আমার কবিতা 🌿 page no. 🌿 আমার কবিতা
* আমি তোমার খুব কাছের কোন প্রেমিক *-- নজরুল জামিল
* রাত দ্বিপ্রহরে কখনও আমায় মনে পড়লে
লাউয়ের ডগার ফাঁকে প্রায় অস্তমিত
হওয়ার পথে চাঁদকে দেখো।
আমি ছিলাম তোমার আশপাশ ঘিরে
তোমার আকাশের ছায়াপথে।
ভরা পূর্ণিমায় উঠোন জুড়ে
রোদের বাঁধ ভাঙা প্লাবন নামলে
আমাকে খুঁজো তুমি।
প্রতিটি উচ্ছাসে আমি ছিলাম।
সাত সকালে চোখের উপর
প্রখর আলোর খোঁচায় ঘুম ভাঙলে
আমাকে ভেবো,
আমি ছিলাম মোহাবিষ্ট করা প্রতিটি
দুরন্ত সকালে,
তোমার কর্ণ কুহরে এক মোলায়েম কন্ঠস্বর,
দিনান্তিকে দিনাতিপাত করার রসদ।
তপ্ত দুপুরের ক্লান্ত দেহে তোমার বিবশ
চিন্তায়, আলস্যের অবগাহনে,
তোমার চোখে অপ্রত্যাশিত ঘুম নামলে
আমার ছবি দৃশ্যপটে জেগে উঠবে,
আমি ছিলাম তোমার মহাজাগতিক চেতনায়,
বিমূর্ত অবচেতনের মাঝামাঝি।
আমি তোমার কল্পনা ও স্বপ্নের কাছাকাছি
কোন অবয়ব, আনন্দ ও ক্রোধে
জর্জরিত হবার এক মাত্র উপলক্ষ।
এক সময় আমি তোমার খুব কাছের
কোন প্রেমিক হতে চেয়েছিলাম,
আমি তাই তোমার ঘুম ভাঙানোর গান,
বেলা শেষের অবিনাশী সুর,
বহমান গাঙের ওপারের কোন ঢেউ,
আমি তোমার মধ্যে ভাসতে চেয়েছিলাম
কবে কোথায় আমার তরী বানের জলে
ভেসে গেছে জেনেও।
-- নজরুল জামিল
আমি ঘুমাইনি, এখন এই যে এত
হাড় কাপানো শীতের রাতেও চোখ মেলে বসে থাকি।
কথার যত অলি গলি মানসপটে আসে যায়,
বিমূর্ত তোমাকে ভাবতে থাকি
অনবরত এখানে কিছু কষ্ট চিড়িক মেরে ওঠে!
তুমি এসবের থোরাই কেয়ার কর,
তুমি বলবে, এসব কেবলই ভাণ
আমি কারো জন্য ভার্চুয়াল দুনিয়ায়
সময় গুণছি।
এই যে দেখ আমি সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত
অনির্দিষ্ট কাজের মধ্যে সিথান আকড়ে থাকি,
পিপাসার জল, পানাহারের অভাবে
অম্লাধিক্যের ফলে পাকস্থলি মুচড়ে ওঠে,
বুকের মধ্যে জলতে থাকে তোমার অঙ্গার,
তুমি বলবে, এসব তোমার উদাসীনতা
অলসতা মোটেও কোনটি নয়,
এসব তোমার ডায়েটিং দিয়ে নিজেকে
ফিট রাখার কৌশল মাত্র,
সৌন্দর্য সচেতন নারী বাগানোর অস্ত্র।
-- নজরুল জামিল
আচ্ছা আমাকে তুমি কদাচিৎ ওদের মত
খুব খেয়ালে বেখায়ালে দেখতে?
তোমাকে যেমন হাঁস পাখি গাঙচিলেরা দেখে
আমার ঈর্ষা হয়।
তোমাকে রোজ বৃষ্টি কণা ছোঁয়,
রাতের জোনাকিরা ছোঁয়
আমার হিংসে হয়।
আম জনতার চোখে ঢল নামে
মনে হয় আঠার কোটি মানুষ
তোমার কাছে প্রেম খোঁজে,
তোমার চোখে মুখে তখন মিষ্টি প্রেম জাগে
আমার চায়ের পেয়ালায় বিস্বাদ লাগে।
কলের জল, পায়ের মল তোমার সাথে
হ্যাংলার মত লেপ্টে থাকে
আমার তখন ঈর্ষা লাগে,
- ঈর্ষা লাগে তোমার চুলে একটি
গুবরে পোকা দেখলে,
দিব্যি আয়েসে তেলাপোকা হাঁটলে।
শীতের গহীন রাতে চাল চুঁয়ে শিশিরের
একটা বিন্দু গড়িয়ে পড়ে আচমকা,
তোমার শিরায় কাঁপন ধরিয়ে দেয়,
এত সহজেই তোমার অনুভূতি নিয়ে
ছেলে মানুষি?
আমার রাগ হয়।
তোমার বাগানের ক্যাকটাস আর মাধবী লতা
তোমার আহ্লাদে বেড়ে ওঠে
দিনকে দিন পাতা গুল্ম বেয়ারা হয়
,
আমার হিংসে হয়!
আমার ঈর্ষা, ক্ষোভ দিনকে দিন
বাড়তে থাকে।
এসব ঈর্ষাগুলো তুমি জানলে
স্পষ্ট করে কোন প্রত্যক্ষদর্শীর কাছে শুনলে
বলবে, আমি একটা অসুস্থ্য, পান্ডুর রোগী
তাই অসুস্থ্য আচরণ করছি,
বলবে, এরকম অসুস্থ্য মানুষের পাশে
থেকে তোমার নাভিশ্বাস উঠছে।
* জোছনা ও বৃষ্টি যাপন *
-- নজরুল জামিল
আমরা অনন্তকাল বৃষ্টি দেখব
বৃষ্টি শেষে তোমার চোখের পাতায়
ঝরে পড়া বৃষ্টি বিন্দু চিক চিক করবে।
আমাদের মাথার উপর কোন ছাতা থাকবে না,
বেরোনোর সময় দুজনই আনতে ভুলে গেছি
সেরকম বাজে অভ্যাসের বশে নয়,
বৃষ্টির ফোঁটা আজলা ভরে রাখব বলে।
আমরা জোছনায় ভিজব বলে দিন দুপুরে
কোন বিস্তৃত খোলা মাঠের পাশের
রাস্তায় বসে থাকব
মহাবিশ্বের অনন্ত রাতের অপেক্ষায়।
আমাদের সাথে ক্ষুধা মেটানোর জন্য
থাকবে সামনের উন্মুক্ত আকাশ,
লাল টকটকে শাপলার হৈ হুল্লোর
মাঠের কোল জুড়ে কলমি লতার টই টম্বুর।
পানীয় জলের তেষ্টা পেলে
আমরা মুঠোয় ভর্তি বর্ষা খাব।
অামাদের নাগরিক জীবনের চা পানের
তাড়া থাকবে না,
বাতাবী লেবু, করমচার গন্ধে
কড়া স্বাদের লিকার মেশানো থাকবে।
এরপর হাজার বছরের রাত নামবে,
নিশ্চিন্তপুরের গ্রামে
তখন কোন লোকারণ্য থাকবে না,
জনমানবহীন পথে আমরা হাঁটব
জোছনা কুড়োব মেঠো পথে,
আমাদের পথ শেষ হবে না কখনও।
রাতের পর রাত আমরা হাঁটব
মাইলের পর মাইল আমরা পেরোব।
এলোমেলো চিন্তায়
-- নজরুল জামিল
অতঃপর আমি
তোমাতে বিলীন হই নিশি দিন
তোমার কাছে
জমে থাকে অনাদি কালের ঋণ।
আমার অনিমেষ
কল্পনাগুলো নির্বিশেষে একাট্টা হয়
প্রতিটা মুহূর্ত
দিন যাপনের গ্লানিতে থেমে যায়।
অসময়ে তবুও
তুমি থাকো আমার এলোমেলো চিন্তায়
এভাবে যদিও!
No comments:
Post a Comment
to drop Your valuable Comment please mention your name (Click to arrow sign and select name/url)