব্যাংক বা আর্থিক সংস্থা অবিযোগের তারিখ, নাম ও পদবি, যোগাযোগ, অভিযোগের বিবরণ, নিষ্পত্তির তারিখসহ একটি অভিযোগ রেজিস্টার রাখতে হবে।

অভিযোগকে অগ্রাধিকার প্রদান:
অভিযোগ নিষ্পত্তিকরণ প্রক্রিয়া:
অভিযোগ নিষ্পত্তি করার ন্যুনতম ধাপসমূহ:

১. প্রাপ্তি স্বীকার ২. অভিযোগ যাচাই ৩. নিষ্পত্তি করার জন্য বিভাগীয় পদক্ষেপ ৪. আপিল ও পর্যালোচনা এবং ৫. সাড়া প্রদান ও সমাপ্তকরণ।

গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের সাথে সুসম্পর্ক এবং ব্যবসার সামাজিক দায়বদ্ধতা:

গোষ্ঠী বলতে একটি বৃহৎ সমাজে সমবৈশিষ্ট্য বা স্বার্থ সম্পন্ন  একত্রে বসবাসরত এক দল মানুষকে বুঝায়। এক দল মানুষের দুই বা ততোধিক বিষয় বা যে কোন কিছুর মধ্যে সামঞ্জস্য থাকতে পারে যা তারা পারস্পরিক মত বিনিময় করে থাকে। যেমন: পেশাগত সম্প্রদায়, ধর্মীয় সম্প্রদায়, সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী ইত্যাদি।

সম্পর্ক তখনই গড়ে ওঠে যখন এক ধরণের যোগাযোগ বা আন্তঃযোগাযোগ গড়ে ওঠে। যখন গোষ্ঠীর মধ্যে সাদৃশ্য তৈরী হওয়ার মধ্য দিয়েই গোষ্ঠীগত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গোষ্ঠীগত সম্পর্কর মাধ্যমে একটি সংগঠনের সক্রিয় স্বার্থ জড়িত থাকে। উদাহরণস্বরূপ,  একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোন আঞ্চলিক ব্যবসার শুভ উদ্বোধনে অংশগ্রহণ করল বা স্পন্সরশিপ বা প্রমোশনাল অংশীদারিত্বর মাধ্যমে সেখানে কোন ইভেন্ট আয়োজন করল। ফলে প্রতিষ্ঠান এবং এর ব্র্যান্ডকে ইতিবাচক উপস্থিতি তুলে ধরার মাধ্যমে স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্ক তৈরি হয়।

ব্যবসায়ের সামাজিক দায়বদ্ধতা  (CSR):

ব্যবসায়ের সামাজিক দায়বদ্ধতা বলতে মুনাফা অর্জনের সাথে সমাজের কিছু মঙ্গলময় বা কল্যাণমূলক কাজ করাকে বুঝায়। সামাজিক দায়বদ্ধতা হল একধরনের ব্যবসায়িক শিষ্ঠাচার বা নীতি যা সমাজের প্রতি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালনকে ব্যবসার নিয়মের মধ্য অন্তর্ভুক্ত করে। একটি ব্যবসা নৈতিক ও আইনগত ভাবে পরিচালিত হলেই এর সমস্ত দায়মুক্তি হয়েছে তা বলা যায় না। যে পরিবেশে বা যে সমাজে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে সেই সমাজের প্রতি প্রতিষ্ঠানের কিছু দায়বদ্ধতা জন্মায়। কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা হচ্ছে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও ব্যাসায়িক মডেলের সংমিশ্রণ। কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা বলতে বুঝায় যে যেসব কার্যক্রম সমাজ, মানুষ, পরিবেশকে প্রভাবিত করে, একটি প্রতিষ্ঠান তার সেসব কর্মের জন্য সমাজের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।

সমাজ বা গোষ্ঠীর উন্নয়নে কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার ভুমিকা (Roles of CSR in Community Dev.): 

১. শিল্পায়নের নেতিবাচক প্রভাবকে তুলে ধরা: ব্যবসায়িক কর্মকান্ডে নৈতিকতার প্রয়োজনে পণ্যের বাজারে অধিকতর সচেতনতার সাথে এটি জড়িত। যেমন- যুক্তরাজ্যে যে গাড়ি যত বেশি কার্বন নির্গমন করে তার রোড ট্যাক্স তত বেশি। এর ফলে ক্ষুদ্র যানবাহনের মালিকদের কর বোঝা লাঘব হয়

২. কোম্পানি এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক: গোষ্ঠির শিক্ষা, স্বাস্থ সুবিধা, সাংস্কৃতিক কর্মসুচির মাধ্যমে সামাজিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এক অনুভূতি  তৈরী করে যে কোম্পানি কোন পণ্য ও সেবার উৎপাদক ...

৩. প্রতিভাবান গড়তে সাহায্য করা :

 ৪.  প্রযুক্তি হস্তান্তরে ভূমিকা : বহুজাতিক কোম্পানির মধ্যে প্রযুক্তির হস্তান্তর আয়োজক দেশগুলিতে ....

৫. সিএসআর পরিবেশ রক্ষায় সাহায্য করে : “সবুজের পথে”, “আমরা পৃথিবীকে সবুজ করি” প্রভৃতি স্লোগান, গ্রিন পিস সঙ্গঠন ....

৬. টেকসই মানবাধিকার রক্ষায় CSR :

৭. কোম্পানি এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা তৈরী:

৮. সিএসআর কর্মসূচি দারিদ্র্য দূরীকরণে সহায়তা করে: কর্মসংস্থানের সুযোগ ও উপার্জনক্ষম কাজ

৯. CSR কর্মসূচি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য তথ্য সংগ্রহে সাহায্য করে: যেমন- মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো অপরাধ দমন ও শনাক্ত করতে কল লিস্ট সহ রেকর্ডিং বিবরণি, আইটি কেম্পানি নিরাপত্তার জন্য কিভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হয় তা শিখিয়ে

১০. কর্পোরেট টেকসই লক্ষ্য অর্জন:

 সুত্র: https://www.sosyalarastirmalar.com/articles/corporate-social-responsibility-and-its-role-in-community-development-an-international-perspective.pdf

  স্বচ্ছতা ও প্রকাশ নীতি:

ডিসক্লোজার বা বিবৃতি হল ঘটনা বা তথ্য জনগণের কাছে জানানোর প্রক্রিয়া। কোন সংগঠন কর্তৃক যথাযথ প্রকাশ হল তার গ্রাহকদের, বিনিয়োগকারীদের এবং কোম্পানির ব্যবসার সাথে জড়িত যে কোনও ব্যক্তিকে প্রাসঙ্গিক তথ্য সম্পর্কে সচেতন করে তোলার কাজ। ব্যাঙ্কিং শিল্পে, প্রকাশ হল কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান দ্বারা প্রদত্ত একটি বিবৃতি - যা একজন ভোক্তা বা বাণিজ্যিক হিসাবধারীর কাছে সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্যের রূপরেখা দেয়। একটি নতুন হিসাব বা ঋণ শুরু করার সময় সাধারণত হিসাবধারীর ডিসক্লোজার দেওয়া হয়।

কর্পোরেট জগতের ক্ষেত্রে
তথ্যের প্রকাশ জনগণের আস্থার কেন্দ্রবিন্দু । 

ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল সেটেলমেন্ট বা (BIS) কতৃক ঘোষিত প্রকাশ নীতিমালা:   

১. প্রকাশ হতে হবে স্পষ্ট  ২. বোধগম্য ৩. ব্যবহারকারীর কাছে অর্থবহ হতে হবে ৪. সময়ের সাথে ধারাবাহিক হতে হবে

৫. ব্যাংকের মধ্যে তুলনাযোগ্য হতে হবে।

স্বচ্ছতা ও প্রকাশ নীতির গুরুত্ব: 

১.  স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা:     ২. আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা:  ৩. অভ্যন্তরীণ লেনদেন ও গবাক্ষ সজ্জা পরিহার:      ৪. আমানতকারী জেনে বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা  ৫. বাজারে অনিশ্চয়তা দূর করা        ৬. শেয়ারের মূল্য  বৃদ্ধি পায়  ৭. আইনগত ঝামেলা কমায়    ৮. ভুল ত্রুটি সংশোধন সহজ হয়:

ভবিষ্যতের সন্ধানকারী সংস্থা:  

ভবিষ্যতের সন্ধানকারী সংস্থা বলতে সেই কোম্পানিকে বুঝায় যে কোনো পরিস্থিতিতে বিকশিত এবং উন্নতি করতে পারে এবং বাজার ও ভোক্তাদের চাহিদার পূর্বাভাস বুঝে প্রমিতকরণ, তৎপরতা, নমনীয়তা, এবং উদ্দেশ্য সাধনের উপায়ের উপর ভিত্তি করে আপদকালীন সময়ে সমাধানে উপনীত হয়। সকল শিল্পের গ্রাহক, বিশেষ করে ব্যাংকিংয়ে সেক্টরের কোম্পানিগুলি এমন একটি ডিজিটাল পদ্ধতি গ্রহণ করতে চায় যা ব্যবসায় তথা জীবনে বিপ্লব ঘটিয়েছে ।

ভবিষ্যতমুখী সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ  বৈশিষ্ট্য: 

১) প্রতিযোগী কোম্পানির সাথে অংশীদারিত্ব :  ২)  নিঃশেষিত হওয়ার পূর্বে দ্রুত সুযোগের অনুসন্ধান

৩) সমস্ত প্রক্রিয়ার ডিজিটালাইজেশন       ৪) এগিয়ে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্তের স্পষ্টতা

৫) অধিকতর দিক নির্দেশনা       ৬) ভোক্তাদের অভিজ্ঞতাকে অগ্রাধিকার প্রদান 

৭) বিভিন্ন প্রজন্মের ডিজিটাল কর্মীদল তৈরী         ৮) সনাতনী পদ্ধতি পুনঃবিবেচনা 

৯) প্রযুক্তির হালনাগাদ করন      ১০)  চাহিদা সম্পর্কে পূর্বানুমাণ

১১) বহুমুখী ও নমনীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা     ১২)  কার্যভিত্তিক ফলাফলের চাইতে মূল্যকে প্রাধান্য দেয়া

বাজার দখল:  

বাজার দখল বলতে অন্যান্য প্রতিযোগীদের সাথে সম্পর্কিত একটি ব্র্যান্ড বা পণ্য সম্পর্কে ভোক্তাদের ধারণাকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা বোঝায়। বাজার পজিশনিং এর উদ্দেশ্য হল একটি ব্র্যান্ড বা পণ্যের চিত্র বা পরিচয় প্রতিষ্ঠা করা যাতে ভোক্তারা এটি নিশ্চিতভাবে উপলব্ধি করতে পারে।

কার্যকর বাজার অবস্থান বা জায়গা করে নেয়ার কৌশল:

১) প্রতিযোগীর তুলনায় কোম্পানির স্বকীয়তা বজায় রাখা:   ২) বাজারে নিজের বর্তমান অবস্থান চিহ্নিত করা:

৩) প্রতিযোগীদের অবস্থান বিশ্লেষণ:   ৪) বাজারে জায়গা নেয়ার কৌশল উন্নয়ন:

৫) প্রতিযোগীদের বিপরীতে নিজ কোম্পানির পরিচিতি যাচাই :  ৬) বাজার জরিপ বা নকশা 

৭) বাজার পজিশনিং পরীক্ষা পরিচালনা করন: পজিশনিং তার লক্ষ্য পূরণ করে কিনা তা দেখতে পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়ার জন্য সময় ব্যয় করা উচিত

ডিজিটাল এজেন্ডা: 

ডিজিটাল এজেন্ডা দ্বারা আমরা সে সকল আবশ্যকীয় এবং পরিকল্পিত উপায়কে বুঝি যা একটি নির্দিষ্ট ব্যবস্থার ডিজিটাল রূপান্তর করার জন্য প্রয়োজন। সাধারণত, সরকারের ঘোষিত রাজনৈতিক প্রতিশ্রতির ক্ষেত্রে অথবা কোন প্রতিষ্ঠানের কার্যনির্বাহী সংস্থার সিদ্ধান্তে কোন সংগঠনের ডিজিটাল পরিবর্তনকে রূপ দিতে এটি ব্যবহার করা হয়। উপরন্তু, ডিজিটালাইজেশন এবং ডিজিটাল রূপান্তরের সাফল্য অর্জনের জন্য তাদের প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে পৃথক কোম্পানি এবং সংস্থা কর্তৃক গৃহীত সকল ব্যবস্থাকে "ডিজিটাল এজেন্ডা" হিসাবে ধরা হয়।

ডিজিটাল এজেন্ডার উপাদান: 

১) গ্রাহক সম্পর্ক:   ২) বহুমুখী চ্যানেল   ৪) প্রক্রিয়াকরণ   ৫) বিপণন     ৬) বাণিজ্যিকিকরণ এবং     ৭) প্রযুক্তি:

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল এজেন্ডার বাস্তবায়নের উদ্দেশ্য/গুরুত্ব:

১. দক্ষতা বৃদ্ধি :                            ২. ঝুঁকি হ্রাস              
৩. তথ্য নির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণ                 ৪. গ্রাহক বৃদ্ধি    
৫. ব্যয় হ্রাস                  ৬. কর্মীদের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি:     
৭. উন্নত সেবা                . তথ্যের নিরাপত্তা  নিশ্চিতকরন
৯. প্রতিযোগীতায় এগিয়ে থাকা             ১০. কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তা:         
 ১১. লেনদেন সহজ ও দ্রুতকরণ            ১২. টেকসই পরিবেশ বান্ধব ব্যাংকিং :       
 ১৩. উন্নত গ্রাহক সম্পর্ক গড়তে সহায়তা:     ১৪. ব্যবসায়িক মডেল তৈরী

সুত্র: https://technostacks.com/blog/advantages-of-digitization-in-banking

কর্মীদের উচ্চতর দক্ষতা সম্পন্নকরণ (Up-scaling):

 আপস্কিলিং হল বর্তমান কর্মীদের নতুন দক্ষতা শেখানোর প্রক্রিয়া। আপস্কিলিং বলতে কর্মক্ষেত্রের প্রবণতা বুঝায় যা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ও উন্নয়নের সুযোগ প্রদানের মাধ্যমে ক্রমাগত শেখার সুবিধা দেয় যাতে একজন কর্মচারীর সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং দক্ষতার ঘাটতি কমায়। আপস্কিলিং সাধারণত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে, বর্তমান কর্মীদের দক্ষতার পরিধি উন্নত করার উপর গুরুত্বারোপ করে,  যাতে তারা তাদের কাজে উন্নতি করতে পারে এবং কোম্পানির মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুযোগ খুঁজে পেতে পারে। 

এটি সাধারণত নতুন প্রযুক্তি বা কৌশল শেখার সাথে জড়িত যা একজনের বর্তমান বা পছন্দসই কাজের লাইনের সাথে প্রাসঙ্গিক। যেহেতু প্রযুক্তি কর্মক্ষেত্রে নতুন সুযোগ এবং চাকরির অবস্থান তৈরি করে, প্রাসঙ্গিক ও বিশেষ দক্ষতার অধিকারী প্রার্থীদের দিয়ে এই নতুন ক্ষেত্রগুলি পূরণ করা কোম্পানিসমূহের জন্য ক্রমবর্ধমান ও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

কর্মীদের উচ্চতর দক্ষতা সম্পন্নকরনের সুবিধা/গুরুত্ব:

কর্মীদের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি:           
গ্রাহক সন্তুষ্টি বৃদ্ধি:         

নিচের সারি বজায় রাখা: পূর্বের একজন প্রতিষ্ঠিত কর্মীর চলে যাওয়া মানে শূধু মেধা তৈরীর জন্য বিনিয়োগের অপচয় নয় সেই সাথে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতারও বিদায় হওয়া।

GFI এর প্রথম অংশ পড়তে
সম্ভাব্য দুর্যোগের জন্য প্রস্তুত থাকা: 
অর্থ শাস্রয়: 
শেখার সংস্কৃতি গড়ে তোলা:
নতুন প্রতিভাকে আকৃষ্ট করা:
প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা তৈরি করা: 
কর্মচারীদের উৎপাদনশীলতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি:
কর্মীদের অনুপ্রেরণা এবং কাজের সন্তুষ্টি বৃদ্ধি:
 



 

 
 বিঃ দ্রঃ     সংক্ষিপ্ত প্রস্তুতির জন্য এখানে শুধু মূল বিষয়বস্তু তুরে ধরা হয়েছে, বিশদ আলোচনার জন্য নিজে করতে হবে।

1 comment:

to drop Your valuable Comment please mention your name (Click to arrow sign and select name/url)