রাশিয়া ইউক্রেনের কতটুকু অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে আর কত দূর যাবে?
অনেক আগে থেকেই প্রেসিডেন্ট পুতিন বারবার অভিযোগ করে আসছিলেন যে ইউক্রেন চরমপন্থীদের দ্বারা দখল হয়ে গেছে। ইউক্রেনের পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানোকোভিচ যখন থেকে কয়েক মাসের বিদ্রোহের সম্মুখীন হয়ে ক্ষমতা বেদখল হয় তখন থেকেই পুতিনের এমন অভিযোগ।
সে সময় রাশিয়া ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চল ক্রিমিয়া দখল করে এক হাত দেখিয়ে দেয় এবং ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বিদ্রোহীদের মদদ দেন। এই বিচ্ছিন্নতা বাদী গোষ্ঠী তখন রাশিয়ার সমর্থন পেয়ে ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর সাথে লড়াই করে যাতে প্রায় চৌদ্দ হাজার লোকের প্রাণ হানি হয়।
পরবর্তীতে ২০২১ সালে রাশিয়া ইউক্রেনীয় সীমান্তের কাছাকাছি বিপুল সংখ্যক সৈন্যবাহিনী মোতায়েন করে। তখনও দেশটি বারংবার অস্বীকার করে যাচ্ছিল যে তারা ইউক্রেন আক্রমণ করতে যাচ্ছে। এরপর পুতিন পূর্বাঞ্চলের জন্য ২০১৫ সালে করা শান্তি চুক্তি ভঙ্গ করে ইউক্রেনের বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাকে স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেয়।
রাশিয়া দীর্ঘ দিন ধরেই ইউক্রেনের ই ইউ তে যোগদানের প্রচেষ্টা এবং পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিরক্ষা বিষয়ক সামরিক জোট ন্যাটো (NATO) তে যোগদানে বাধা দিয়ে আসছিল। "আমাদের জাতির ভবিষ্যত ইতিহাসের জন্য ন্যাটো একটি হুমকি স্বরুপ" দাবি করে এর বিরুদ্ধে রাশিয়া যুদ্ধ ঘোষণা করে।
এখন এটি সম্পূর্ণ পরিষ্কার যে রাশিয়া ইউক্রেনের বড় বড় শহরগুলো দখল করে ইউক্রেনে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে হটানোর রাস্তা বের করছে। প্রেসিডেন্ট জেলনস্কি বলছেন, তাকে সতর্ক করা হয়েছে যে, "শত্রু পক্ষের প্রথম টারগেট আমি, আর দ্বিতীয় টারগেট আমার পরিবার।"
রাশিয়া ঘোষণা করেছে যে তাদের লক্ষ্য হল, ইউক্রেন কে অত্যাচারের হাত থেকে মুক্ত করা এবং নাৎসি বাহিনীকে উৎখাত করা। রাশিয়ার এই মিথ্যা অভিযোগের উপর ভিত্তি করে মিস্টার পুতিন সেই ২০১৪ সাল থেকে যারা বেসামরিক জনসাধারণের উপর অবর্ণনীয় নিপীরণ চালাচ্ছে তাদের আদালতে বিচারের দাবি করে আসছিলেন।
ইউক্রেন নিয়ে পুতিন সরকারের দীর্ঘ মেয়াদী লক্ষ্য কি তা অনেকের কাছেই অজানা। তিনি যে ইউক্রেন দখল করার সুযোগ চালাচ্ছেন সেটাও অস্বীকার করছেন। গত জানুয়ারীতে যুক্তরাজ্য অভিযোগ করে যে, রাশিয়া ইউক্রেনে ক্রেমলিন (মস্কো) সমর্থন পুষ্ট একটি পুতুল সরকার নিযুক্ত করতে চান। পুতিন এমন অভিযোগও অস্বীকার করেন। যাচাই বাছাই করা হয়নি এমন একটি গোয়েন্দা সুত্রর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে রাশিয়ার লক্ষ্য হল ইউক্রেনকে দুই ভাগে ভাগ করে ফেলা।
পুতিন ইউক্রেনে তীব্র বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন সেদেশের প্রতিবাদী ও পুতিন বিরোধী জনসাধারণ দ্বারা। তবে তিনি বেসামরিক এলাকায় জনসাধারণের উপর গোলা বর্ষণ করে ধ্বংসজজ্ঞ চালিয়ে এমনটাই বুঝাতে চাচ্ছেন যে তিনি সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নেমেছেন।
রাশিয়ার প্রতিবেশী বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো থেকে এখন পর্যন্ত কোন হুমকি বা বাধা আসেনি। তবে ন্যাটো তার প্রতিরক্ষা বলয় সম্পূর্ণ তৈরী করে রেখেছে।
যুদ্ধকে সামনে রেখে রাশিয়ার জনমনের নজর রাশিয়া সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী কর্তৃক দখলকৃত পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলের দিকে। যদিও পুতিন এ অঞ্চলকে স্বাধীনতার স্বীকৃতি ঘোষণার পর পুরো চিত্র বদলে গেছে।
রাশিয়া ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলকে শুধু স্বাধীন ভুমি হিসেবে অভিহিত করেই থেমে যাননি, পুতিন এও বলেছেন যে ইউক্রেনের মধ্যে তাদের অর্থাৎ ঐ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর আরো সীমানা দাবি থাকলে তাতেও সব সময় তাঁর পূর্ণ সমর্থন থাকবে। ডনেস্ক ও লোহানস্ক শহরের এক তৃতীয়াংশের একটু বেশি অঞ্চল বিদ্রোহীদের নিজস্ব কায়দায় স্বাধীন গণ প্রজাতন্ত্র গঠিত হয়েছে। তবে বিদ্রোহীরা এ দুটি শহরের পুরো অঞ্চল তাদের দখলে নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে আছে।
good works and thoughtful writings. waiting to see something different .......
ReplyDelete