Right Click n Copy Disabled

Ads block

Banner 728x90px

Governance in Financial Institute-next part


                                     আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুশাসন

                                                  (সংক্ষিপ্ত প্রস্তুতি- ২য় অংশ)  

 

এক নজরে এই অংশের বিষয়বস্তু :

প্রাতিষ্ঠানিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও এর উপাদান:
প্রাতিষ্ঠানিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা প্রতিরক্ষার তিনটি সারির ভূমিকাসমূহ (Three Lines of Defense Roles):
প্রাতিষ্ঠানিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় শর্তসমূহ
উদ্ভুত ঝুঁকি ও এর বৈশিষ্ট্য:
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতার কারণ/দুর্বল দিক:
বস্তুগত ঝুঁকি ও বস্তুগত ঝুঁকিসমূহ হ্রাস করার উপায়:
মার্চেন্ট ব্যাংকিং ও এর কাজ:
আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সাবসিডিয়ারি গঠনের মূল উদ্দেশ্যসমূহ:
পুঁজিবাজারে একটি ব্যাংকের সর্বোচ্চ বিনিয়োগ সীমা:
অফশোর ব্যাংকিং ও এর ক্ষেত্র সমূহ
অফশোর ব্যাংকিং এর নীতি:
ইসলামিক উইন্ডো ও এর বৈশিষ্ট্য:
মোবাইল ফিনানসিয়াল সার্ভিস ও এর নীতিমালা:
অর্থনীতিতে মোবাইল ফিনানসিয়াল সার্ভিস এর অবদান
এজেন্ট ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং এর অনুমোদিত ও অননুমোদিত সেবাসমূহ:
এজেন্ট ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে এজেন্ট নির্বাচনে বিবেচ্য বিষয়সমূহ:
ব্যাংকার ও গ্রাহক সম্পর্ক:
অভিযোগ ব্যবস্থাপনা ও এর দিক নির্দেশনাসমূহ:
আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গ্রাহকদের অভিযোগ গ্রহণের প্রাথমিক নিয়ম:
গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের সাথে সুসম্পর্ক এবং ব্যবসার সামাজিক দায়বদ্ধতা:
প্রতিষ্ঠানের শেয়ারহোল্ডারদের সাথে যোগাযোগের নীতিমালা
প্রতিষ্ঠানে প্রতিযোগীদের সাথে সম্পর্কর গুরুত্ব
সমাজ বা গোষ্ঠীর উন্নয়নে কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার ভুমিকা (Roles of CSR in Community Dev.):
স্বচ্ছতা ও প্রকাশ নীতি এবং এর গুরুত্ব:
কর্পোরেট এবং আর্থিক জগতে তথ্য সম্পূর্ণ প্রকাশের অসুবিধা
ভবিষ্যতের সন্ধানকারী সংস্থা এবং ভবিষ্যতমুখী সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ  বৈশিষ্ট্য:
বাজার দখল এবং কার্যকর বাজার অবস্থান বা জায়গা করে নেয়ার কৌশল:
ডিজিটাল এজেন্ডা, এর উপাদান ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল এজেন্ডা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্য/গুরুত্ব:
কর্মীদের উচ্চতর দক্ষতা সম্পন্নকরণ (Up-scaling employees) ও এর গুরুত্ব বা সুবিধা:  

 

প্রাতিষ্ঠানিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কাঠামো (Enterprise Risk Management Framework -ERMF):

প্রাতিষ্ঠানিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা (ERM) হল একটি পদ্ধতি যার মাধ্য‌মে কৌশলগতভাবে পুরো সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টিকোণ থেকে  ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে দেখা হয়। এটি সংগঠ‌নের উচ্চ স্ত‌রের সু‌চি‌ন্তিত কৌশল যার লক্ষ্য হল, একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা ও উদ্দেশ্যসমূহে হস্তক্ষেপ করতে পারে অথবা ক্ষতির দিকে নিয়ে যেতে পারে,  এমন সম্ভাব্য ক্ষতি, বাধা- বিপত্তি এবং অন্যান্য ক্ষতির সম্ভাব্যতা সনাক্ত করা, মূল্যায়ন করা এবং তার জন্য প্রস্তুত হওয়া।

প্রাতিষ্ঠানিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার উপাদান: 

১. আচরণ বিধি
২. উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নির্ধারণ:
৩. ঝুঁকি চিহ্নিতকরন: মানসিক চাপ পরীক্ষা , আপদকালীন পরীক্ষা, ঝুঁকির মডেল তৈরী, ঝুঁকির দায়িত্ব গ্রহণ, কৌশলগত পরিকল্পনা
৪. ঝুঁকির মূল্যায়ন
৫. ঝুঁকিতে সাড়াদান
৬. যাচাইকরন ও ভারসাম্য রক্ষা
৭. তথ্য ও যোগাযোগ
৮. তদারকি 

 
প্রাতিষ্ঠানিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা (Benefits and Weaknesses of  ERM):  
সুবিধা :  1. বিধি পরিপালনের নিশ্চয়তা:                 2. ঝুঁকিকে সুযোগ হিসেবে দেখা: 
            3. উত্তম সিদ্ধান্ত গ্রহণ:                             4. ঝুঁকি সংস্কৃতির পরিবর্তন:  
            ৫. সম্পদের সদ্ব্যবহার                              ৬. স্টকহোল্ডারদের আস্থা বৃদ্ধি
 
দৃর্বলতা :      ১. কাঠামোর অভাব:                            ২. সক্রিয় হওয়ার পরিবর্তে প্রতিক্রিয়াশীলতা:
                 ৩.  ঝুঁকির র‍্যাঙ্কিংয়ের অভাব:                 ৪. প্রশমন ব্যয়ের হিসাব না করা: 
                 ৫. অনুপ্রবেশকারী বা বহিরাগতদের জ্ঞানের উপেক্ষা:   

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার প্রতিরক্ষার তিনটি সারির মধ্যে প্রথম সারির ভূমিকাসমূহ (First line Roles):

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার প্রতিরক্ষার প্রথম সারিতে রয়েছে সম্মুখ সারির কর্মচারী এবং পরিচালন ব্যবস্থাপকগন যারা ঝুঁকির দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং পরিচালনা করেন এরাই ব্যবসায়ের মূল কার্যক্রমের সাথে সরাসরি জড়িত ব্যক্তিবর্গ তারা দৈনন্দিন নিয়ন্ত্রণ বাস্তবায়ন করে এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে প্রথম ভূমিকা রাখেন

 - ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাসহ প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সম্পদের ব্যবহার সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দেয়

- পরিচালনা পর্ষদের সাথে নিয়মিত আলোচনা বজায় রাখে এবং প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যের সাথে সংযুক্ত পরিকল্পিত, প্রকৃত প্রত্যাশিত ফলাফল এবং ঝুঁকি সম্পর্কে প্রতিবেদন উপস্থাপন করে

- আভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণসহ পরিচালন ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার (যার মধ্যে) জন্য উপযুক্ত কাঠামো প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা এবং রক্ষণাবেক্ষণ করে।

- আইনি, নিয়ন্ত্রণমূলক এবং নৈতিক প্রত্যাশা পরিপালন নিশ্চিত করে


প্রাতিষ্ঠানিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় শর্তসমূহ (Key requirements of Implementing ERM program):

১. ঝুঁকি সম্পর্কিত অন্তর্দৃষ্টি এবং স্বচ্ছতা:                ২. ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষমতা এবং কৌশল

৩. ঝুঁকি-সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত এবং প্রক্রিয়া:                ৪. ঝুঁকি সংগঠন এবং পরিচালনা

৫. ঝুঁকি সংস্কৃতি এবং কর্মক্ষমতা রূপান্তর

এছাড়াও -

 
উদ্ভুত ঝুঁকি (Emerging Risk):

উদ্ভুত বা উদীয়মান ঝুঁকি হল নতুনও অপ্রত্যাশিত ঝুঁকি যা বর্তমানে  অনুমান করা যায় না । এটা এমন ঝুঁকি যার কোন পূর্ব লক্ষণ বিদ্যমান নেই এবং এর ক্ষতি বা ক্ষতির সম্ভাবনা সম্পূর্ণরূপে জানা যায় না। 

অন্যভাবে বলা যায়,  উদীয়মান ঝুঁকি বলতে বুঝায় ভবিষ্যতে ঘটতে পারে বা ইতিমধ্যে বিদ্যমান রয়েছে এমন ঝুঁকি যা পরিমাপ করা কঠিন এবং ভবিষ্যতে একটি প্রতিষ্ঠানের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

উদ্ভুত ঝুঁকির বৈশিষ্ট্য:
আন্তর্জাতিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট বা  IRM এর মতে উদীয়মান ঝুঁকিসমূহ নিম্নরূপ:
১. অস্পষ্ট              ২. বিশৃঙ্খল              ৩. জটিল            ৪. সময়সীমা পরিবর্তনশীল 
৫. অনিশ্চিত            ৬. অনিয়ন্ত্রণযোগ্য   এবং                     ৭. পরিবর্তনশীল
 
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতার কারণ/দুর্বল দিক:
১. দুর্বল যোগাযোগ        ২. সহনশীলতার অভাব:        ৩. দুরদৃষ্টির অভাব:
৪. অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস    ৫. চ্যালেঞ্জ এর অভাব:            ৬. দুঃসংবাদের ভয়
৭. উদাসীনতা                    ৮. সাড়াদানে ধীরগতি
 
বস্তুগত ঝুঁকি (Material Risk): 

বস্তুগত ঝুঁকি হল সেই সব ঝুুকি যা কোন ব্যক্তির লক্ষ্যে পৌছানোর সম্ভাবনাকে হুমকির মুখে ফেলে দিতে পারে এবং যা আগামী ৩০/৪০ বছরের সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ আর্থিক পরিকল্পনাকে লাইনচ্যুত করতে পারে। বস্তুগত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে প্রধান বাজার নিম্নমুখী প্রবণতা, বিশেষ করে সে সকল বাজার যা পুনরুদ্ধার করতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে।

বস্তুগত ঝুঁকি সমূহ হ্রাস করার উপায় (Measures of Minimizing Material Risks): 
১. ঋণ ঝুঁকি:                     ২. ঋণ কেঁদ্রীভূত হওয়ার ঝুঁকি (Credit Concentration Risk)      
৩. বাজার ঝুঁকি:                 ৪. তারল্য ঝুঁকি:                ৫. সুদের হারের ঝুঁকি                
. পরিচালন ঝুঁকি            ৭. তথ্য প্রযুক্তির ঝুঁকি        ৮. আইনগত ঝুঁকি                    
. পরিপালন ঝুঁকি            ১০. সুনামের ঝুঁকি এবং        ১১.  কৌশলগত ঝুঁকি
 
মার্চেন্ট ব্যাংকিং:

মার্চেন্ট ব্যাংকিং হল নিবন্ধন প্রাপ্ত বণিক ব্যাংক যারা তাদের গ্রাহকদের আর্থিক চাহিদা বিবেচনা করে, নির্ধারিত ফি এর বিনিময়ে একটি পেশাদার পরিষেবা প্রদান করে। মার্চেন্ট ব্যাঙ্ক হল এমন ব্যাঙ্ক যারা বড় কর্পোরেশনগুলিতে তহবিল সংগ্রহ, পুঁজিবাজারে নতুন ইস্যু আনা, পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপনা, আর্থিক পরামর্শ এবং ঋণ পরিষেবা পরিচালনা করে।মার্চেন্ট ব্যাংক কোম্পানি ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বিধিমালা ১৯৯৬ অনুযায়ী মার্চেন্ট ব্যাংক পরিচালিত হয়। এবং এ ধরনের প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হওয়ার পরিশোধিত মূলধন হতে হবে ১০ কোটি টাকা।

 
মার্চেন্ট ব্যাংকিং এর কাজ:
আমাদের দেশে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো প্রধানত চার ধরণের কাজ করে:
ইস্যু ব্যবস্থাপনা:

ইস্যু ব্যবস্থাপনার মধ্যে রয়েছে প্রসপেক্টাস প্রস্তুত করা, এসইসির সাথে আইপিও সংক্রান্ত যোগাযোগ, আইপিও আবেদন সংগ্রহ করা, লটারি বা অন্যান্য ব্যবস্থার মাধ্যমে আইপিও বরাদ্দ করা , প্লেসমেন্ট পরিচালনা, কোম্পানিকে DSE/CSE তে তালিকাভুক্ত করা এবং ফেরত বিতরণ।

অবলেখন: 

নতুন ইস্যু বা রাইট ইস্যুর ক্ষেত্রে, মার্চেন্ট ব্যাঙ্কগুলি  যে শেয়ারসমূহ নিবন্ধনের আওতাভুক্ত করার আশ্বাস দেয়, মার্চেন্ট ব্যাংক কমিশনের বিনিময়ে পূর্ব নির্ধারিত মূল্যে নিবন্ধনবিহীন শেয়ার ক্রয় করে।

 পোর্টফলিও ব্যবস্থাপনা:

বাংলাদেশে মার্চেন্ট ব্যাংকের এটাই প্রধান পরিষেবা ক্ষেত্র।একটি পোর্টফোলিও সাধারণত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সমন্বয়। পোর্টফোলিও ম্যানেজার ম‌ক্কে‌লের শেয়ারের জিম্মাদার হিসাবে কাজ করে, তাদের তথ্য সরবরাহ করে এবং তাদের একটি পোর্টফোলিওকে ধ‌রে রাখ‌তে সাহায্য করে যা ঝুঁকি হ্রাস ক‌রে এবং সর্বোচ্চ রিটার্ন দেয়। মার্চেন্ট ব্যাংক ম‌ক্কে‌লদেরকে তাদের বিনিয়োগের বিপরীতে অর্থায়ন সুবিধা প্রদান করে, যা মার্জিন লোন নামে পরিচিত।

 এ ধরণের সেবার জন্য নিম্নোক্ত দুটি হিসাব খোলা হয়:

১) ব্যাংক ডিসক্রিশনারি হিসাব:  বিবেচনামূলক হিসাব হল একটি বিনিয়োগ হিসাব যা একজন অনুমোদিত ব্রোকারকে গাহকের সম্মতি ছাড়াই সিকিউরিটিজ ক্রয় এবং বিক্রি করতে অনুমতি দেয়। ব্যাংকের বিবেচনামূলক বিনিয়োগ হিসাব পোর্টফোলিও পরিচালকদের সরাসরি তত্ত্বাবধান এবং অপারেশনে পরিচালিত হয়। গ্রাহক শুধু পোর্টফলিও ম্যানেজারের সাথে লাভ-ক্ষতি ভাগাভাগি করে।

২)  বিনিয়োগকারীর ডিসক্রিশনারি হিসাব: বিনিয়োগকারীরা তার তহবিল/পোর্টফোলিও এবং নথিপত্র পরিচালনা করে । পোর্টফোলিও ম্যানেজাররা এই হিসাব পরিচালনা বা জড়িত থাকেন না

সংঘবদ্ধ অর্থায়ন: এই ধরণের অর্থায়নের সাথে বড় পরিসরের ঋণ জড়িত। যেখানে একদল ঋণদাতা তাদের সামর্থ ও রুচি অনুযায়ী বিভিন্ন অঙ্কের অর্থের যোগান দেয়। প্রথাগত অর্থায়নের মাধ্যমে নমাধান সম্ভব নয় যেখানে একটু জটিল প্রকৃতির অর্থায়ন হল সংঘবদ্ধ অরাথায়ন। মারচেন্ট ব্যাংক এখানে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে কাজ করে।

অফশোর ব্যাংকিং ও এর ক্ষেত্রসমূহ: 

যে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বিদেশি উৎস হতে বৈদেশিক মুদ্রায় তহবিল সৃষ্টি হয় এবং দেশীয় আইন-কানুনের বাইরে আলাদা আইন কানুনের মাধ্যমে এই তহবিল পরিচালিত হয় ও হিসাব সংরক্ষণ করা হয় তাকে অফ-শাের ব্যাংকিং বলে।

অর্থাৎ অফ-শোর ব্যাংকিং অনিবাসী বৈদেশিক মুদ্রার সম্পদ এবং দায়গুলির সাথে জড়িত আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ব্যবসায়কে বোঝায়। এটি এমন ব্যাংকিং ব্যবস্থাসমূহকে নির্দেশ করে যা শুধুমাত্র অনিবাসিদের, যেমন- মাল্টিন্যাশনাল পণ্য এবং সেবা এবং ফাইন্যান্সারদের সম্পৃক্ত করে এবং এটি দেশীয় ব্যাংকিংয়ের সাথে মিশ্রিত হয় না।

যে সকল ক্ষেত্রে OBU এর পরিচালনা/লেনদেন করা যেতে পারে:

(i) ইপিজেড, পিইপিজেড, ইজেড এবং হাই-টেক পার্কের উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান

(ii) ইপিজেড, পিইপিজেড, ইজেড এবং হাই-টেক পার্কে সম্পূর্ণ বিদেশী মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলি আমানত গ্রহণ করে, স্বল্পমেয়াদী ঋণ/অগ্রিম এবং বিনিয়োগ করা, বিল বাট্টা করা, নিষ্পত্তি করা, এলসি ইস্যু এবং গ্যারান্টি প্রদান। 

(iii) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক বিনিময় ও বিনিয়োগ বিভাগের পূর্বানুমতি নিয়ে সম্পূর্ণ বিদেশী মালিকানাধীন উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান 

(iv) বাংলাদেশে বসবাসকারী নয় এমন আইনগত ব্যক্তিরা ঋণ/অগ্রিমের পুরোটাই বিদেশের গ্রহণযোগ্য ক্রেডিট রেটিং লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যাঙ্কের কাছ থেকে গ্যারান্টি/লেটার অফ ক্রেডিট দ্বারা নিশ্চয়তা প্রদানকৃত।

(v) বাংলাদেশে বসবাসকারী নন, বিদেশে কর্মরত এমন বাংলাদেশী নাগরিক (NRBs) আমানত গ্রহণ 

(vi) বাংলাদেশে বসবাসকারী ব্যক্তির বাংলাদেশে খোলা আমদানি এলসিগুলির বিপরীতে অনুমোদিত ডিলার-এর গৃহীত বিলসমূহ ছাড়ের মাধ্যমে যথাযথ সতর্কতা প্রয়োগ করে ব্যবস্থা করন বিদেশী সরবরাহকারীদের মূল্য পরিশোধ। 

আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সাবসিডিয়ারি গঠনের মূল উদ্দেশ্যসমূহ:

 1. ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা:     2. ব্যবসায়িক কার্যক্রম বিস্তার:             3. নিয়ন্ত্রণ ও নমনীয়তা: 

 4. কর সুবিধা: বিভিন্ন দেশে বা অঞ্চলে সাবসিডিয়ারি গঠনের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর সুবিধা পেতে পারে, যেমন কম কর হার বা ট্যাক্স ইনসেনটিভ।

5. নিয়ন্ত্রক সংস্থার শর্ত পরিবালন (Regulatory Compliance):        6. ব্র্যান্ডিং ও বিশেষীকরণ:     7. মূলধনের দক্ষ ব্যবহার:

পুঁজিবাজারে একটি ব্যাংকের সর্বোচ্চ বিনিয়োগ সীমা: 

 উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ার বাজারে ব্যাংকগুলো যাতে অতিরিক্ত ঝুঁকি না নেয় তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর নির্দেশনা জারি করে। প্রধান নির্দেশনাগুলো বিআরপিডি সার্কুলার নং ১৮, তারিখ ২২ ডিসেম্বর, ২০২২-এ বর্ণিত আছে।

ব্যাংকের পুঁজিবাজারে মোট বিনিয়োগের সর্বোচ্চ সীমা (শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট সহ) হলো তার মোট মূলধনের ২৫%। এই ২৫% সীমা একটি সমন্বিত সীমা যার মধ্যে ব্যাংক কর্তৃক পুঁজিবাজারে সকল প্রকার বিনিয়োগ অন্তর্ভুক্ত

নীচে সীমা এবং শর্তগুলোর বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হলো:

১. সামগ্রিক সীমা (মোট মূলধনের ২৫%):

 এই ২৫% সীমার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত:

     পাবলিক লিস্টেড কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ।

     মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটে বিনিয়োগ।

এটি ব্যাংকের মোট মূলধনের ভিত্তিতে গণনা করা হয় (যার মধ্যে রয়েছে পরিশোধিত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম, সংবিধিবদ্ধ রিজার্ভ, অবণ্টিত মুনাফা ইত্যাদি)।

২. সামগ্রিক ২৫% সীমার মধ্যে উপ-সীমা:

 একক কোম্পানিতে বিনিয়োগ: কোনো ব্যাংক একটি কোম্পানি বা একটি মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার এবং ইউনিটে তার মোট মূলধনের ১০% এর বেশি বিনিয়োগ করতে পারবে না।

 একক সেক্টরে বিনিয়োগ: কোনো একক সেক্টরে (যেমন: ব্যাংক, বীমা, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, টেক্সটাইল) কোম্পানির শেয়ার এবং ইউনিটে ব্যাংকের বিনিয়োগ তার মোট মূলধনের ১৫% এর বেশি হতে পারবে না।

৩. গণনা এবং পরিপালন :

 ব্যাংকগুলোকে তাদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রতিদিন পূর্ববর্তী দিনের বাজার মূল্যের ভিত্তিতে গণনা করতে হবে। তাদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের অবস্থান মাসিক ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে রিপোর্ট করতে হবে।

৪. নিষিদ্ধ কার্যক্রম:

সার্কুলারটি স্পষ্টভাবে ব্যাংকগুলোর জন্য নিম্নলিখিত কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে:

 মার্চেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম: ব্যাংক নিজে পোর্টফোলিও ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতে বা মার্চেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। এটি তাদের পৃথক সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মাধ্যমে করতে হবে।

 পুঁজিবাজার বিনিয়োগের জন্য ঋণ প্রদান: ব্যাংকগুলো প্রাথমিক বা গৌণ বাজারে বিনিয়োগের জন্য কাউকে ঋণ বা অগ্রিম প্রদান করতে পারবে না (কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া, যেমন নির্দিষ্ট যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য মার্জিন ঋণ, যারও কঠোর সীমা রয়েছে)।

উপসংহারে, বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো তাদের আয়ের উৎস বৈচিত্র্যের জন্য পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারলেও, বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে শেয়ার বাজারের সহজাত অস্থিরতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে মোট মূলধনের ২৫% এর কঠোর সীমা আরোপ করেছে।

 

 অফশোর ব্যাংকিং এর নীতি:

১) অফশোর বা OBU হবে বাংলাদেশের বা বৈদেশিক কোন ব্যাংকের একটি অংশ কিন্তু এ অফশাের ব্যাংক ব্যবসায়ের জন্য আলাদা একটি হিসাব রক্ষা করতে হবে। 

২) যে সকল বিষয়ে ছাড় দেওয়া হয় সেগুলাে ব্যতীত এর পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের আইন প্রযােজ্য হবে।

৩) যারা OBU পরিচালনা করতে আগ্রহী হবে তাদেরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে।

৪) OBU স্বাধীনভাবে বৈদেশিক আমানত এবং ঋণগ্রহণ করতে পারবে। অনুরূপভাবে EPZ এলাকার শিল্পসমূহে ঋণ/বিনিয়ােগ করতে পারবে।

৫) OBU কতকগুলাে নির্দিষ্ট বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবসায় করতে পারবে। যেমন- ডলার, পাউণ্ড স্টালিং, কানাডীয় ডলার, ডয়েচ মার্ক, জাপানী ইয়েন, সুইস ফ্রাংক, নেদারল্যাণ্ড গীল্ডার, ফ্রান্স ফ্রাঙ্ক, সুইডিশ ক্রোনা, সিঙ্গাপুরী ডলার।

৬) OBU-এর ভৌগােলিক অবস্থান সম্পর্কে কোন বিধি-নিষেধ থাকবে না। এটি EPZ বা অন্য যে কোন স্থানে হতে পারে।

৭) EPZ এলাকার বাইরে বাংলাদেশী নাগরিকেরা ব্যাংকিং লেনদেন করতে পারবে না তবে অস্থানীয়দের বেলায় কোন বাধা নেই।

৮) বৈদেশিক করেসপনডেন্টদের নিকট যেমনভাবে দেশীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব পরিচালনা করতে পারে তেমনি OBU-এর নিকটও তারা বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব পরিচালনা করতে পারে।

রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে একমাত্র অগ্রণী ব্যাংক অফশোর ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে যুক্ত।

ইসলামিক উইন্ডো ও এর বৈশিষ্ট্য:

ইসলামিক উইন্ডো হলো একটি প্রচলিত ব্যাংকের ভেতরে একটি আলাদা অংশ বা শাখা, যা ইসলামী শরিয়াহ (ইসলামী আইন) মেনে সুদমুক্ত আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করেএই উইন্ডোগুলো ব্যাংকের মূল শাখার পাশাপাশি ইসলামিক গ্রাহকদের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়, যাতে তারা প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার অংশ হয়েও সুদমুক্ত পরিষেবা পেতে পারেএর মাধ্যমে, ব্যাংকগুলো একদিকে যেমন তাদের গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করে, তেমনি সুদমুক্ত ব্যাংকিংয়ের সুযোগ তৈরি করে সামগ্রিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার আধুনিকীকরণও করে থাকে

বৈশিষ্ট্যসমূহ:

১. শরিয়াহ্সম্মত:    ২. প্রচলিত ব্যাংকের অবকাঠামো ব্যবহার:            ৩. স্বতন্ত্র হিসাব ব্যবস্থা:

৪. শরিয়াহ্বোর্ড বা কমিটি:        ৫.পণ্য সেবার বৈচিত্র্য:   ৬. গ্রাহক সুবিধা:

৭. ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা:        ৮. স্বচ্ছতা নৈতিকতা:

 মোবাইল ফিনানসিয়াল সার্ভিস:

মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (MFS) হল এমন একটি পদ্ধতি বা উপায় যার মাধ্যমে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যাঙ্কিং এবং তারবিহীন মোবাইল নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে জনগণকে পরিষেবা প্রদান করে যা ব্যবহারকারীদের ব্যাঙ্কিং ও অন্যান্য আর্থিক লেনদেন করতে সক্ষম করে। ব্যবহারকারী বা গ্রাহক  আনস্ট্রাকচার্ড সাপ্লিমেন্টারি সার্ভিস ডেটা বা USSD মেনু, এসএমএস বা স্মার্টফোনে নির্দিষ্ট অ্যাপ দ্বারা তাদের হিসাব পরিচালনা করতে পারে। 

ব্যাংক দ্বারা অনুমোদিত এজেন্টরা সাধারণত মোবাইল আর্থিক পরিষেবা লালন করে, হিসাবের অনুমোদন দেয় ব্যবহারকারীদের ব্যাঙ্ক অবস্থানের বাইরে আলাদা এজেন্টদের আউটলেটে লেনদেন করতে হয়। মোবাইল ফিনানসিয়াল সার্ভিস এর  সাথে মোবাইল ব্যাংকিং এবং মোবাইল মানি অন্তর্ভুক্ত।

মোবাইল ব্যাংকিং হল এক ধরনের ইলেকট্রনিক ব্যাঙ্কিং, বা ই-ব্যাঙ্কিং যার মধ্যে রয়েছে বিস্তৃত ইলেকট্রনিক ব্যাঙ্কিং এর সমণ্বয় যেমন: ইন্টারনেট, পিওএস টার্মিনাল এবং এটিএমের মতো চ্যানেল

মোবাইল মানি একটি মোবাইল-ভিত্তিক লেনদেন পরিষেবা যা মোবাইল নেটওয়ার্ক  ব্যবহার করে ইলেকট্রনিকভাবে স্থানান্তর করা যেতে পারে।

মোবাইল ফিনানন্সিয়াল সার্ভিস সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা:

 মোবাইল ফিনানন্সিয়াল সার্ভিস গ্রাহকের একটি মোবাইল নং এর বিপরীতে একটি হিসাব সরবরাহ করে ই মানি সার্ভিস দেবে। যেখানে তহবিলের সকল হিসাব ইলেকট্রনিক্স খতিয়ানের মাধ্যমে সংরক্ষিত থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২২ সালের পিএসডি সার্কুলার অনুযায়ী মোবাইল ফিনানন্সিয়াল সার্ভিস এর নীতিমালা সমূহ:

পরিচালিত হিসাব: নিষ্পত্তি সংক্রান্ত উদ্দেশ্য ব্যতীত পরিচালনার জন্য এমএফএস কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণকৃত হিসাব সমূহ বাংলাদেশের কোন তফসিলি ব্যাংক সরবরাহ করবে। 

তদারকি: ন্যাশনাল পেমেন্ট সিস্টেমের অংশ হিসেবে এমএফএসকে নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি করার জন্য  বাংলাদেশ ব্যাংক সকল বিধিমালা প্রণয়ন করবে।

পেমেন্ট সার্ভিস প্রভাইডার: পেমেন্ট সার্ভিস প্রভাইডার বলতে বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃক লাইসেন্স প্রদানকৃত কোন প্রতিষ্ঠান যে গ্রাহককে ইলেকট্রনিক মুদ্রা সেবা  সরবরাহ করবে এবং  এর উদ্বৃত্ত অর্থ কোন তফসিলি ব্যাংকের সাথে আস্থা ও নিষ্পত্তি হিসাবে রাখবে।

প্রধান ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান/ সরকারি সত্ত্বা: যে কোন একটি প্রধান ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান/ সরকারি সংস্থার কমপক্ষে ৫১% শেয়ার থাকবে এবং সেইসাথে এমএফএস সরবরাহকারী সাবসিডিয়ারী কোম্পানীর পরিচালনা পর্ষদে ভোট প্রদান করার অধিকার থাকতে হবে।

এমএফএস এর প্রডাক্টসমূহ: 

১. কোন এজেন্ট শপ, এটিএম, কার্ড, সংযুক্ত ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট করা যাবে।

২. কোন ব্যক্তি হইতে ব্যবসায়িক মূল্য বা পাওনা যেমন- ইউটিলিটি বিল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফিস, মোবাইল রিচার্জ, ব্যাংক বা নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের  সঞ্চয়ী ও স্কিম হিসাবে জমাদান, ব্যাংক বা নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা এনজিওর লোন পরিশোধ, বীমার প্রিমিয়াম পরিশোধ ইত্যাদি।

৩. ব্যবসায়ী হইতে ব্যক্তিকে পরিশোধ যেমন- বেতন প্রদান, শেয়ার ও ডিবেঞ্চারের লভ্যাংশ প্রদান ইত্যাদি

৪. ব্যাক্তি হইতে ব্যক্তিকে পরিশোধ যেমন- এক এমএফএস হিসাব হইতে অন্য এমএফএস হিসাবে, কিংবা এক এমএফএস হিসাব হইতে অন্য ব্যাংক হিসাবে

৫.ব্যবসায়ী হইতে ব্যবসায়ীকে পরিশোধ: যেমন- ভেন্ডর, সাপ্লাই চেইনের মূল্য পরিশোধ

 ৬. সরকার হইতে ব্যক্তিকে পরিশোধ

৭. ব্যক্তি হইতে সরকারকে পরিশোধ

৮. আন্তঃ বৈদেশিক রেমিটেন্স পরিশোধ

এমএফএস সেবাদানকারীর অনুমোদন:  

* কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান এমএফএস সেবা দিতে চাইলে তরে একটি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান খুলতে হবে

* যে কোন একটি প্রধান ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান/ সরকারি সংস্থার কমপক্ষে ৫১% শেয়ার থাকবে এবং সেইসাথে এমএফএস সরবরাহকারী সাবসিডিয়ারী কোম্পানীর পরিচালনা পর্ষদে ভোট প্রদান করার অধিকার থাকতে হবে।

* প্রধান ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান/ সরকারি সংস্থা তার সাবসিডয়ারি কোম্পানিটি পরিচালনা করবে।

* একটি প্রধান ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান/ সরকারি সংস্থা একটি এমএফএস প্রতিষ্ঠানের মালিক হতে পারবে।

অর্থনীতিতে মোবাইল ফিনানসিয়াল সার্ভিস এর অবদান (Contribution of MFS to our Economy): 

১. আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি    ২. সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবা:  

৩. সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি স্বচ্ছতা বৃদ্ধি    . নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন

. উদ্যোক্তা ও ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পের  উন্নয়ন        ৬. সঞ্চয় অভ্যাস ও মূলধন গঠন:

   ৭. নগদ অর্থ বহন  ও কাগুজে লেনদেন পরিহার:    . দক্ষতা বৃদ ও লেনদেন খরচ কমানো

. কর্মসংস্থান সৃষ্টি    ১০. ডিজিটাল অর্থনীতির বিনির্মান    ১১. প্রবাসিদের রেমিটেন্স দ্রুত প্রেরণ

 

বাংলাদেশের মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস এর ভবিষ্যত সম্ভাবনা (Future of MFS) :

বাংলাদেশের মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (MFS) এর ভবিষ্যৎ অত্যন্ত গতিশীল এবং সম্ভাবনাময়। এটি শুধু একটি অর্থপ্রদানের মাধ্যমই নয়, বরং দেশের আর্থ-সামাজিক কাঠামো পরিবর্তনের একটি শক্তিশালী হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। এর ভবিষ্যত নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

১. আর্থিক অন্তর্ভুক্তি:    ২. ডিজিটাল পেমেন্ট এবং ক্যাশবিহীন লেনদেন:

. ফিনটেক ইকোসিস্টেমে রূপান্তর: MFS শুধু মানি ট্রান্সফার বা রিচার্জের সেবা দিয়েই থেমে থাকবে না। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল ইকোসিস্টেমে পরিণত হবে।

৪. সঞ্চয় ও বিনিয়োগ:    ৫. ডিজিটাল ক্রেডিট/লোন:            ৬. বীমা সেবা (InsurTech):

৭. সরকারি সেবার ডিজিটাল হাব:         ৮. সকল প্রকার কর ও বিল পরিশোধ:        ৯.  ইউটিলিটি বিল:

১০. ডিজিটাল আইডেনটিটি:            ১১. ই-কমার্স ও অনলাইন মার্কেটপ্লেস:    ১২. সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্স:

১৩. বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন:            ১৪. আন্তর্জাতিক রেমিট্যান্স এবং বাণিজ্য:


 

এজেন্ট ব্যাংকিং ?

ব্যাংকের এজেন্ট হল একজন খুচরা বিক্রেতা বা ডাক আউটলেট যা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সীমিত পরিসরে অনগ্রসর এলাকায় ব্যাংক সেবাগ্রহীতার লেনদেন সম্পাদন  করে।ব্যংকের শাখার পরিবর্তে আউটলেটের মালিক অথবা কর্মচারী লেনদেন নির্বাহ করে যা সেবাগ্রহীতা কে টাকা জমা করা, টাকা উত্তোলন, ফান্ড ট্রান্সফার, বিল পরিশোধ, হিসেব জানতে চাওয়া অথবা সরকারী সুবিধা গ্রহণ করা ইত্যাদি সুবিধা দিয়ে থাকে। ব্যাংকের এজেন্ট হিসেবে থাকতে পারে ফার্মেসী, সুপারমার্কেট, লটারী আউটলেট, ডাকঘর ইত্যাদি।

বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান হারে এইসব খুচরা বিক্রেতা ডাকঘরগুলো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ বণ্টন মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারিত হয়ে আসছে। উন্নত দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এজেন্ট ব্যাংকিং

ব্যাংকের এজেন্টরা সাধারণত পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) কার্ড রিডার, মোবাইল ফোন, বারকোড স্ক্যানার, পিন প্যাড ইত্যাদির সাহায্যে কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকে। মাঝে মাঝে ব্যক্তিগত কম্পিউটার ব্যবহার করে যা পার্সোনাল ডায়াল আপ বা অন্য ডাটা কানেকশন ব্যবহার করে কম্পিউটারের সার্ভারের সাথে সংযুক্ত থাকে। সেবাগ্রহীতারা যথাক্রমে তার ব্যাংক হিসাব অথবা -ওয়ালেটে প্রবেশ করার জন্য ম্যাগনেটিক ব্যাংক কার্ড বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে এজেন্টের সাথে লেনদেন পরিচালনা করে  সেবাগ্রহীতা সাধারণত পিন নাম্বার দিয়ে শনাক্ত হয়ে থাকে তবে বায়োমেট্রিকের মাধ্যমেও এটা করা যায়। লেনদেন যাচাইকরণ, অনুমোদন অন্যান্য ফয়সালার ক্ষেত্রে এজেন্ট ব্যাংকিং অন্য যে কোন দূরবর্তী ব্যাংক চ্যানেলের মতই কাজ করে।

পৃথিবীতে এজন্ট ব্যাংকিং এ ব্রাজিলকে পথিকৃত মনে করা হয়। কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুচরা আউটলেটের মাধ্যমে কাজ করতে পারবে কিনা তা স্থানীয় নিয়ন্ত্রণ সংস্থা নির্ধারণ করে দেয়।

এজেন্ট ব্যাংক যে সকল সেবা দিতে পারবে এবং দিতে পারবে না :

সেবাসমূহ:  ১. ছোট অঙ্কের নগদ জমা ও উত্তোলন, তহবিল স্থানান্তর বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃক সীমা নির্ধারন করা থাকবে

        ২.  আন্তঃ বৈদেশিক রেমিটেন্স পরিশোধ

        ৩. ছোট অঙ্কের ঋণ সুবিধা মঞ্জরী ও ঋণের কিস্তি আদায়

        ৪.   ইউটিলিটি বিল গ্রহণ সুবিধা         ৫. সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ভাতা পরিশোধ    

  ৬. ব্যালেন্স অনুসন্ধান

    ৭. গ্রাহকের কাছ থেকে হিসাব খোলার  আবেদন, ডেবিট/ক্রেডিট ফরম, ঋণের কাগজপত্র সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণ

        ৮. ঋণ মঞ্জুরীর পরবর্তীতে ঋণের তদারকি ও দেখভাল করা        ৯. ক্লিয়ারিং এর চেক সংগ্রহ করা

        ১০. ইন্সুরেন্স এর প্রিমিয়াম আদায়

অনুমোদন বহির্ভূত সেবা: ১. গ্রাহকের কোন হিসাবের চুড়ান্ত অনুমোদন দিতে পারবে না, এবং গ্রাহকের  অনুকূলে কোন চেক বা কার্ড ইস্যু করতে পারবে না।

        ২. কোন চেকের পেমেন্ট দিতে পারবে না

        ৩. ফরেণ এক্সচেঞ্জ সংক্রান্ত লেনদেন করতে পারবে না।

        ৪. গ্রাহকের কোন ঋণ প্রস্তাব নিয়ে কাজ করতে পারবে না। 

এজেন্ট ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে এজেন্ট নির্বাচনে বিবেচ্য বিষয়সমূহ: 

 এজেন্ট ব্যাংকিং খুলতে চাওয়া ব্যাংককে এজেন্ট ব্যাংকিং সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরী করতে হবে। এই নীতিমালায় এজন্ট নির্বাচন, ব্যবস্থাপনা, তদারকি,  পরিচালনা, পরিপালন সম্পর্কে দিক নির্দেশনা থাকবে। গ্রাহক সুরক্ষা ও সচেতনতা সম্পর্কে নির্দেশনা, এজেন্টকে সিস্টেম ও তথ্য প্রযুক্তি সহায়তা দেওয়ার জন্য অবকাঠামো সুবিধা দান।

এজেন্ট নির্বাচনের মানদন্ড:

১. এজেন্ট এর সক্ষমতা: প্রস্তাবিত কাজে সহায়তা ও বাস্তবায়নের সক্ষমতা আছে কিনা ....

২. আর্থিক সামর্থ্য ও ক্যাশ পরিচালনার সক্ষমতা:                    ৩. প্রতিকূল অবস্থায় পরিস্থিতি সামলানোর সামর্থ্য     

৪. ব্যবসায়িক সুনাম:            ৫. প্রযুক্তি নির্ভর আর্থিক সেবা দানের সামর্থ : 

৬. ঋণ খেলাপী ও অপরাধী নয়: কোন ঋণ খেলাপী ও সাজাভোগকারী অপরাধী ব্যক্তি এজেন্ট হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবে না।

৭. আভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা, নিরীক্ষা প্রতিবেদন ও পরিদর্শনে সামর্থ :

৮) নতুন ব্যবসায়ের বিনিয়োগের সামর্থ্য     ৯) দক্ষ ও শিক্ষিত জনবল বা কর্মী          ১০) সমাজ বা গোষ্ঠীর আস্থা 

১১) কৌশলগত অবস্থান ব্যাংক বা এটিএম এর কাছাকাছি ...        ১২) সামাজিক প্রভাব ও গ্রহণযোগ্যতা  

অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে জীবনকে আরও সহজ ও আরামদায়ক করতে গ্রাহকদের এই উদ্ভাবনী সেবা দিচ্ছে। 

ব্যাংকার ও গ্রাহক সম্পর্ক:

১) দেনাদার ও পাওনাদার সম্পর্ক : ২) জিম্মাদার হিসেবে ব্যাংকার: ৩) প্রতিনিধি হিসেবে ব্যাংকার

৪) অন্যান্য বিশেষ সম্পর্ক: 

    ১. চেক মর্যাদা করার বাধ্যবাধকতা:     ২. গ্রাহকদের হিসাবের গোপনীয়তা রাখা  ৩. গ্রাহকদের সাথে গভীর সম্পর্ক রাখা      ৪. সঠিক সময়ে সঠিক সেবার প্রবর্তন:   ৫. অপ্রয়োজনীয় দ্বন্দ এড়ানো:   ৬. গ্রাহকের সাথে ব্যক্তিক সম্পর্ক গড়া:      ৭. গ্রাহকের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধিকরন:    ৮.  গাহকের আস্থা তৈরী  

অভিযোগ ব্যবস্থাপনা (Complaint Management):

সাধারণভাবে অভিযোগ বলতে ব্যবস্থাপনার  গোচরে আনিত সংগঠনের কোনো বিষয় সম্পর্কে একজন কর্মচারীর আপত্তি বা অসন্তুষ্টি বোঝায়। ব্যবস্থাপনা কর্মচারী বা শ্রমিক কর্মচারী যে কারো অভিযোগ থাকতে পারে। প্রতিষ্ঠানের কার্যপরিবেশ, নিয়োগ শর্ত, স্বজনপ্রীতি, বেতন, বোনাস, ভাতা, ছুটি, সুবিধাসমূহ ইত্যাদি বিষয়ে একজন কর্মচারীর অসন্তুষ্টিজাত নালিশ অভিযোগ হিসেবে গণ্য হয়। ব্যবস্থাপনার কাছে কার্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন আপত্তি, প্রতিবাদ বা নালিশ জানালে তাকে অভিযোগ বলে। 

অভিযোগ পরিচালনা হল মানব সম্পদ বিভাগ কর্তৃক কোন অভিযোগের ব্যবস্থাপনা ও প্রতিবিধান করা। একজন কর্মীর অভিযোগকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাধান করার পদক্ষেপ নেয়া কর্মী ব্যবস্থাপনার একটি আবশ্যিক দায়িত্ব। নিয়োগকর্তাকে অপ্রয়োজনীয় বাড়াবাড়ি ও নেতিবাচক মনোভাব এড়ানোর জন্য বন্ধুভাবাপন্ন ও সহযোগীতামূলক উপায়ে অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে হবে। অভিযোগ পরিচালনা প্রক্রিয়া কর্মক্ষেত্রে অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য আচরণ  খুব দ্রুত চিহ্ণিত করতে সহায়তা করে  

অভিযোগ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের দিক নির্দেশনাসমূহ:

অভিযোগ দাখিল:

১. একজন গ্রাহক যে কোন উপায়ে যেমন- চিঠি, টেলিফোন, ফ্যাক্স, ইমেইল মারফত অথবা সরাসরি অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন।

২. ব্যাংকের ওয়েব পোর্টালে ইলেকট্রনিক অভিযোগ দাখিলের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৩.  কোন গ্রাহক একটি ব্যাংকের যে কোন শাখায় অভিযোগ দাখিল করতে পারবে।

৪. ব্যাংক কোন গ্রাহক বা তার প্রতিনিধি কতৃক দাখিলকৃত অভিযোগ গ্রহণ করতে হবে।

৫. অভিযোগ দাখিলের জন্য ব্যাংকের অভিযোগ ব্যবস্থা বা নিজস্ব ফরমেট সরবরাহ ব্যবস্থা থাকতে হবে।

অভিযোগ নথিভুক্তকরণ: কোন ব্যাংক বা আর্থিক সংস্থা অবিযোগের তারিখ, নাম ও পদবি, যোগাযোগ, অভিযোগের বিবরণ, নিষ্পত্তির তারিখসহ একটি অভিযোগ রেজিস্টার রাখতে হবে।

অভিযোগকে অগ্রাধিকার প্রদান: অভিযোগের মাত্রা, গভীরতা ও স্পর্শকাতরতা অনুযায়ী ...
অভিযোগ নিষ্পত্তিকরণ প্রক্রিয়া:

অভিযোগ নিষ্পত্তি করার ন্যুনতম ধাপসমূহ:

১. প্রাপ্তি স্বীকার ২. অভিযোগ যাচাই ৩. নিষ্পত্তি করার জন্য বিভাগীয় পদক্ষেপ ৪. আপিল ও পর্যালোচনা এবং ৫. সাড়া প্রদান ও সমাপ্তকরণ।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গ্রাহকদের অভিযোগ গ্রহণের প্রাথমিক নিয়ম: 

১. তাৎক্ষণিক প্রাপ্তি স্বীকার:         ২. ন্যায্য ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া:         ৩. সময়মতো সমাধান:                                         ৪. রেকর্ড রাখা:         ৫. তদন্ত ও ন্যয়সঙ্গত আচরণ:         ৬. উচ্চ পর্যায়ে উত্থাপনের সুযোগ:         ৭. সহজলভ্যতা:
৮. নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিধি:         ৯. অভিযোগের হালনাগাদ তথ্য অবহিতকরন:                                                     ১০. তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ:

গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের সাথে সুসম্পর্ক :

গোষ্ঠী বলতে একটি বৃহৎ সমাজে সমবৈশিষ্ট্য বা স্বার্থ সম্পন্ন  একত্রে বসবাসরত এক দল মানুষকে বুঝায়। এক দল মানুষের দুই বা ততোধিক বিষয় বা যে কোন কিছুর মধ্যে সামঞ্জস্য থাকতে পারে যা তারা পারস্পরিক মত বিনিময় করে থাকে। যেমন: পেশাগত সম্প্রদায়, ধর্মীয় সম্প্রদায়, সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী ইত্যাদি।

সম্পর্ক তখনই গড়ে ওঠে যখন এক ধরণের যোগাযোগ বা আন্তঃযোগাযোগ গড়ে ওঠে। যখন গোষ্ঠীর মধ্যে সাদৃশ্য তৈরী হওয়ার মধ্য দিয়েই গোষ্ঠীগত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গোষ্ঠীগত সম্পর্কর মাধ্যমে একটি সংগঠনের সক্রিয় স্বার্থ জড়িত থাকে। উদাহরণস্বরূপ,  একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোন আঞ্চলিক ব্যবসার শুভ উদ্বোধনে অংশগ্রহণ করল বা স্পন্সরশিপ বা প্রমোশনাল অংশীদারিত্বর মাধ্যমে সেখানে কোন ইভেন্ট আয়োজন করল। ফলে প্রতিষ্ঠান এবং এর ব্র্যান্ডকে ইতিবাচক উপস্থিতি তুলে ধরার মাধ্যমে স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্ক তৈরি হয়।

ব্যবসার প্রতিযোগীদের সাথে সম্পর্কর গুরুত্ব (Importance of Relationship with Competitors):

1. শিল্প সহযোগিতা এবং মান নির্ধারণ:          2. বাজারের স্থিতিশীলতা এবং আস্থা: 

3. আন্তঃব্যাংক লেনদেন কার্যক্রম:                 4. নিয়ন্ত্রক বিধি পরিপালন এবং সমর্থন: 

5. উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি ভাগাভাগি:                 6. ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং সংকট মোকাবিলা: 

7. গ্রাহক সুবিধা এবং বাজার সম্প্রসারণ:         8. সুনাম এবং নৈতিক প্রতিযোগিতা: 

মিডিয়ার সাথে সম্পর্কের সুবিধা (Benefits of relationship with Media) :

 ১. আস্থার উন্নয়ন:             ২. ব্রান্ড এর বিস্তার (Reach):                      ৩. কর্তৃত্ব                            ৪. মেধার আকৃষ্টকরণ ও ধরে রাখা                         ৫. ব্রান্ড সম্পর্কে সচেতনতা                               ৬. কার্যকর যোগাযোগ         ৭. সঙ্কটকালীন ব্যবস্থাপনা        ৮. ব্যয় সাশ্রয়ী বিপণন

৮. ভোক্তার উপর প্রভাব বিস্তার

 
শেয়ারহোল্ডারদের সাথে যোগাযোগের নীতিমালা (Principles of Shareholders’ Communication):
যখন ব্যবস্থাপনা শেয়ারহোল্ডারদের সাথে স্পষ্টভাবে যোগাযোগ করে, তখন এটি তাদের মনোযোগকে সঠিক দিকে পরিচালিত করতে সাহায্য করে। নিয়মিত প্রকাশ এবং যোগাযোগ শেয়ারহোল্ডারদের সাময়িক বিষয়ে অতিরিক্ত মনোযোগ দেওয়া, ব্যবস্থাপনার দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা বা তত্ত্বাবধান সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করা হতে বিরত রাখে। 

১. ব্যবসায়িক কৌশলের উপর মনোযোগ (Business Strategy) 
২. সময়োপযোগী এবং প্রাসঙ্গিক হালনাগাদ প্রদান 
(Relevant Update)  
৩. পূর্ণ প্রকাশের পরিকল্পনা 
(Disclosure)
৪. কোম্পানির কর্মক্ষমতার আপডেট (Performance)
৫. শেয়ারহোল্ডার সম্পর্ক গড়ে তোলা  (Relationship)
৬. সংকটকালীন যোগাযোগ পরিকল্পনা (Communication in Crisis)
   

ব্যবসায়ের সামাজিক দায়বদ্ধতা  (CSR):

ব্যবসায়ের সামাজিক দায়বদ্ধতা বলতে মুনাফা অর্জনের সাথে সমাজের কিছু মঙ্গলময় বা কল্যাণমূলক কাজ করাকে বুঝায়। সামাজিক দায়বদ্ধতা হল একধরনের ব্যবসায়িক শিষ্টাচার বা নীতি যা সমাজের প্রতি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালনকে ব্যবসার নিয়মের মধ্য অন্তর্ভুক্ত করে। একটি ব্যবসা নৈতিক ও আইনগত ভাবে পরিচালিত হলেই এর সমস্ত দায়মুক্তি হয়েছে তা বলা যায় না। যে পরিবেশে বা যে সমাজে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে সেই সমাজের প্রতি প্রতিষ্ঠানের কিছু দায়বদ্ধতা জন্মায়। কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা হচ্ছে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও ব্যাসায়িক মডেলের সংমিশ্রণ। কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা বলতে বুঝায় যে যেসব কার্যক্রম সমাজ, মানুষ, পরিবেশকে প্রভাবিত করে, একটি প্রতিষ্ঠান তার সেসব কর্মের জন্য সমাজের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।

সমাজ বা গোষ্ঠীর উন্নয়নে কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার ভুমিকা (Roles of CSR in Community Dev.): 

১. শিল্পায়নের নেতিবাচক প্রভাব তুলে ধরা: ব্যবসায়িক কর্মকান্ডে নৈতিকতার প্রয়োজনে পণ্যের বাজারে অধিকতর সচেতনতার সাথে এটি জড়িত। যেমন- যুক্তরাজ্যে যে গাড়ি যত বেশি কার্বন নির্গমন করে তার রোড ট্যাক্স তত বেশি। এর ফলে ক্ষুদ্র যানবাহনের মালিকদের কর বোঝা লাঘব হয়

২. কোম্পানি এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক: গোষ্ঠির শিক্ষা, স্বাস্থ সুবিধা, সাংস্কৃতিক কর্মসুচির মাধ্যমে সামাজিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এক অনুভূতি  তৈরী করে যে কোম্পানি কোন পণ্য ও সেবার উৎপাদক ...

৩. প্রতিভার বিকাশে সহায়তা : .. মেধা ও প্রতিভাবানকে লালন করে

৪.  প্রযুক্তি হস্তান্তরে ভূমিকা : বহুজাতিক কোম্পানির মধ্যে প্রযুক্তির হস্তান্তর আয়োজক দেশগুলিতে ....

৫. পরিবেশ রক্ষায় সহায়তা : সিএসআর “সবুজের পথে”, “আমরা পৃথিবীকে সবুজ করি” প্রভৃতি স্লোগান, গ্রিন পিস সঙ্গঠন ....

৬. টেকসই মানবাধিকার রক্ষায় CSR :

৭.  পারস্পরিক নির্ভরশীলতা তৈরী: কোম্পানি এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে ...

৮.  দারিদ্র্য দূরীকরণে সহায়তা : কর্মসংস্থানের সুযোগ ও উপার্জনক্ষম কাজ সৃষ্টির ...সিএসআর কর্মসূচি

৯. তথ্য সংগ্রহে সহায়তা: CSR কর্মসূচি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য.. যেমন- মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো অপরাধ দমন ও শনাক্ত করতে কল লিস্ট সহ রেকর্ডিং বিবরণি, আইটি কেম্পানি নিরাপত্তার জন্য কিভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হয় তা শিখিয়ে 

১০. কর্পোরেট টেকসই লক্ষ্য অর্জন:

তথ্য সুত্র : https://www.sosyalarastirmalar.com/articles/corporate-social-responsibility-and-its-role-in-community-development-an-international-perspective.pdf

 স্বচ্ছতা ও প্রকাশ নীতি:

ডিসক্লোজার বা বিবৃতি হল ঘটনা বা তথ্য জনগণের কাছে জানানোর প্রক্রিয়া। কোন সংগঠন কর্তৃক যথাযথ প্রকাশ হল তার গ্রাহকদের, বিনিয়োগকারীদের এবং কোম্পানির ব্যবসার সাথে জড়িত যে কোনও ব্যক্তিকে প্রাসঙ্গিক তথ্য সম্পর্কে সচেতন করে তোলার কাজ। ব্যাংকিং শিল্পে, প্রকাশ হল কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান দ্বারা প্রদত্ত একটি বিবৃতি - যা একজন ভোক্তা বা বাণিজ্যিক হিসাবধারীর কাছে সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্যের রূপরেখা দেয়। একটি নতুন হিসাব বা ঋণ শুরু করার সময় সাধারণত হিসাবধারীর ডিসক্লোজার দেওয়া হয়।

কর্পোরেট জগতের ক্ষেত্রে
তথ্যের প্রকাশ জনগণের আস্থার কেন্দ্রবিন্দু । 

ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল সেটেলমেন্ট বা (BIS) কতৃক ঘোষিত প্রকাশ নীতিমালা:   

১. প্রকাশ হতে হবে স্পষ্ট          ২. বোধগম্য         ৩. ব্যবহারকারীর কাছে অর্থবহ হতে হবে 

৪. সময়ের সাথে ধারাবাহিক হতে হবে        ৫. ব্যাংকের মধ্যে তুলনাযোগ্য হতে হবে।

স্বচ্ছতা ও প্রকাশ নীতির গুরুত্ব: 

১.  স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা:     ২. আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা:  ৩. অভ্যন্তরীণ লেনদেন ও গবাক্ষ সজ্জা পরিহার:      ৪. আমানতকারী জেনে বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা  ৫. বাজারে অনিশ্চয়তা দূর করা        ৬. শেয়ারের মূল্য  বৃদ্ধি পায়  ৭. আইনগত ঝামেলা কমায়    ৮. ভুল ত্রুটি সংশোধন সহজ হয়:

কর্পোরেট এবং আর্থিক জগতে পূর্ণাঙ্গ প্রকাশের অসুবিধা (Disadvantage of full Disclosure):

  ১. প্রতিযোগিতামূলক অসুবিধা:         ২. বাজারের অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া: 

৩. বর্ধিত খরচ:                             ৪. তথ্যের অতিরিক্ত ভার: 

৫. আইনি এবং নিয়ন্ত্রণমূলক ঝুঁকি:         ৬. স্বল্পমেয়াদী ফোকাস: 

৭. বাণিজ্যে অনুপ্রবেশকারী ঝুঁকি:            ৮. অনিষ্পন্ন বিষয় ফাঁস            ৯. তথ্যের অপব্যাখ্যা


ভবিষ্যতদর্শী সংস্থা (Future Looking Companies):  

ভবিষ্যতের সন্ধানকারী সংস্থা বলতে সেই কোম্পানিকে বুঝায় যা কোনো পরিস্থিতিতে বিকশিত এবং উন্নতি করতে পারে এবং বাজার ও ভোক্তাদের চাহিদার পূর্বাভাস বুঝে মান নির্ধারণ; তৎপরতা, নমনীয়তা, এবং উদ্দেশ্য সাধনের উপায়ের উপর ভিত্তি করে আপদকালীন সময়ে সমাধানে উপনীত হয়। সকল শিল্পের গ্রাহক, বিশেষ করে ব্যাংকিংয়ে সেক্টরের কোম্পানিসমূহ ব্যবসায় তথা জীবনে বিপ্লব ঘটিয়েছে এমন একটি ডিজিটাল পদ্ধতি গ্রহণ করতে চায় যা

ভবিষ্যতমুখী সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ  বৈশিষ্ট্য (Important features for the Future Looking Companies)

১) প্রতিযোগী কোম্পানির সাথে অংশীদারিত্ব :  ২)  নিঃশেষিত হওয়ার পূর্বে দ্রুত সুযোগের অনুসন্ধান

৩) সমস্ত প্রক্রিয়ার ডিজিটালাইজেশন       ৪) এগিয়ে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্তের স্পষ্টতা

৫) অধিকতর দিক নির্দেশনা           ৬) ভোক্তাদের অভিজ্ঞতাকে অগ্রাধিকার প্রদান 

৭) বিভিন্ন প্রজন্মের ডিজিটাল কর্মীদল তৈরী         ৮) সনাতনী পদ্ধতি পুনঃবিবেচনা 

৯) প্রযুক্তির হালনাগাদ করন      ১০)  চাহিদা সম্পর্কে পূর্বানুমাণ

১১) বহুমুখী ও নমনীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা     ১২)  কার্যভিত্তিক ফলাফলের চাইতে মূল্যকে প্রাধান্য দেয়া

বাজার অবস্থান তৈরী (Market Positioning):  

বাজার দখল বলতে অন্যান্য প্রতিযোগীদের সাথে সম্পর্কিত একটি ব্র্যান্ড বা পণ্য সম্পর্কে ভোক্তাদের ধারণাকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা বোঝায়। বাজার পজিশনিং এর উদ্দেশ্য হল একটি ব্র্যান্ড বা পণ্যের চিত্র বা পরিচয় প্রতিষ্ঠা করা যাতে ভোক্তারা এটি নিশ্চিতভাবে উপলব্ধি করতে পারে।

কার্যকর বাজার অবস্থান বা জায়গা করে নেয়ার কৌশল (Strategy for Effective Market Positioning):

১. কাঙ্খিত গ্রাহক চিহ্ণিতকরন (Target Customer)    ২) প্রতিযোগীর তুলনায় কোম্পানির স্বকীয়তা বজায় রাখা:   ৩) বাজারে নিজের বর্তমান অবস্থান চিহ্নিত করা:         ৪) প্রতিযোগীদের অবস্থান বিশ্লেষণ:                      ৫) বাজারে অবস্থান তৈরীর কৌশল উন্নয়ন:        ৬) প্রতিযোগীদের বিপরীতে নিজ কোম্পানির পরিচিতি যাচাই :       ৭) বাজার জরিপ বা নকশা 

৮) বাজার পজিশনিং পরীক্ষা পরিচালনা করন: পজিশনিং তার লক্ষ্য পূরণ করে কিনা তা দেখতে পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়ার জন্য সময় ব্যয় করা উচিত

বাজার পুনর্দখল (Market Repositioning):

বাজার পুনর্দখল বলতে সাধারণত বাজারে আগের অবস্থান ফিরে পাওয়া বা হারানো ভাবমূর্তি ফিরে পাওয়ার প্রক্রিয়াকে বোঝায়, যা সাধারণত একটি কোম্পানি বা ব্র্যান্ডের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি কোনো একটি পণ্য বা সেবাকে গ্রাহকদের মনে নতুনভাবে উপস্থাপন করা বা তাদের ধারণাকে পরিবর্তন করার একটি বিপণন কৌশল। সহজ ভাষায়, এটি একটি পণ্যের ব্র্যান্ডিং বা ভাবমূর্তি পরিবর্তন করার প্রক্রিয়া। সাধারণত বিক্রি কমে যাওয়া, প্রতিদ্বন্দ্বীদের চাপে পড়ে বা অন্যান্য কারণে কোন কোম্পানি তার বাজার হারাতে থাকে। অনেক কোম্পানি, পুনঃরুদ্ধারের পরিবর্তে, একটি নতুন পণ্য বা ব্র্যান্ড চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ একটি ব্র্যান্ড বা পণ্যর হারানো জৈৗলুস সফলভাবে পুনঃস্থাপন করতে উচ্চ খরচ এবং প্রচেষ্টার প্রয়োজন হয়।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বাজার পুনরুদ্ধার করার প্রক্রিয়া (Strategy of Market Repositioning):

 ১) পন্য বা সেবার পরিবর্তন          ২. কাঙ্খিত বাজারের বৈচিত্র সাধন        ৩) নতুন বিপণন কৌশল গ্রহণ:               ৪) বাজার বিশ্লেষণ গবেষণা:            ৫) প্রতিযোগিতাশীলতা বাড়ানো:  

৬) ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধি:      ৭) বাজারের নতুনভাবে চাহিদা তৈরি:      ৮) তদারকি ও মূল্যায়ন (Monitoring & Evaluation)


নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগ

ব্যবসায়িক উদ্যোগ সাধারণত অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক প্রচারণা যা কোনো সংস্থার কর্মপরিবেশ, কোম্পানির সংস্কৃতি বা সামগ্রিক ব্যবসায়িক কৌশল উন্নত করার প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচিত হয়নতুনশব্দটি যোগ করার মাধ্যমে আমরা ব্যবসায়িক উদ্যোগকে এমন একটি পদ্ধতি হিসেবে বর্ণনা করতে পারি যা সংস্থাগুলি তাদের বর্তমান অবস্থার গভীর বিশ্লেষণ এবং ভবিষ্যতে তাদের আদর্শ পছন্দসই অবস্থান কোথায় হবে তার উপর ভিত্তি করে তাদের উদ্দেশ্যগুলি নির্ধারণ করতে ব্যবহার করে।

সুতরাং, ‘নতুনবাবৈপ্লবিকব্যবসায়িক উদ্যোগকে একটি উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক কৌশল, কৌশল বা প্রযুক্তি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায়, যা কর্পোরেট সাফল্য বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাবিত। এই সময়কালে এমন নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগের একটি ক্রমাগত প্রসারিত তালিকা তৈরি হয়েছে, যা ব্যবসায়িক সাফল্য বৃদ্ধির দাবি করে। সব উদ্যোগই মোটামুটিভাবে ক্রমাগত উন্নতি এবং কর্মীদের বর্ধিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে ব্যবসায়িক দৃষ্টান্তে পরিবর্তনের পক্ষে সমর্থন করে, তবে প্রতিটি উদ্যোগ ক্রমাগত উন্নতি ভিন্নভাবে অর্জন করে।

নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগের পদক্ষেপসমূহ (steps of a new business initiative):

পদক্ষেপ : ব্যবসার চাহিদাসমূহ নির্ণয় করা: 

নতুন উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য প্রথমে ব্যবসায়ীরা তাদের আসলে কী অর্জন করতে চান তা নির্ধারণ করতে হবে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর এই পরিবর্তনের জন্য পদক্ষেপ নির্ধারণে সহায়তা করতে পারে

- কী ও কেন কাজ করছে নাএটি কি মানুষের সমস্যা, নাকি প্রযুক্তিগত সমস্যা আর কী উন্নতি প্রয়োজন কী কী সরঞ্জাম বা সম্পদ আমাদের হাতে রয়েছে

এই প্রশ্নগুলির উত্তর সংগ্রহ করার পর, একটি গন্তব্য বা লক্ষ্য নির্ধারণ করা যায় 

পদক্ষেপ : প্রয়োজনীয়তা পূরণের সর্বোত্তম উপায় নির্ণয় করা 

সঠিক সময়ে সঠিক কাজের জন্য সঠিক ব্যক্তি নির্বাচন করা এমনকি অভিজ্ঞ ব্যবসায়ীদের জন্যও একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে তাই এটি সতর্কতার সাথে করা উচিত 

পদক্ষেপ : উদ্যোগের ক্ষেত্র নকশা করা এবং বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করা 

একটি সফল নতুন উদ্যোগ তৈরির প্রক্রিয়ার তৃতীয় পদক্ষেপ হলো উদ্যোগের পরিধি নকশা করা এবং এর বাস্তবায়নের জন্য ধাপে ধাপে পরিকল্পনা তৈরি করা সংস্থার জন্য পার্থক্য সৃষ্টিকারী পরিবর্তন সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য, এই পরিবর্তনগুলির কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা উচিত 

পদক্ষেপ : বাস্তবায়ন শুরু করা 

পদক্ষেপের তৃতীয় ধাপে রূপরেখা দেওয়া কৌশলগত পরিকল্পনাটি কার্যকর করা হয় সেটআপ সম্পন্ন হলে, প্রকৃত কাজ শুরু হয় পূর্ববর্তী ধাপগুলিতে নির্ধারিত লক্ষ্য, KPI, এবং মানদণ্ডগুলির উপর দৃষ্টি হারানো উচিত নয় 

পদক্ষেপ : উদ্যোগের প্রভাব মূল্যায়নের জন্য কর্মক্ষমতা পর্যালোচনার করা 

কোনো উদ্যোগ কখনোই সম্পূর্ণভাবে "সম্পন্ন" হয় না যদিও কাজটি সম্পন্ন হতে পারে, ব্যবসা যে পরিস্থিতিতে পরিচালিত হয় তা সর্বদা পরিবর্তনশীল 

নিয়মিত কর্মক্ষমতা পর্যালোচনার সূচি নির্ধারণ করা উচিত যাতে উদ্যোগটি প্রথম দৃষ্টিতে যতটা সফল মনে হয় তা প্রকৃতপক্ষে ততটা সফল কিনা তা মূল্যায়ন করা যায় এটি সাফল্যের ভুল ভ্রান্তি এবং সাফল্যের প্রকৃত অর্জনের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরতে সহায়তা করে এবং পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় যেকোনো সমন্বয়ের জন্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে

ডিজিটাল এজেন্ডা: 

ডিজিটাল এজেন্ডা দ্বারা আমরা সে সকল আবশ্যকীয় এবং পরিকল্পিত উপায়কে বুঝি যা একটি নির্দিষ্ট ব্যবস্থার ডিজিটাল রূপান্তর করার জন্য প্রয়োজন। সাধারণত, সরকারের ঘোষিত রাজনৈতিক প্রতিশ্রতির ক্ষেত্রে অথবা কোন প্রতিষ্ঠানের কার্যনির্বাহী সংস্থার সিদ্ধান্তে কোন সংগঠনের ডিজিটাল পরিবর্তনকে রূপ দিতে এটি ব্যবহার করা হয়। উপরন্তু, ডিজিটালাইজেশন এবং ডিজিটাল রূপান্তরের সাফল্য অর্জনের জন্য তাদের প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে পৃথক কোম্পানি এবং সংস্থা কর্তৃক গৃহীত সকল ব্যবস্থাকে "ডিজিটাল এজেন্ডা" হিসাবে ধরা হয়।

ডিজিটাল এজেন্ডার উপাদান: 

১) গ্রাহক সম্পর্ক:   ২) বহুমুখী চ্যানেল   ৪) প্রক্রিয়াকরণ   ৫) বিপণন     ৬) বাণিজ্যিকিকরণ এবং     ৭) প্রযুক্তি:

উত্তরাধিকার পরিকল্পনা (Succession Plan):

উত্তরাধিকার পরিকল্পনা হলো একটি ব্যবসায়িক কৌশল, যার মাধ্যমে কোম্পানিগুলো নেতৃত্বের ভূমিকা অন্য কোনো কর্মচারী বা কর্মচারীদের একটি দলের কাছে হস্তান্তর করে। এই পরিকল্পনা নিশ্চিত করে যে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা নতুন সুযোগের জন্য চলে যাওয়ার পর, অবসর নেওয়ার পর, বা মৃত্যুবরণ করার পরও ব্যবসা অবিচ্ছিন্নভাবে এবং মসৃণভাবে চলতে থাকে। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে ব্যক্তিদের মূল্যায়ন করা হয় যাতে তারা কোম্পানির মধ্যে নেতৃত্বের ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে। এই প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে যে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তিরা অবসর নেওয়ার, পদত্যাগ করার বা অন্য কোনো কারণে অনুপস্থিত থাকার পরও ব্যবসা দক্ষতার সাথে পরিচালিত হয়। 

এটি নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে ক্ষমতার মসৃণ হস্তান্তর নিশ্চিত করে। যদি উত্তরাধিকারী কোম্পানির অভ্যন্তর থেকে নির্বাচিত হয়, তবে এটি কর্মচারীদের প্রেরণা বাড়ায় এবং বাইরের প্রার্থীদের খুঁজে বের করার জন্য ব্যয় এবং অতিরিক্ত সময় বাঁচায়।

উত্তরাধীকার পরিকল্পনার গুরুত্ব (Benefits of Succession Planning):

১. ব্যবসার ধারাবাহিকতা বজায়        ২. শ্রম ব্যয় এর সদ্ব্যবহার        ৩. প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান ও দক্ষতার মূল্যায়ন

৪. কর্মী সন্তুষ্টি বৃদ্ধি                        ৫. ভবিষ্যত নেতৃত্বের উন্নয়নে সহায়ক    ৬. সাংগঠনিক শৃঙ্খলা অক্ষুণ্ণ রাখা

৭. সংস্থার ব্রান্ড এর ভাবমূর্তি উন্নয়ন    ৮. উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতা বিকাশ        ৯. বৈচিত্র ও কর্মী অন্তর্ভুক্তি

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল এজেন্ডার বাস্তবায়নের উদ্দেশ্য/গুরুত্ব:

১. দক্ষতা বৃদ্ধি :                                 ২. ঝুঁকি হ্রাস              
৩. তথ্য নির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণ                 ৪. গ্রাহক বৃদ্ধি    
৫. ব্যয় হ্রাস                                  . কর্মীদের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি:     
৭. উন্নত সেবা                                . তথ্যের নিরাপত্তা  নিশ্চিতকরন
৯. প্রতিযোগীতায় এগিয়ে থাকা                 ১০. কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তা:         
১১. লেনদেন সহজ ও দ্রুতকরণ                ১২. টেকসই পরিবেশ বান্ধব ব্যাংকিং :       
১৩. উন্নত গ্রাহক সম্পর্ক গড়তে সহায়তা:     ১৪. ব্যবসায়িক মডেল তৈরী

সুত্র: https://technostacks.com/blog/advantages-of-digitization-in-banking

কর্মীদের উচ্চতর দক্ষতা সম্পন্নকরণ (Up-scaling):

 আপস্কিলিং হল বর্তমান কর্মীদের নতুন দক্ষতা শেখানোর প্রক্রিয়া। আপস্কিলিং বলতে কর্মক্ষেত্রের প্রবণতা বুঝায় যা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ও উন্নয়নের সুযোগ প্রদানের মাধ্যমে ক্রমাগত শেখার সুবিধা দেয় যাতে একজন কর্মচারীর সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং দক্ষতার ঘাটতি কমায়। আপস্কিলিং সাধারণত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে, বর্তমান কর্মীদের দক্ষতার পরিধি উন্নত করার উপর গুরুত্বারোপ করে,  যাতে তারা তাদের কাজে উন্নতি করতে পারে এবং কোম্পানির মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুযোগ খুঁজে পেতে পারে। 

এটি সাধারণত নতুন প্রযুক্তি বা কৌশল শেখার সাথে জড়িত যা একজনের বর্তমান বা পছন্দসই কাজের লাইনের সাথে প্রাসঙ্গিক। যেহেতু প্রযুক্তি কর্মক্ষেত্রে নতুন সুযোগ এবং চাকরির অবস্থান তৈরি করে, প্রাসঙ্গিক ও বিশেষ দক্ষতার অধিকারী প্রার্থীদের দিয়ে এই নতুন ক্ষেত্রগুলি পূরণ করা কোম্পানিসমূহের জন্য ক্রমবর্ধমান ও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

কর্মীদের উচ্চতর দক্ষতা সম্পন্নকরনের সুবিধা/গুরুত্ব:

কর্মীদের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি:           
গ্রাহক সন্তুষ্টি বৃদ্ধি:         

নিচের সারি বজায় রাখা: পূর্বের একজন প্রতিষ্ঠিত কর্মীর চলে যাওয়া মানে শূধু মেধা তৈরীর জন্য বিনিয়োগের অপচয় নয় সেই সাথে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতারও বিদায় হওয়া।

GFI এর প্রথম অংশ পড়তে
সম্ভাব্য দুর্যোগের জন্য প্রস্তুত থাকা: 
অর্থ সাশ্রয়: 
শেখার সংস্কৃতি গড়ে তোলা:
নতুন প্রতিভাকে আকৃষ্ট করা:
প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা তৈরি করা: 
কর্মচারীদের উৎপাদনশীলতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি:
কর্মীদের অনুপ্রেরণা এবং কাজের সন্তুষ্টি বৃদ্ধি:
 



 

 
 বিঃ দ্রঃ     সংক্ষিপ্ত প্রস্তুতির জন্য এখানে শুধু মূল বিষয়বস্তু তুরে ধরা হয়েছে, বিশদ আলোচনার জন্য রেফারেন্স বই দেখুন।

1 comment:

to drop Your valuable Comment please mention your name (select name/url from dropdown)