আমার কবিতা 🌿 page no.🌿 আমার কবিতা
** তুমি না চাইলেও**
-- নজরুল জামিল
আমি চাই তুমি হৃদয়ের একদম গভীরতম
স্থানে নাড়া দিয়ে বল, তোমাকে ভালবাসি
তুমি চাইলেও বাসি, না চাইলেও বাসি।
আমি তখন সমস্বরে চিৎকার দিয়ে বলব
তোমাকে আমি যখন থেকে চাই
তখন পৃথিবীর মানচিত্রে এত শত দেশ
আবিষ্কৃত হয়নি, তখনকার যুগে এদেশে
চাকা চালিত যানবাহন কেউ চোখে দেখেনি।
জেট প্লেন থেকে ছুটে
আসা শব্দর চাইতে তীক্ষ্ণ ও তীব্র কম্পন
হবে আমার চাওয়ার তীব্রতায়।
তোমার বুক ঝাঁঝড়া করে দেবে সে কাঁপন।
আমি চাই দিবা স্বপ্নের মধ্যে তুমি এসে
আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকো,
আমার মাথায় হাত রেখে বল, তোমার মত
আপনার জন আমার কেউ নেই।
আমি তোমাকে সর্বস্ব দিয়ে ভালবাসি।
আমি তখন আড়মোড়া ভেঙে অস্থির উন্মাদনা
নিয়ে ঘুম ভেঙে উঠব।
তোমাকে আলিঙ্গনের দৃঢ় স্পর্শে
আমার গৃহের চতুষ্কোণের স্তম্ভগুলো থর থর
করে কেঁপে উঠবে।
ভলদিভিয়ার চেয়ে বেশি মাত্রার আর
একটা ভুকম্পণ হবে তোমার শরীর জুড়ে।
আমি চাই আমার অজস্র দ্বিধা দ্বন্দের ভিত
নাড়িয়ে, অসংখ্য হাতছানি আড়ালে রেখে
আমার চোখে তোমাকে সমর্পিত কর।
আমার চোখের দিকে অপলক তাকিয়ে
থেকে তুমি ভারসাম্যহীন হবে,
আর মূর্ছাগ্রস্থের ন্যায় ঝাপিয়ে পড়বে।
আর আমি এমন অপ্রত্যাশিত সমর্পনে
উল্লসিত হব, এমন বাঁধভাঙ্গা উচ্ছাসে
আমার চোখ ঠিকরে বেরোবে আগুনের
শীতল স্ফৃলিঙ্গ।
<
* অনভিপ্রেত দৃষ্টিপাত *-- নজরুল জামিল
রঙিন ঠোঁট, আকানো ভ্রু, লুকানো আব্রু
এসব তোমাকে বিশেষভাবে ফুটিয়ে তোলে
আমি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখি।
শুনলে রাগে তুমি গজ গজ করে উঠবে,
আব্রু! আব্রু দেখেছ! তাও!
কিন্তু আমি দ্বিগুণ উল্লাসে বলব, দেখেছি বৈকি
আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রীয় দেখেছে;
আমার অষ্ট পাঁজড় মোড়ানো কায়া তোমাকে দেখে।
চেনা গলির মানুষগুলো তোমাকে দেখে
তীব্র তৃষ্ণায়, আমার তৃষ্ণা পায় না,
কিন্তু বুকের বা পাশটা খালি হয়ে যায়,
হিমালয়ের সমস্ত ঠান্ডা তুষারপাত শুরু হয়।
বাঁকানো চলন বলে দেয় তুমি আসছ,
রাস্তার কনক্রীট এ তোমার পায়ের ছাপ
লেগে থাকে স্মৃতি ফলক হয়ে,
আমি হতভম্বর মত আটকে যাই,
আছড়ে পড়ি কোন অন্ধ পথচারীর গায়ের উপর।
সব দেখে শুনে তুমি স্বভাব সুলভ প্রতিক্রিয়া দেখাবে,
- একটা অচেনা, অপ্রত্যাশিত মানুষ কোন মতেই
তোমাকে এভাবে বলতে পারে না!
আপনার অধিকার নেই, এমনভাবে বলার,
আপনি আমার সুজন নন।
আমি তোমাকে তখন স্বদর্পে বিশেষ ক্ষমতা
অধ্যাদেশ তুলে ধরব, রেফারেন্স টানব
অনাদি কালের ইতিহাস,
হৃদয়ের গোপন কালা কানুনের।
Monday, July 09, 2019
<
ঔদার্য-- নজরুল জামিল
তুমি জানলে না আকাশের বুকে বাসা
না বেঁধেও আকাশ দেখে দিব্যি কাটানো যায়,
আকাশকে পরম যত্নে ছোঁয়া যায়,
সুতো ছেড়ে দিয়ে রঙিন ঘুড়ি ছুটানো যায়।
তুমি বুঝলে না আকাশের ঘাটে নভোযান
না ভিড়িয়েও আকাশ থেকে নামা বৃষ্টি ছোঁয়া যায়।
মেঘের দেশে ভেসে ভেসে বজ্রনিরোধী আশ্রয়
পাওয়া যায়।
আকাশকে উজাড় করে ভালবাসা যায়,
ভালবাসাতে নিঃশেষ হওয়া যায়।
** আমার জন্য কোথাও কেউ **
-- নজরুল জামিল
মনে হয় আমি মরে যাচ্ছি, আগামী দিনে
কেউ আমাকে শোকের চাদড়ে জড়িয়ে রাখবে;
এটা অকল্পনীয়, ঘোরতর মিথ্যা।
এই নগরে আগামীতে কোন গোলাপের
বাগান থাকবে না।
মুখোমুখি বসার কোন বনলতার বসবাস
এই শহরে আগেও ছিল না, এখনও নেই।
বনলতারা হয় মরে গেছে, নতুবা তারা নিজেদের
পাষাণপুরিতে আত্মাহুতি দিয়েছে।
আগামী বর্ষায় এই ভিটায় একটা কদম ফুলের
গাছ ফলবান হবে,
এমন কোন নিশ্চয়তা নেই।
এ গাঁয়ের চেনা জানা কৃষকেরা মাঠের
উঁচু আলে শর্ষে ফুলের চাষ দেয়।
এ বছর বৃষ্টিটা পার করলেই সামনে
প্রত্যাশিত শীত, শর্ষে ফুলের ঘ্রাণে
মৌ মৌ করে সমগ্র গ্রাম।
আমার জন্য কেউ কদম ফুল ছিঁড়ে
হাতে নিয়ে বসে থাকবে না।
আমার জন্য কোন মৌমাছি শর্ষে ফুলের
মধু সংগ্রহ করে রাখবে না।
চলে যাওয়ার মত সময় এখন নয়
-- নজরুল জামিল
কেন যাবে?
এ রকম ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ রাতে কেউ যায় নাকি!
চলে যাওয়ার জন্য আরও সময় পাবে,
কেউ খুব ডাকছে তোমাকে?
খুব বেশি হাতছানি দিচ্ছে দূর থেকে!
তাকে বলে দাও, এখন হৃদয়ের অভ্যন্তরে
অসন্তোষ দানা বেধেছে। আমি যেতে পারি না।
এখন গেলে গোমতী, শিবসার পাড় ভেঙ্গে
গরিব কৃষক ভূমিহীন হবে।
তাকে বলে দাও এখন গেলে
প্রচন্ড জলোচ্ছাসে ভাসিয়ে নেবে
তোমার আপন জনের বসতভিটা।
কেন যাবে?
চলে যাওয়ার মত সময় এখন নয়,
এখন বাইরে মহাবিপদ সংকেত এ সময়
মেঘনার মোহনায় প্রবল দাপট।
এখন গেলে জেলেদের ডিঙ্গি নৌকা গুলো
স্রোতের ঘূর্ণিপাকে তলিয়ে যাবে চিরদিনের জন্য
জেলে পাড়ার কতগুলো শিশু অনাথ হবে
না খেয়ে মরবে খাদ্যাভাবে।
তাকে বলে দাও এখন গেলে
বিপদসীমার পাঁচ ফুট উঁচুতে বহমান
জোয়ারে বাড়ন্ত ফসলের ক্ষেত প্লাবিত হবে।
কেন যাবে তুমি
এমন দুর্যোগের রাতে কেউ ঘর ছাড়ে!
কেউ দূর থেকে তোমাকে ডাকছে?
তাকে বল, বাইরের আকাশে ঘোর অন্ধকার
এখন আমি যেতে পারি না।
এখন গেলে প্রচন্ড ঝড়ে অনেক উঁচুতে
দাঁড়িয়ে থাকা রেইনট্রি আর কড়ই এর গাছ
আছড়ে পড়বে নিঃস্ব
পথচারী মহাসড়কের মাঝে আটকে পড়বে।
তাকে বলে দাও, এখন গেলে
গোটা শহরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে
নবজাতক শিশু আতঙ্কিত হবে।
May 04, 2019
No comments:
Post a Comment
to drop Your valuable Comment please mention your name (Click to arrow sign and select name/url)