Right Click n Copy Disabled

Ads block

Banner 728x90px

আমার কবিতা- 11


আমার কবিতা 🌿 page no.🌿 আমার কবিতা

** আত্ম‌কেন্দ্রিক চারপাশ**
-- নজরুল জা‌মিল


প্রেম ও প্রত্যাখ্যান ব‌লে আজকাল কিছু নেই,
আজকাল কেউ কাউ‌কে স্বপ্ন দে‌খে না,
‌কেউ কাউ‌কে ম‌নে রা‌খে না।
আজকাল আমার জন্য কেউ এক‌দিন
কাঁদ‌তে চায় না।
আজকাল কা‌রো স্ব‌প্নের ঘো‌রে আ‌মি আ‌সি না,
একটা দিন কেউ আমার জন্য অ‌পেক্ষা
ক‌রে না। সবার মা‌ঝে কেমন যেন
খুব তাড়াহুড়া।
কা‌রো অ‌ফিস, কা‌রো মি‌টিং, কা‌রো সপিং।
আমার জন্য কেউ অ‌পেক্ষা ক‌রে
খোলা বারান্দায় ব‌সে থা‌কে না,
চারপা‌শে লোহার রে‌লিং ভে‌ঙে,
ই‌চ্ছে হ‌লেও কা‌ছে যে‌তে পা‌রি না।

প্রণয়, প্রলয় ব‌লেও আজকাল কিছু নেই,
প্রণ‌য়ের কোন প‌রিণ‌তি থা‌কে না।
‌কেমন সব ভুল মানু‌ষে ছে‌য়ে গে‌ছে
আমার আ‌ঙিনার চারপাশ।
একটা মানুষ আমার জন্য ব‌সে থাকে না,
মাঝ রা‌তে ঘুম ভে‌ঙে কাত‌রে ও‌ঠে না।
একটা ফু‌লের তোড়া হা‌তে বার মাস
দাঁ‌ড়িয়ে থে‌কে রোদ বৃ‌ষ্টি‌তে ভিজ‌তে
‌কেউ চায় না।
আজকাল হাত বাড়া‌লেই ‌গোলাপের ছড়াছ‌ড়ি।
বাদল দি‌নের প্রথম কদম কেউ নেয় না,
ওসব বৃ‌ষ্টি ভেজা জ‌ল, জ‌লের ফোটার
ম‌ধ্যে কোন সৌরভ থা‌কে না।

আজকাল কেউ বুক প‌কে‌টে কোন চি‌ঠি রা‌খে না,
আ‌মি বু‌কের ভাঁজে আলগা ক‌রে
‌দীর্ঘ লাই‌নে লেখা ছোট্ট চি‌ঠি
জ‌মি‌য়ে রা‌খি।
কখনও ভাঁজ খু‌লে একবারও সে চি‌ঠিটা
পড়‌তে চে‌য়েছ? বু‌কের প্র‌তি‌টি জোড়ায়
প্র‌তি‌টি ক‌শেরুকায় কি জ‌মে আ‌ছে!
দীর্ঘ কষ্ট, না‌তিশী‌তোষ্ণ অশ্রু জল,
এক ক্রোশ পথ হাঁটার ক্লা‌ন্তি,
না‌কি অ‌বেলার ঝ‌ড়ে ভাঙা কোন নীর!

** উ‌পেক্ষা ও আ‌ক্ষেপ**
-- নজরুল জা‌মিল


তোমা‌কে ছাড়া আ‌মি অসু‌খে আ‌ছি,
‌আমার ধমনী, শিরার ম‌ধ্যে রক্তচাপ
এপাড়া থে‌কে ওগ্রা‌মে তীব্র বে‌গে ছু‌টে‌ছে,
তোমার পাশ বা‌লি‌শে আ‌মি ম‌রে গে‌ছি।
ঠাইহীন গা‌ঙের তল‌দে‌শে ত‌লি‌য়ে যাব
পাতাল পুরীর জগ‌তে আ‌মি ঘু‌মি‌য়ে পড়ব
‌জে‌নেও তু‌মি ডে‌কে তোল‌নি।

‌তোমা‌কে না ছুঁ‌তে পে‌রে আ‌মি বিষাক্ত
নখা‌গ্রে নি‌জে‌কে বিদ্ধ ক‌রি,
র‌ক্তের লাল ছোপ থে‌কে যায়,
পলাশ শিমু‌লের কাঁ‌ধে।
আ‌মি ডানাভাঙা চি‌লের পা‌শে
ব‌সে তোমার আকা‌শে উ‌ড়ে যাওয়ার
ছায়া দে‌খে‌ছি মা‌টির ঘা‌সে।
তু‌মি পথ ভু‌লে আমাকে ডাক‌নি।

‌তোমা‌কে দেখা ছাড়া আ‌মি বর্ণান্ধ হ‌য়ে‌ছি
‌দিনের সূর্য‌কেও আমার ম্যার‌মে‌রে লা‌গে,
গাঢ় কমলার ঘ্রা‌ণে আ‌মি চালতার স্বাদ পাই,
টগব‌গে সবু‌জের ছোপ আমার কা‌ছে
কা‌লো মে‌ঘের আনা‌গোনা।
‌বিষন্ন দুপু‌রে আ‌মি প্রায় অ‌ন্ধ,
আমার চো‌খে র‌ক্তে ভেজা গন্ধ। হাজার চো‌খের হাতছা‌নি পাশ কে‌টে একবার
তু‌মি চোখ তুলে আমা‌কে দেখ‌নি।

২৩/০২/১৯

প‌রিচর্যা
-- নজরুল জা‌মিল
গত বস‌ন্তের ফুল শু‌কি‌য়ে গে‌ছে,
আজ পর্যন্ত মালা হা‌তে নি‌য়ে
টুক‌রো টুক‌রো ক‌রে ছিঁড়‌তে পা‌রি‌নি,
অ‌নেক মায়া হয়, অ‌নেক।
অ‌নেক বৃ‌ষ্টি‌ ভেজা প‌থে, তেপান্তর হেঁ‌টে,
বৈসা‌বির জল সি‌ঞ্চিত হা‌তে
গাঁথা মালা।
দাঁড় কাক, ইদুর, ব্যাঙ এ লড়াই হয়।
প্র‌তি‌টি ফু‌লের র‌ন্ধ্রে জড়া‌নো
ভাল থাকা, না থাকার সুবাস,
অন্ধ গ‌লি হাত‌ড়ে প্রেম জলাঞ্জ‌লি দেয়।

এবার ঘোর বর্ষায়, বিষম আবহাওয়ার
ভ্যবসা গু‌মোট মাথায় নি‌য়ে,
আ‌মি আর একবার ভিজব,
অন্ধ প‌থে মুষলধা‌রে নামব।
‌দি‌গ্বি‌দিক তোলপাড় ক‌রে আর একটা
রংধনুর পি‌ঠে,
সূর্যাস্ত অব‌ধি আঁক‌তে চাই নতুন
প‌থের মান‌চিত্র।

‌বু‌কের বাম অ‌লিন্দ বিদীর্ণ ক‌রে
আর একবার আমার হৃদ‌পি‌ন্ডে
বজ্রপাত হোক।
গ্রী‌ষ্ণের খরায় ফাট‌তে থাকা
মাঠজু‌ড়ে বরফ আছ‌ড়ে পড়ুক!
আ‌মি স্লে‌জে চে‌পে ওপা‌শের ঝাপসা
‌দিগ‌ন্তে ঝাঁপ দেব।
অমন সরল রেখার আ‌লো ঠিক‌রে
আমার গা‌য়ে ক‌বেকার রোদ লে‌গে‌ছিল!

বহিঃপ্রকাশ
-- নজরুল জা‌মিল


কিছু লিখ‌তেই হ‌বে তোমা‌কে,
‌কি লেখা যায় ভাব‌ছি!
বড়‌ সড় একটা দীর্ঘ ক‌বিতা
‌কিংবা একটা সে‌কে‌লে চি‌ঠি
যা কেউ প‌ড়ে না,
খুব য‌ত্নে ভাঁজ খু‌লে দে‌খে না।
বু‌কের ভাঁজে গুঁজে রা‌খার প্র‌য়োজন
ম‌নে ক‌রে না!
না পড়া চি‌ঠিটা হয়ত পুর‌নো হ‌বে,
এক‌দিন কা‌লির সা‌থে পাল্লা দি‌য়ে
অক্ষরগু‌লোও ঝাঁপসা হ‌বে।
কাগ‌জের ভাঁ‌জে সোঁদা গন্ধ বে‌রো‌বে।
তার চে‌য়ে আ‌লো আধাঁ‌রের এলই‌ডি তে
‌সুখ দুঃখের বিলাসই ভাল,
ভাল না লাগ‌লে জানালা ঢে‌কে দাও,
সুম‌তি জাগ‌লে কপাট খোল।
ম‌নের কপা‌টের খিল আজকাল কে চায়!

‌কিছু বল‌তেই হ‌বে তোমা‌কে,
‌কি বলা যায় ভাব‌ছি!
‌নি‌দারুন কোন না‌তিদীর্ঘ বক্ত‌ব্য!
দীর্ঘ লাইনের একটা হৃদ কম্পন
বিশ মাইল হেঁটে পে‌রো‌নো একটা রাত,
গভীর জ‌লের ম‌ধ্যে অথৈ নদীর
পার ভাঙার সুর,
‌কিংবা একটা ছোট গল্প,
‌যেটা এক সম‌য়ের টুক‌রো কথা‌তেই
বলা যায়, এক মুহূ‌র্তে গল্প ফু‌ড়িয়ে যায়।
তার চে‌য়ে এই বায়বীয় জীব‌নে সুখ,
মান, অ‌ভিমা‌নের দোলা চলই ভাল,
অসমাপ্ত কা‌হিনী শেষ হয় না, বিদ্ধস্ত
‌প্রেম আবার জা‌গে। ওপা‌রের জনাকীর্ণ
সম‌য়ের পাতায় হাতছা‌নি দাও।
‌ত্যাক্ত বিরক্ত হ‌লে আট‌কে রাখ,
কৃপা হ‌লে জানালার পর্দা সরাও।
হৃদ‌য়ের গোপণ কথা শু‌নি‌তে কে চায়!

দিনের শেষে
-- নজরুল জা‌মিল
পৃ‌থিবী বহু দূর এগিয়ে গে‌ছে
আ‌মি কেবল অন্ধ গ‌লির খা‌দে
প‌ড়ে আ‌ছি।
স্যাঁত‌সে‌তে দেয়া‌লে চাম‌চিকা, আর‌শোলার
লা‌থি, জু‌তো গিল‌ছি।
সাইদু‌লের মোটা প্র‌মোশন,
মইনু‌লের কোল জু‌ড়ে ফুটফু‌টে
বাবুটার কি‌চির মি‌চির বু‌লি,
যা‌ন্ত্রিক জীব‌নে প্রশা‌ন্তি আ‌নে।
আ‌মি কেবল প‌থের ধু‌লো মে‌খে
কু‌ড়ি‌য়ে পাওয়া জীব‌নের সুর বাঁধ‌ছি।
অবা‌ঞ্ছিত‌কে দুই বাহু বা‌ড়ি‌য়ে
আ‌লিঙ্গন কর‌ছি।

ছা‌পোষা জীব‌নে এ পাড়ারও ঢের
‌জৌলুস চো‌খে পড়ার মত।
আজকাল শিলা ও মিলার বাবা‌কে
‌রিক্সার সরু আস‌নে দেখা মে‌লে না।
‌দেখা হ‌লে আর ব‌লে না
কেমন আছ বাবা জা‌মিল!
শীলার বাবার দা‌মি একটা গা‌ড়ি
পাড়ার রাস্তা মা‌তি‌য়ে ছু‌টে চ‌লে।
আ‌মি গা বাঁ‌চি‌য়ে ফুটপাত দি‌য়ে চ‌লি।

নাগ‌রিক জীব‌নের প্রভূত উন্ন‌তি
অবনত চো‌খে অব‌লোকন করার
সু‌যোগ ঘ‌টছে।
র‌হিমার মা এখন আর এ বা‌ড়ি
ও বা‌ড়ি ছুটা কাজ ক‌রে না।
থাকার মত একটা বা‌ড়ি
তার জু‌টে‌ছে।
বলা যায় ছোট খাট একটা ইমারত।
আ‌মি সব বড় শহ‌রে এক একটা
বাং‌লো ঘর বা‌নি‌য়ে
‌রাত ভর স্টেশ‌নে প‌ড়ে আ‌ছি।
‌দিন শে‌ষে আর ফেরা হয় না,
‌ফেরার মত কোন বাহন থা‌কে না।

০৬ অ‌ক্টোবর, ২০১৮, ২৩:৪৩

No comments:

Post a Comment

to drop Your valuable Comment please mention your name (Click to arrow sign and select name/url)